চীনা কোম্পানিকে বাদ দিয়ে বিপদে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড

চীনা কোম্পানিকে বাদ দিয়ে বিপদে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড - ছবি : সংগৃহীত
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ তথা আইপিএলের সঙ্গে সাময়িক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল চীনের মোবাইল প্রস্তুকারী সংস্থা ভিভো। আর সেটা সরকারিভাবে ঘোষণা করতে আটচল্লিশ ঘণ্টা সময় লেগে গেল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ভিভোর আচমকা সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত বিসিসিআইয়ের কাছে আর্থিক দিক থেকে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। কারণ ১৯ সেপ্টেম্বর আইপিএল শুরু। হাতে খুব বেশি সময় নেই। একদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্রোড়পতি লিগ আয়োজন করতে গিয়ে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা বোর্ড কর্তাদের। তার উপর খুঁজতে হবে নতুন টাইটেল স্পনসর। তাও আবার মাত্র এক বছরের জন্য। কারণ, সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২১, ২০২২ আইপিএলের আসরে ভিভোই মূল স্পনসর হিসেবে ফিরে আসবে। তাই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বুলি আওড়ে বড় মুনাফা অর্জনের পথ আপাতত বন্ধ বিসিসিআইয়ের সামনে। তাই আইপিএলের মূল স্পনসর প্রত্যাশিত অর্থে পাওয়া নিয়ে বেশ চিন্তায় বোর্ড কর্মকর্তারা।
আইপিএলের স্পনসরশিপ বাবদ প্রত্যেক মরশুমে বোর্ডকে ভিভো দেয় ৪৪০ কোটি রুপি। করোনা পরিস্থিতিতে কোনো সংস্থা এক বছরের জন্য আইপিএলের স্পনসর হতে চেয়ে ভারতীয় বোর্ডকে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি হবে বলে মনে করছে না বিসিসিআই। নতুন টাইটেল স্পনসরের থেকে তাই অর্ধেক অর্থ পেলেই সন্তুষ্ট হবেন বোর্ড কর্মকর্তারা।
স্পনসরশিপের অর্থের ৫০ শতাংশ পায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। বাকি অর্থ আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ভাগ করে নেয়। তাই ভিভোর সরে দাঁড়ানো শুধু ভারতীয় বোর্ডকে নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজিদেরও আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। এমনিতেই আইপিএল থেকে এবার রোজগার অনেক কম হবে বলেই মনে করছে অধিকাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজি।
প্রথমত, টুর্নামেন্টের শুরুতে খেলা হবে দর্শকশূন্য মাঠে। তাই ভারতে আইপিএল হলে, হোম ম্যাচে টিকিট বিক্রি করে যে দেড়-দু’কোটি রুপি আয় হতো, তা এবার তারা পাবে না। প্রতিযোগিতার মাঝে বিভিন্ন দলের ক্রিকেটাররা স্পনসরদের প্রোমোশনাল অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। কিন্তু আইপিএল এবার হবে বিদেশে। তার উপর রয়েছে কড়া করোনা বিধি। তাই প্রোমোশনাল অনুষ্ঠান হওয়ার সম্ভাবনা কম।
ফলে বিভিন্ন দলের স্পনসররা এবারের টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে। চার-পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজির অবস্থা খুবই খারাপ। এখন পর্যন্ত স্পনসরদের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়নি বলে শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তাহলে করোনা পরবর্তী আইপিএল মোটেও সুষ্ঠুভাবে এগবে না বলেই মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
টি-২০ বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়াকে কি ছাড়বে ভারত?
নয়াদিল্লি: ২০২১ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দুই বোর্ড এখনো একমতে পৌঁছাতে পারেনি। তবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তদের মধ্যে ফোনে এই বিষয়ে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। এবছর অক্টোবর-নভেম্বরে টি-২০ বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু তা করোনার জেরে স্থগিত হয়ে গিয়েছে। তবে আইসিসি’র ওয়েবসাইটে এই টুর্নামেন্টের জন্য বেশ কিছু টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। সেই অর্থ ফেরত দেয়া নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। সমস্যা মেটাতে পরের বছর অস্ট্রেলিয়াতেই টি-২০ বিশ্বকাপ করতে চাইছে আইসিসিও। এখন ভারত রাজি হয় কী না, সেটাই দেখার।
বিসিসিআই কর্মকর্তাদের যুক্তি, ২০২৩ সালে ভারতে হবে ৫০-৫০ বিশ্বকাপ। তার আগের বছর টি-২০ বিশ্বকাপ করলে দর্শক-উন্মাদনায় ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে এটা ঠিক যে, টি-২০ বিশ্বকাপ স্থগিত না হলে এবছর আইপিএল হত না। সেক্ষেত্রে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ত বিসিসিআই। এই অবস্থায় টি-২০ বিশ্বকাপ বাতিলের ক্ষেত্রে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারই পুরস্কার হিসেবে ভারতীয় বোর্ড ২০২১ টি-২০ বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়াকে ছেড়েও দিতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
এর মধ্যেই শুক্রবার ফের বসছে আইসিসি’র বোর্ড মিটিং। সেখানে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। আইসিসি’র চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন ঠিক হতে পারে। নিউজিল্যান্ডে মহিলাদের ওডিআই বিশ্বকাপ নিয়েও কিছু আলোচনা হবে। আইসিসি’র বিভিন্ন টুর্নামেন্ট কীভাবে, কোন সময়ে হবে, তার রূপরেখাও ঠিক হওয়ার কথা বোর্ড মিটিংয়ে।
সূত্র : বর্তমান