পাকিস্তানি পাইলটরা ভারতের রাফালের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারবে!
পাকিস্তানি পাইলটরা ভারতের রাফালের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারবে! - ছবি : সংগৃহীত
ভারতীয় বিমানবাহিনী রাফাল বিমান হাতে পেয়েছে। এই বিমান গেম চেঞ্জার বলে ভারতীয় মিডিয়া প্রকাশ করছে। তবে পাকিস্তানের পাইলটরা কাতারের রাফাল জঙ্গি বিমান দিয়ে আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, যে বিমানগুলোর সাথে ভারতের বিমানের উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে। এই সংবাদ প্রকাশের পর মনে হচ্ছে এখানে নিরাপত্তার বিষয়টির বড় রকম লঙ্ঘন হয়েছে। এই সংবাদ সত্য হলে বলতে হবে যে, রাফাল বিমানগুলো ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার আগেই এর অস্ত্র সিস্টেমের ধার কমে গেছে।
প্রশ্ন হলো, এই নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে যদি কোনো ক্ষতি হয়, সেটার প্রকৃতিটা কেমন হবে। এর আইনি প্রভাব এবং অন্যান্য বিমান থেকে (উদাহরণস্বরূপ, চীন ও ভারত উভয়েই সুখোই সু-৩০ পরিচালনা করে, এবং ইসরাইল আর মিসর উভয়েরই এফ-১৬ বিমান রয়েছে) এটার পার্থক্যটা কেমন হবে।
ভারতের বিমানের সাথে কাতারের রাফালের অনেক মিল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আরবিই ২ অ্যাকটিভ রাডার, দ্য স্পেকট্রা ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার (ইডাব্লিউ) সিস্টেম, দূরপাল্লার মিটিওর এয়ার-টু-এয়ার এবং স্কাল্প গ্রাউণ্ড অ্যাটাক মিসাইল। স্পেকট্রা সিস্টেম ব্যবহার করে যে জ্যামিং তৈরি করা হয়, এর পুরো সিস্টেম পাইলটদেরকে শেখানো না হলেও প্রশিক্ষিত পাইলটরা বুঝতে পারবেন যে, কোন মুড এখানে ব্যবহার করা হবে এবং কিভাবে সেটা কাজে লাগানো হবে। এই জ্ঞানের কারণেই পাইলটরা বিমানের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সক্ষমতাগুলো ব্যবহার করতে পারে। কাতার এবং তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এখন যে উত্তেজনা চলছে, সেটার কারণে পাকিস্তানি পাইলটরা আরব আমিরাতের রাফাল আর এফ-১৬ বিমানের মধ্যে একটা তুলনাও করতে পারবে। বলা হয়ে থাকে যে, এফ-১৬ বনাম রাফাল বিমানের এই লড়াইটাই মূলত ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে লড়াইয়ের সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। সে কারণে ইডাব্লিউ সিস্টেম নিয়ে কোন ছাড় দেয়া না হলেও, রাফালের সক্ষমতার বিষয়টি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ভালোভাবেই জানা থাকবে।
ভারতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত পাকিস্তানি পাইলটদের রাফাল বিমানে প্রশিক্ষণ নেয়ার বিষয়টিকে ভুয়া খবর হিসেবে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি অবশ্য সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি যে, এই রিপোর্টের ঠিক কোন অংশটি ভুয়া। কারণ, ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান উত্তেজনা সৃষ্টির বহু আগেই একজন কাতারি কর্মকর্তা ও ডসাল্ট অ্যাভিয়েশানের ব্রিফিংয়ে কেন পাকিস্তানি পাইলটদের বিষয়টিকে টেনে আনবেন?
সত্য প্রতিষ্ঠা করাটা খুবই সহজ। রাষ্ট্রদূতদের যেটা করতে হবে, সেটা হলো তাদেরকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখাতে হবে যে, কোন পাইলটরা প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তাদের পাসপোর্ট এবং প্রশিক্ষণের লগবুক। তাছাড়া, এই রিপোর্টগুলো নতুন কিছু নয়। সেই ২০১৬ সালেও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল যে, কাতার পাকিস্তানি পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য প্যারিস পাঠাচ্ছে। এই খবরগুলোকে শুধু ভুয়া খবর বললেই সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে না, সেজন্য প্রমাণ দেখাতে হবে।
এই রিপোর্টগুলো সত্য হলে পাকিস্তান খুব ভালোভাবেই জানবে যে রাফালের ক্ষমতা কেমন। যেটা তারা পারবে না সেটা হলো রাফাল কিভাবে লুকায়, যুদ্ধে এই বিমান কী ধরনের কৌশল নিতে পারে, এর মিসাইল কত দূরে যেতে পারে, এবং মিসাইল এড়াতে এটা কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পাকিস্তান এটা জানবে যে, রাফালের পাইলটদের কী ধরা নিষেধ। এই তথ্যগুলোকে ব্যবহার করে তারা এখন রাফালকে এমন একটা পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে পারবে, যেখানে ভারতীয় পাইলটরা অসুবিধায় পড়ে যাবে।
সংক্ষেপে বললে, সুনির্দিষ্ট ইলেকট্রনিক ফ্রিকোয়েন্সিতে ছাড় দেয়ার বিষয়টি এখানে বড় বিপদের কারণ নয়, বরং বড় বিপদ হলো রাফাল বিমান আর এর পাইলট কিভাবে দেখে, কিভাবে চিন্তা করে এবং লড়াই করে, সে বিষয়টি প্রতিপক্ষের জানা রয়েছে।
সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর