কিভাবে বুঝবেন কোরবানির গরুটি সুস্থ!
কিভাবে বুঝবেন কোরবানির গরুটি সুস্থ! - ছবি : সংগৃহীত
কোরবানির ঈদ চলে এসেছে। এই ঈদের একটি বড় বৈশিষ্ট্য পশু কোরবানি দেয়া। আবার কোরবানি কবুল হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পশু সুস্থ-সবল হওয়া। এ কারণে যাচাই-বাছাই করে সুস্থ পশু নির্বাচনের বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। নইলে অসুস্থ অথবা কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা পশু ক্রয় করার আশঙ্কা থেকে যায়।
সাধারণত ছয়টি পশু দ্বারা কোরবানি আদায় করতে হয় এবং এগুলোর মধ্যে ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার এক বছর; গরু, মহিষ দুই বছর এবং উট পাঁচ বছরের কম হলে কুরবানি শুদ্ধ হবে না। পশুগুলোও হতে হবে যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত।
সুস্থ পশু চেনার উপায় :
১. পশুর চোখ উজ্জ্বল ও তুলনামূলক বড় আকৃতির।
২. সুস্থ পশু অবসরে জাবর কাটে (পান চিবানোর মতো)।
৩. কান নাড়ায় ও লেজ দিয়ে মাছি তাড়ায়।
৪. বিরক্ত করলে প্রতিক্রিয়া দেখায়, সহজেই রেগে যায়।
৫. গোবর স্বাভাবিক থাকে।
৬. দেখতে প্রাণবন্ত, চামড়া ঝকঝকে দেখায়
৭. পাঁজরের হাড় উঁচু-নিচু থাকে।
৮. নাকের উপরের অংশ ভেজা মনে হয়।
৯. খাবার এগিয়ে দিলে জিহ্বা দিয়ে তাড়াতাড়ি টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে।
অসুস্থ পশু চেনার উপায় :
১. পশুটি ভালোভাবে খেতে চায় না।
২. হেলেদুলে ও ধীরে চলে।
৩. রোদে কম থাকতে চায়, ধীরে ধীরে ছায়া খোঁজে।
আজকাল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অল্প সময়ে বেশি অর্থ লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে পশু বিশেষত গরু মোটাতাজা করে বাজারজাত করছেন। কৃত্রিম উপায়ে (বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে) মোটাতাজাকৃত পশুর মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। হাটের যে চকচকে চামড়ার গরু আপনার নজর কাড়ছে সেই গরুটিকেই সম্ভবত ট্যাবলেট প্রয়োগ করা হয়েছে। মানুষের শরীরের কোনো অংশ ফুলে গেলে বা পানি জমলে সেই অংশের ত্বক যেমন চকচকে দেখায়, ট্যাবলেট খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হলে তেমনি চকচকে দেখায়। এ উপায়ে মোটাতাজা করা পশু অনেক সময় ঈদের আগেই অসুস্থ হয়ে কুরবানির অযোগ্য হয়ে পড়ে, কিছু পশু মারাও যায়।
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকৃত পশু চেনার উপায় :
১. মোটাতাজা করার ওষুধ দিলে পশুর শরীরে পানি জমে ফুলে ওঠে এবং পানির উপস্থিতি সহজে টের পাওয়া যায়।
২. পানির প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে।
৩. লেজ দিয়ে মাছি তাড়াতে দেখা যায় না।
৪. খাবার তুলনামূলকভাবে কম খায়।
৫. আঙুল দিয়ে পশুর শরীরের মাংসালো অংশে চাপ দিলে শরীর দেবে যায়। সুস্থ গরুর রানের মাংস থাকবে শক্ত এবং ট্যাবলেট খাওয়ানো গরুর ক্ষেত্রে তা নরম হয়।
৬. পশু এক জায়গায় বসে থাকে, নড়াচড়া কম করে।
৭. এই ধরনের গরুর প্রস্রাবের পরিমাণও কমে যায়।
৮. মুখে অতিরিক্ত লালা বা ফেনা থাকে
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পশু মোটাতাজা করতে ৪-৫ মাস সময়ের প্রয়োজন। এ পদ্ধতিতে ইউরিয়া, চিটাগুড়, খড় মিশিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়। তাই গরুর স্বাভাবিক উশকোখুশকো চেহারা, চামড়ার উপর দিয়ে পাঁজরের কয়েকটা হাড় বোঝা যাচ্ছে এমনটা দেখেই কেনা উচিত।