কাতার-সৌদি আরব বিরোধ মিটবে?
কাতার-সৌদি আরব বিরোধ মিটবে? - ছবি : সংগৃহীত
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে কাতারের ওপর প্রতিবেশী চার আরব দেশের অবরোধ সংক্রান্ত বিরোধ বহুদূর এগিয়েছে এবং এটি উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির পথে হুমকি হয়ে উঠেছে। রোববার এমন মন্তব্য করেছেন আরব বিশ্বের এ দ্বন্দ্ব মেটাতে মধ্যস্থতার চেষ্টারত যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশেষ প্রতিনিধি।
সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগে ২০১৭ সালের জুনে কাতারের আকাশসীমা অবরোধ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। পরে তাদের সাথে যোগ দেয় মিসরও। যদিও দোহা বরাবরই প্রতিবেশীদের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইরান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ব্রায়ান হুক বলেছেন, আঞ্চলিক এ বিরোধের কারণে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা (জিসিসি) ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়েছে।
জিসিসির অন্য দুই সদস্য দেশ কুয়েত ও ওমান আরব বিশ্বের দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে দীর্ঘ দিন ধরে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। তবে কার্যত এসবে এখন পর্যন্ত কোনো ফল আসেনি।
রোববার দোহায় কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আলে ছানির সাথে বৈঠক শেষে ব্রায়ান হুক সাংবাদিকদের বলেন, এ দ্বন্দ্ব অনেক দিন ধরে চলছে। এটি শেষ করতে পারলে সব পক্ষই উপকৃত হবে। মূলত, আরব বিশ্বের এ দ্বন্দ্ব ইরানকে বশে আনার চেষ্টায় বড় বাধা বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণেই তারা যত দ্রুত সম্ভব এ সঙ্কট সমাধানে আগ্রহী। ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর জন্যই মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন ব্রায়ান হুক। সম্প্রতি ব্রায়ান হুক দাবি করেন, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি আলোচনায় না বসে মূল্যবান সুযোগ হাতছাড়া করছে। আল-মনিটরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হুক ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চিরাচরিত অভিযোগগুলোর পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বারবার সরাসরি আলোচনায় বসার যে প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে তা ইরান প্রত্যাখ্যান করছে। হুক আবার তেহরানকে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, সংলাপে বসলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে ‘আরো বড় সমঝোতা’র যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তা অর্জিত হতে পার।
ব্রায়ান হুক বলেন, ইরানের সাথে আলোচনায় বসতে ওয়াশিংটন তাড়াহুড়ো করছে না। কারণ দেশটির ওপর ট্রাম্প প্রশাসন ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়েগের’ যে নীতি নিয়েছে তাতে দৃশ্যত কাজ হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইরান অ্যাকশন গ্রুপের প্রধান আরো দাবি করেন, সম্ভাব্য আলোচনা শেষে যে চুক্তি সই হবে তাতে কোনো অবস্থাতেই ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ করতে দেয়া হবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ সে দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতারা গত বছর থেকে অসংখ্যবার ইরানের সাথে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা এমন সময় এ আগ্রহ প্রকাশ করছেন যখন ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে।
সূত্র : আলজাজিরা