ঘুমে বিছানায় প্রস্রাব করা : সহজে প্রতিকার

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল | Jul 28, 2020 07:01 pm
ঘুমে বিছানায় প্রস্রাব করা : সহজে প্রতিকার

ঘুমে বিছানায় প্রস্রাব করা : সহজে প্রতিকার - ছবি : সংগৃহীত

 

রাতে নিদ্রাকালীন মানুষের ইচ্ছাধীন বেশির ভাগ স্নায়ু বিশ্রামে থাকে। তারপরও বিশেষ বিশেষ স্নায়ু ব্যবস্থা বিশেষ অঙ্গকে নিদ্রাকালীন সময়েও পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুমের মধ্যে যখন প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয় তখন বিছানায় অচেতন অবস্থায় প্রস্রাব হয়ে যায়। শরীরের মূত্রথলি ও নিঃসরণ নালীতে এ ধরনের বিশেষ প্রতিবর্তী স্নায়ু ক্রিয়া থাকে যা আমাদের অজান্তে ইচ্ছাধীন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে কাজে লাগায়। নবজাতক ও শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের স্নায়ু ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে গড়ে ওঠে না বলে তাদের যখন তখন যেকোনো অবস্থায় প্রস্রাব করতে দেখা যায়। দুই বছর বয়স পর্যন্ত এটা ঘটে থাকে এরপর থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত ওই ঐচ্ছিক স্নায়ুতন্ত্র আস্তে আস্তে তৈরি হতে থাকে। তারপর দেখা গেছে স্বাভাবিকভাবে শতকরা ১০ শতাংশ শিশুর পাঁচ বছরের পরও বিছানায় প্রস্রাব করার অভ্যাস দেখা যায়। এবং ১ শতাংশ শিশুর ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই অভ্যাস রয়ে যায়। দেখা গেছে এ ধরনের ঘটনা বংশগত এবং মেয়েদের থেকে ছেলেদের বেশি হয়ে থাকে। এটা শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ রোগমুক্ত সমস্যা। কিছু কিছু কারণে এ ধরনের ঘটনা বেশি লক্ষ করা যায়।

চিকিৎসা : শিশুর ওপরে বর্ণিত কারণগুলো দূর করার পরও (রোগগুলো বাদে) যদি তার এই সমস্যা ১২-১৩ বছর পর রয়ে যায় তবে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তবে সাধারণ কতকগুলো ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক মানসিক বিকাশে সাহায্য করা। এ ক্ষেত্রে তাকে এ জন্য তিরস্কার না করে তার দিকে মনোযোগী হওয়া। শিশুর মলমূত্র ত্যাগের স্বাস্থ্যসম্মত শিক্ষা ও অভ্যাস করে তোলা। শিশুদের দিনের বেলায় বেশি পানি ও তরল খাবার খাওয়ানো এবং রাতে অপ্রয়োজনীয় তরল খাদ্য না দেয়া। ঘুমানোর আগে ও মধ্যরাতে একবার করে ঘুম থেকে তুলে প্রস্রাব করানো উচিত। কারণ ঘুমানোর তিন-চার ঘণ্টা পর শিশুর প্রস্রাব হয়ে থাকে। এভাবে মধ্যরাতে জাগিয়ে তোলার অভ্যাস করাতে পারলে শিশুর মধ্যে আপনা আপনি মূত্র ত্যাগের সঠিক অভ্যাস গড়ে উঠবে। বিদেশে কিছু কিছু ক্লিনিকে বিশেষ সঙ্কেতযন্ত্রের মাধ্যমে শিশুর এই বদ অভ্যাস দূর করানো হয়। আমাদের দেশেএটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। শুধু চিকিৎসকের কড়াকড়ি ব্যবস্থায় এ ধরনের সমস্যার জন্য অবসাদ রোধক ওষুধ দীর্ঘ দিন ধরে খাওয়ানো যেতে পারে। মনে রাখবেন, এই সমস্যায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।

রাতকালীন অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া : স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় কারণে রাতে ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব তৈরি কম হারে হয়ে থাকে। ফলে ছয়-সাত ঘণ্টা নিদ্রাকালীন খুব একটা প্রস্রাব করার দরকার পড়ে না। এই সময় মূত্রথলি থেকেও মূত্রের বেগের উত্তেজনা কম থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এবং রোগে রাতে প্রস্রাবের ঘন ঘন বেগ হতে পারে-

স্বাভাবিক কারণে : অতিরিক্ত পানি পান করলে, আর্দ্র ও ঠাণ্ডা আবহাওয়া, পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে, গর্ভাবস্থায়।

রোগ: ডায়াবেটিস ম্যালাইটাস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিওর (ডাইউরেটিক ফেজ), স্পাইনাল কর্ডের আঘাত, মৃগী রোগ, মূত্রনালীর সংক্রামক রোগ, প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি, বদহজম।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us