ভাইরাস বনাম টিকা : হার না-মানা লড়াই
ভাইরাস বনাম টিকা : হার না-মানা লড়াই - ছবি : সংগৃহীত
ল্যাটিন শব্দ ভ্যাক্কা (vacca) মানে গরু। আর অষ্টাদশ শতকে মানুষকে স্মল পক্স বা বসন্ত রোগের থাবা থেকে বাঁচানোর জন্য গরুর বসন্ত রোগের গুটি থেকে যে প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন বানানো হয়েছিল, সেই প্রয়াসের মধ্যেই জন্ম হয় ‘ভ্যাকসিন’ শব্দটির। যিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই বিরাট অগ্রগতি, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জনক, তাঁর নাম এডওয়ার্ড জেনার।
তারপর থেকে টিকা আবিষ্কারের গবেষণায় মানবসভ্যতা অনেক পথ এগিয়েছে। এবং আমরা পেয়েছি নানা ভ্যাকসিন। ভাইরাসের বিরুদ্ধে, ব্যাকটিরিয়াজনিত রোগ আটকাতে এবং নানা পরজীবীর আক্রমণ ঠেকাতে তা কাজ করে। স্মল পক্সের টিকা তৈরির মাধ্যমে ১৭৮৬ সাল থেকে যে জয়যাত্রার রথ চলতে শুরু করেছিল, তার গতি কিন্তু আস্তে আস্তে কমে এসেছে। কেন এমন হলো?
সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে বুঝতে হবে, অহরহ চলতে থাকা লড়াইয়ের কাহিনী। মানুষ বনাম রোগ জীবাণুর যুদ্ধ। আমাদের যে বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা, তার গালভরা নাম ইমিউনিটি (প্রতিরোধ ক্ষমতা)। সেই ইমিউনিটির কিছু সৈনিক আমাদের জন্মলগ্ন থেকেই সঙ্গে থাকে। আর অন্যান্য কিছু সৈনিক তৈরি হয় পৃথিবীর বুকে আমাদের বড় হয়ে ওঠা ও হাঁটাচলার পথে। শরীর যখন নানা সংক্রমণের মুখোমুখি হয়, তখন এই সৈনিকরা জন্ম নেয়। কেউ কেউ থেকে যায় সেই যুদ্ধের স্মৃতি-ক্ষমতা নিয়ে। পরে যদি আবার সেই জীবাণু আক্রমণ করে, তারা পুরনো স্মৃতিশক্তির দৌলতে খুব তাড়াতাড়ি কাজে নেমে পড়ে। রোগ-জীবাণুকে যুদ্ধে হারাতে।
এ তো গেল মানুষের লড়াই। কিন্তু রোগ-জীবাণুকেও তো বেঁচে থাকতে হবে। তারাও তাই খুঁজে বেড়ায় নানা রাস্তা। যার মাধ্যমে মানুষের প্রতিরোধী ক্ষমতাকে ফাঁকি দেয়া যায়। এইচআইভি সরাসরি আক্রমণ হানে ইমিউনিটির জন্য দায়ী কোষগুলোর উপর। আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে, সৈনিকদের যে জেনারেল (দলনেতা কোষ) নির্দেশ দেয়, তাকেই আক্রমণ করে এইচআইভি। ফলে সৈনিক দলের ক্ষমতার মূল ভিতটাই হয়ে যায় নড়বড়ে। আবার অন্য কিছু ভাইরাস শিখে নিলো কীভাবে শরীরের কিছু কোষের মধ্যে ঢুকে লুকিয়ে থাকতে হবে। যাতে প্রতিরোধ ক্ষমতা বহনকারী সৈনিকরা তাদের খোঁজ না পায়। যখন প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু দুর্বল হবে, যেমন বয়সজনিত কারণ বা ডায়াবেটিস হলে, তখন এই ভাইরাস বেরিয়ে আসবে লুকানো আস্তানা থেকে। এর উদাহরণ হারপিস ভাইরাস।
কিছু ভাইরাস আছে, যারা তাদের বাইরের আবরণ বদলে ফেলে। যার ফলে সেই ভাইরাসটাকে সহজে চিনতে পারে না শরীরের প্রতিরোধকারী সৈনিকরা। ফলে তারা অনেক সময়ই শরীরের অন্যান্য কোষে ঢোকা আটকাতে পারে না। এই ধরনের ‘চালাক’ ভাইরাস হলো ইনফ্লুয়েঞ্জা। এভাবে বাইরের আবরণ বদলে তাদের বিরুদ্ধে তৈরি করা ভ্যাকসিনকেও ধোঁকা দেয় নানা ভাইরাস। করোনা ভাইরাসেরও ক্ষমতা আছে রূপ বদলানোর। ফলে সেও মানব সভ্যতার দিকে জব্বর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা ভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা। একজন মানুষ থেকে আর এক জনে। এ সবই ভাইরাসরা করছে বেঁচে থাকার তাগিদে। সংখ্যায় বাড়বে তারাও।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা যদি জানি কী করে ভ্যাকসিন বানানো যায়, তাহলে কেন কোভিড-১৯’এর বিরুদ্ধে (সার্স কোভ টু) তাড়াতাড়ি সেই জ্ঞান কাজে লাগাচ্ছি না? কেন তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন বানিয়ে বাজারে আনতে পারছি না? বিজ্ঞানও তো ‘জেনারে’র সময় থেকে এগিয়ে এসেছে অনেক। নতুন নতুন পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন বানানোর কৌশল এখন মানুষের আয়ত্তে। তবে কেন ভ্যাকসিন তৈরি হবে না? এখানে একটু থামতে হবে আমাদের। ভাবতেও হবে।
নতুন কিছু আবিষ্কার হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানে। ধরা যাক ওষুধ বা ভ্যাকসিন। সেটা কার্যকরী কি না, সেটা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। দেখা গেল, সেই প্রতিষেধক কাজ করছে, কিন্তু পাশাপাশি যদি মারাত্মক কোনো ক্ষতি করে দেয়? তাহলে তো মুশকিল! তাই কার্যকারিতা বা এফিকেসি পরীক্ষা করতে কিছু ধাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাহলে দেখি কী কী ধাপ...।
সর্বপ্রথম পরীক্ষাগারে ভ্যাকসিন তৈরি করা। তারপর অন্যান্য প্রাণীদেহে তার প্রয়োগ এবং ফলাফল যাচাই। ছোট ছোট প্রাণী যেমন ইঁদুর, গিনিগিপ বা জেব্রা, মাছ লাগে এই পরীক্ষায়। আবার বড় প্রাণীও দরকার... বাঁদর বা শিম্পাঞ্জি। রোগ ভিত্তিতে প্রাণী বাছা হয়। কিন্তু অনেক সময়ই এইসব প্রাণীর মধ্যে রোগ-জীবাণুরা তেমন প্রভাব বিস্তার করে না, যা হয় মানুষের শরীরে। তাই পরবর্তী পর্যায়ে প্রয়োজন মানবদেহে পরীক্ষা-নিরীক্ষার। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যার নাম ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’।
ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ে দেখা হয়, মানুষের শরীরে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ কি না। এবং তা ইমিউনিটির সৈনিকদের (কিছু প্রোটিন, কিছু কোষ) তৈরি করতে পারছে কি না। দ্বিতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা আরও যাচাই হয়। ঠিক করা হয়, কী মাত্রায় সেটি দেয়া যেতে পারে। বুঝে নেয়া, প্রয়োগের পর শরীরের সেনাবাহিনীর অবস্থা কী হলো, যাতে তারা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়তে পারে। তৃতীয় এবং ট্রায়ালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে বহু সুস্থ মানুষকে সম্ভাবনাময় ভ্যাকসিনটি দেয়া হয়।
মনে রাখা দরকার, আগের দু’টি পর্যায়ে পাশ করতে না পারলে এই পর্যায়ে আসা যাবে না। তৃতীয় ধাপেই তুলনা করে দেখতে হবে, ভ্যাকসিনটি কাজ করেছে কি না। পরীক্ষাগারে ভ্যাকসিন তৈরির শুরুর থেকে এই পর্যায় পর্যন্ত আসতে আগে সময় লাগত ১০ থেকে ১৫ বছর। কখনো আরো বেশি। তবে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকাতে ভাবনাচিন্তা চলছে, কীভাবে এই সময়ের ব্যবধান নামিয়ে আনা যায়। ইবোলা, নিপা ও জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় এই প্রয়োজনীয়তা গুরুত্ব পেয়েছে।
তার পাশাপাশি এটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে যে, দ্রুত কাজ করতে গিয়ে যেন কোনো ফাঁক না থেকে যায়। মানবাধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয়। বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও সিদ্ধান্তকে যেন ব্যবসায়িক স্বার্থ অস্বচ্ছ করে না দেয়। এই সব কিছু মাথায় রেখেই মনে করা হচ্ছে, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ভ্যাকসিন তৈরির পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা সম্ভব।
প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো ভাইরাসকে কব্জা করা। সেই পর্বটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভাইরাসটাকে না কব্জা করতে পারলে ভ্যাকসিন তৈরিও সম্ভব নয়। জানুয়ারি মাসের শেষে চীনের উহান থেকে কেরলে ফেরা ভারতীয় নাগরিকের মধ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর এল। কিন্তু করোনার ভাইরাস ‘সার্স কোভ-টু’কে ধরা গেল না। সেটা প্রথম সম্ভব হল ইতালি থেকে আসা ইতালিয়ান এবং ভারতে সংক্রামিত তাদের আত্মীয়দের থেকে। তারপরই আগ্রা থেকে খবর এল সংক্রমণের। সেখানেও ভাইরাসটা পাওয়া গেল। সেই হিসেবে পরীক্ষার জন্য প্রথম করোনার ভাইরাস সার্স কোভ-টু মিলল মার্চ মাসে। পাঠানো হল পুনেয়। আইসিএমআরের প্রতিষ্ঠান এনআইভি অর্থাৎ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে।
সার্স কোভ-টু-র ১২টা পজিটিভ স্পেসিমেন নিয়ে পরীক্ষা হলো। এর মধ্যে আটটা ইতালিয়ান এবং তাদের আত্মীয়দের। বাকি চারটি আগ্রা এবং ইতালি থেকে আসা তাদের পরিচিত দিল্লির বাসিন্দাদের। এক মাসের কিছু সময় ধরে চলল পরীক্ষা। জীবন্ত ভাইরাস নিয়ে কালচার। তারই একটি অংশ ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ‘ভারত বায়োটেক’কে দিলো আইসিএমআর। ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়ায় জীবন্ত ভাইরাস ওদের দেয়া হয়েছে। ভারত বায়োটেক সেটাকে নিষ্ক্রিয় বা ইনঅ্যাক্টিভ করেছে। কীভাবে করেছে, সেটা ওদের সিক্রেট। তবে সাধারণত, হিট কিলড, ফর্মালিন দিয়ে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় করা হয়। এক একটা ভাইরাস এক এক পদ্ধতিতে নিষ্ক্রিয় হয়। তারপর তার থেকে তৈরি করা হয় ভ্যাকসিন। এখানে অবশ্যই উল্লেখ করতে চাই যে, স্রেফ ভারত বায়োটেকই নয়, ভারতের আরো দুই কোম্পানি ‘সিরাম ইনস্টিটিউট’ এবং ‘ক্যাডিলা’ও করোনার ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে। আইসিএমআর জড়িয়ে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিনে’র সঙ্গে।
আইসিএমআরের গবেষক হিসেবে আমিও সেটির সঙ্গে যুক্ত। নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণে। টিকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রয়োগ পর্বে নিরাপত্তা এবং তার কার্যকারিতা। ফেজ ওয়ানে সেটাই সবচেয়ে অগ্রাধিকার নিয়ে দেখা হয়। অ্যানিমাল ট্রায়ালে ফল পাওয়ার পরই হিউম্যান ট্রায়াল। ফেজ ওয়ান। সেখানে দেখতে হয় ভ্যাকসিন দেওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে কী হচ্ছে। কারও হয়ত ধুম জ্বর এল, কারও শুরু হল পেটে ব্যথা, কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করলেন। কারও শরীরে বেরল র্যাশ। তাহলে বুঝতে হবে ভ্যাকসিনটায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে। কিন্তু যদি বেশিরভাগেরই কোনো অসুবিধা না হয়, তখনই সফল ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ফেজ টু-তে। সেখানে অনেক বেশি লোকের (স্বেচ্ছাসেবক) উপর দু’টি অংশে ভাগ করে দু’টি ভ্যাকসিন আলাদা আলাদা গ্রুপকে দেয়া হয়। আইসিএমআর যে করোনার ভ্যাকসিনের কাজে লিপ্ত, অর্থাৎ কোভ্যাকসিন... ফেজ টু-তে তা প্রয়োগ হবে একটি গ্রুপে। অন্য গ্রুপকে দেয়া হবে জাপানিজ এনসেফেলাইটিসের (জেই) টিকা। এবার দু’টি গ্রুপের উপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা হবে, ফল কী হচ্ছে। যদি দেখা যায়, যাদের কোভিডের টিকা দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে হয়তো অল্প লোকের করোনা হলো। অথবা কারো হলোই না। আবার যাদের জাপানিজ এনসেফেলাইটিসের টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হলেন, তাহলে বুঝতে হবে কাজ করছে কোভিডের নতুন ভ্যাকসিন।
আর যদি উল্টোটা হয়? অর্থাৎ যাদের জেই’র টিকা দেয়া হয়েছে সেই গ্রুপে যতজনের করোনা হলো, তার চেয়ে বেশি হলো কোভিডের টিকা নেয়া ব্যক্তিদের? তাহলে জানতে হবে, কাজ করছে না করোনার নতুন ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিন দেয়ার পরও শরীরে সেটি নতুন কোষ, অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সময় নেয় কমপক্ষে ১২-১৪ দিন। তারপর শুরু চ্যালেঞ্জ— সেই দেহে যদি ভাইরাস ঢোকে, তাহলে প্রতিষেধক কীভাবে কাজ করছে, বা আদৌ করছে কি না। কোভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ০.৫ মিলির দু’টি ডোজ দেয়া হবে। ইঞ্জেকশন আকারে।
প্রথমটি দেয়ার ১৪ দিন পর দ্বিতীয়টি। গোটা ভারতে ১ হাজার ১২৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর পরীক্ষাটা হবে। প্রথম পর্যায়ে ৩৭৫ জন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭৫০ জনের উপর চলবে নিরীক্ষণ। প্রথম পর্যায়ে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সি এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২ থেকে ৬৫ বছর বয়স্কদের উপর ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চলবে।
তাই প্রবল ধৈর্য্য, পর্যবেক্ষণ আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়েই এক একটি ফেজ কাটাতে হয়। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ফেজ টু ট্রায়ালে ভ্যাকসিন কাজ করছে, সংখ্যাতত্ত্বে প্রমাণ হলে তবেই ফেজ থ্রি ট্রায়াল। অনেক বেশি লোকের মধ্যে প্রয়োগ। তার সংখ্যাতত্ত্ব দেখে তবেই বলা যায় টিকা সফল। তখনই সাধারণের জন্য প্রয়োগের উপযোগী হয়। তার আগে মোটেই নয়। তাই আর যাই হোক, ভ্যাকসিন তৈরি বাজারে তাড়াতাড়ি ঝাঁপিয়ে পড়ে মাছ কেনা নয়।
........
লেখক : প্রধান, এপিডেমিনোলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিসেস ডিভিসন (আইসিএমআর-হেডকোয়ার্টার, নয়াদিল্লি), ডিরেক্টর আইসিএমআর-ন্যাশনাল এইডস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (নারী), পুনে
সূত্র : বর্তমান