ভারতের কৌশল

এ কে এম মাকসুদুল হক | Jul 23, 2020 07:48 pm
রাফাল জঙ্গি বিমান

রাফাল জঙ্গি বিমান - ছবি : সংগ্রহ

 

গত ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তে গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা স্থলে সৃষ্ট, বিরোধে চীন ও ভারতের জওয়ানদের মধ্যে নৃশংস কায়দায় ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যায়। এতে ভারতের ২০ জন সেনা নিহত, ৭৬ জন মারাত্মক আহত এবং ১০ জন চীনা সেনাদের হাতে আটক হয়। দুই দেশই পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। সংঘর্ষের অনেক সাম্প্রতিক কারণ থাকলেও সীমান্তে কৌশলগত ও ভূকৌশলগত প্রাকৃতিক ভূমির ওপর আধিপত্য বিস্তার বা রক্ষাই ছিল মূল কারণ। সংঘর্ষের পর পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। অভ্যন্তরীণ চাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মসনদ টালমাটাল হয়ে পড়েছে। দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কমান্ডারদের বৈঠকের পর বৈঠক হয়েছে। কিন্তু উত্তেজনা বেড়েই চলছে। ওই অঞ্চলের সীমান্ত ভয়াবহ সামরিকীকরণের দিকে চলে গেছে, যদিও দৃশ্যত তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সীমান্তের এই সামরিক উত্তেজনার মধ্যে ভারত তার স্থল ও বিমানবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি আরো একটি শক্তিশালী বাহিনী তথা মিডিয়া বা গণমাধ্যমকে নিয়োজিত করেছে। তাই ভারতীয় মিডিয়া এখন দেশে এবং বিদেশে প্রচণ্ড সরগরম হয়ে উঠেছে। কারণ, তারা ১৯৬২ সালের চীনের সাথে প্রথম যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে মিডিয়াকে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতের সময় কাজে লাগাতে পারঙ্গম। এই দক্ষতা তারা ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সফলভাবে প্রয়োগ করেছে। উইকিপিডিয়ার মতে, কারগিল সংঘর্ষ ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম লাইভ ব্যাটেল বা জীবন্ত যুদ্ধ। ওই যুদ্ধ খুব দ্রুতই ‘সংবাদ-প্রচারণার’ যুদ্ধে রূপ নেয়। ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরবিরোধী দাবি সংবলিত ‘প্রেস ব্রিফিং’ করতে থাকে। কিন্তু চূড়ান্তভাবে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে পাকিস্তানি মিডিয়া নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে।

ভারতের অসংখ্য প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক চ্যানেলের তৎপরতা এবং তাদের জনগণ ও মিডিয়াকে খুব দ্রুততার সাথে আস্থায় নেয়ার দক্ষতার কারণেই সেই যুদ্ধে ভারত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। ওই কৌশল তাদের সামরিক অভিযানের ‘ফোর্স-মাল্টিপ্ল্যায়ার’ হিসেবে কাজে দিয়েছিল। সে দিন দারুণ সফল হয়েছিল ভারতের আরো একটি কৌশল। তা হলো- তারা ‘দ্য টাইমস’ এবং ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’সহ বিভিন্ন বিদেশী পত্রপত্রিকায় উগ্রবাদীদের পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সহযোগিতার বর্ণনা দক্ষতার সাথে প্রচার করতে পেরেছিল। ফলে তারা বিশ্ব দরবারে পাকিস্তানের বিপরীতে রাজনৈতিক সহমর্মিতা পেতে সক্ষম হয়। বিবিসির তথ্য মতে, ভারতের হাজারো পত্রিকা প্রকাশিত হয় পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায়। তাদের প্রায় ৯০০ প্রাইভেট স্যাটেলাইট টিভি স্টেশনের মাধ্যমে ১৯৭ মিলিয়ন পরিবার টেলিভিশন দেখে থাকে। অল ইন্ডিয়া রেডিওর (এআইআর) মাধ্যমে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষের কানে সব খবর পৌঁছে। আরো রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার বিভিন্ন পত্রিকা। এগুলোর মাধ্যমে ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের কাছে খবর পৌঁছে থাকে (বিবিসি নিউজ, ২৭ এপ্রিল ২০১৯)।

সাম্প্রতিককালে গালওয়ান যুদ্ধেও ভারত সেই মিডিয়া শক্তির কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। একদিকে দেশের অভ্যন্তরে জনগণের আস্থা এবং অন্য দিকে বহির্বিশ্বে চীনের আগ্রাসনের সংবাদ প্রচার করে বৈশ্বিক আস্থা অর্জনে জোর দিচ্ছে। লাদাখ সীমান্তে ভারতের শক্তি বৃদ্ধির খবর এবং ছবি মিডিয়াতে আসছে। একই সাথে তাদের যুদ্ধের ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে উপস্থাপিত করে চীনের মনস্তত্ত্বে আঘাতের চেষ্টা করা হচ্ছে। লাদাখ এলাকায় ভারত ৪৫ হাজার জওয়ানসহ সম্মুখ ঘাঁটিতে মোতায়েন করেছে টি-৯০ ট্যাংক, ১৫৫ মিলিয়ন বফোর্স হাউইটজার কামান, এয়ার সার্ভাইলেন্স সিস্টেম, এয়ার ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্র ‘আকাশ’ এবং প্রস্তুত করে রেখেছে ‘বায়ুসেনা’। মোতায়েনকৃত ছয়টি টি-৯০ ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী। সেই সাথে কাঁধে বহনযোগ্য ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রও মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে ভারতবাসীকে মনোবল জোগানো এবং চীনা নেতাদেরকে মানসিক চাপে ফেলার জন্য ভারতীয় সংবাদ সংস্থার বরাতে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ভারতে জুলাই মাসের মধ্যেই ফ্রান্সে তৈরি করা ছয়টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ‘রাফাল’ পৌঁছাবে। এই ‘রাফালে’ দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র সংযুক্ত থাকবে। ‘মেটয়র’ যা ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বের আকাশ থেকে আকাশের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সক্ষম, আর ‘স্ক্যাল্প’ নামক ক্ষেপণাস্ত্রটি আকাশ থেকে ভূমিতে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। হরিয়ানার আম্বালা ও পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা বিমানঘাঁটিতে মোট ৩৬টি ‘রাফালা’ নামক অত্যাধুনিক বিমান মোতায়েন করা হবে ২০২২ সালের মধ্যে। এরই মধ্যে সাতজন ভারতীয় বৈমানিক ‘রাফাল’ উড্ডয়নের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন।

অবশ্য ইতোমধ্যেই লাদাখ সীমান্তের নিকটবর্তী ঘাঁটিগুলোতে ‘সুখোই-৩০’, ‘মিগ-২৯’ এবং ‘জাগুয়ার’ বিমান মোতায়েনের খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম প্রচার করেছে। অন্যদিকে ‘দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া’ প্রকাশ করেছে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে মস্কোকে ঝ-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম এবং অন্যান্য খুচরা যন্ত্রাংশ খুব দ্রুত ছাড়করণের জন্য তাগাদা দেবেন। এসব খবর ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশের মূল উদ্দেশ্য হলো, চীনের অধিকতর শক্তিশালী সামরিক শক্তির সাথে ভারসাম্য সৃষ্টির প্রচারের মাধ্যমে ভারতের জনগণকে নিজেদের সামরিক সামর্থ্যরে ব্যাপারে আশ্বস্ত করা। তা ছাড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষকে প্রশমিত করার জন্যও গণমাধ্যমে চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিক্রিয়ামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের খবরাদি প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে মহারাষ্ট্রের সরকার চীনের তিনটি কোম্পানির সাথে চুক্তিকৃত ৬৫৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ স্থগিত করেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ‘জি নিউজ’ প্রকাশ করেছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনের সরঞ্জাম ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে। আবার বিহারে একটি সেতু নির্মাণে জড়িত দুটি চীনা কোম্পানির দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকার টেন্ডার বাতিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও এসব খবর সীমান্তে ব্যর্থতা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অদূরদর্শী মন্তব্যের কারণে ফুঁসে উঠা জনগণের ক্ষোভকে আপাত সামাল দেবে বলে মনে হয়। কিন্তু চীনের সাথে বাণিজ্যিক যুদ্ধে তারা কতটুকু পেরে উঠবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। কারণ ভারত চীন থেকে বছরে ৭০.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে থাকে। অর্থাৎ, ভারতের মোট আমদানির ১৪ শতাংশ চীন থেকে আমদানি করা হয়। তামিলনাড়–র টিরুপ্পুরের টেক্সটাইল হাব চীনা যন্ত্রপাতির ওপর ৯০ শতাংশ নির্ভরশীল যেখানে প্রায় ছয় লাখ শ্রমিক রয়েছে। এমতাবস্থায় ভারতের এই বাণিজ্যিক প্রতিক্রিয়া গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। অভ্যন্তরীণ জনমত গঠনের পাশাপাশি ভারতের মিডিয়া বিশ্ব দরবারের সহমর্মিতা পাওয়া এবং চীনবিরোধী মনোভাব সৃষ্টির প্রয়াস পাচ্ছে। তারা প্রায় প্রতিদিনই লাদাখ এলাকায় গালওয়ান উপত্যকার উপগ্রহভিত্তিক ছবি প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এই ছবিগুলোর মাধ্যমে তারা ১৫ জুনের সংঘর্ষসহ ভারতের অভ্যন্তরে চীনের নির্মিত সামরিক স্থাপনার ছবি, চীন কর্তৃক গালওয়ান নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ছবি ইত্যাদি প্রকাশ করে বৈশ্বিক সহমর্মিতা অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে একটা ব্যাপারে তার সফল হয়েছে : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মিডিয়াকে বলেছেন, তারা ইউরোপ থেকে ২৭ হাজার সেনা সরিয়ে এশিয়াতে মোতায়েন করবে ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীনসাগর, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন এলাকায় চীনের আগ্রাসী ভূমিকাকে প্রতিহত করার জন্য।

ভারতীয় গণমাধ্যম বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশকেও আঘাতের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। সম্ভবত তাদের খুব আশা ছিল, এই দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ ভারতের পক্ষে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। কিন্তু বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা অত্যন্ত দূরদর্শিতার সাথে আপাত নিরপেক্ষতার ভূমিকা নিয়েছেন। আশার বিষয় হলো- এই ইস্যুতে আমাদের নেতারা কোনো ধরনের আবেগময় বা অদূরদর্শী মন্তব্য থেকে বিরত রয়েছেন। এটাকে বিশ্লেষকরা অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন।

আর এ বিষয়ে জনগণের মনোভাব সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। তারা দীর্ঘদিন যাবত ভারত কর্তৃক পানিতে, ভাতে ও গুলিতে মরার অব্যক্ত কষ্ট থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলতে চাইছে, অপেক্ষাকৃত ছোট ও দুর্বলের ওপর অত্যাচারের কষ্টটা কী; অন্ততপক্ষে সেটা ভারত এবার বুঝতে সক্ষম হবে। নিরস্ত্র অসামরিক বাংলাদেশী নাগরিককে সহজেই হত্যা করা সম্ভব হলেও সীমান্তে সামরিক সদস্যদের মুখোমুখি হওয়া মোটেও সহজ নয়। তবে ভারতের মিডিয়ার আচরণে সেই ভাবনার প্রতিফলন মোটেই নেই। এবার তাদের দু’টি প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকা এবং ‘জি নিউজ’ অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য ছুড়েছে বাংলাদেশ সম্পর্কে। সম্প্রতি চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে তারা শিরোনাম করেছে, ‘ভারতকে চাপে ফেলতে বাংলাদেশকে খয়রাতি চীনের’। যদি দু’টি দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির কূটনীতিকে ‘খয়রাতি’ বলা হয়, তবে তা নিশ্চয়ই তৃতীয় কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো। ভারতের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব রয়েছে; কিন্তু তৃতীয় কোনো দেশের সাথে বন্ধুত্ব বা সম্পর্কোন্নয়ন না করার চুক্তি নিশ্চয়ই নেই। আর ভারতের সাথে আমাদের আনুষ্ঠানিক বন্ধুত্ব রয়েছে; কিন্তু পেছনের ৫০ বছরের দিকে তাকালে বাংলাদেশের জনগণ কি বলতে পারবে যে, ভারত আমাদের অকৃত্রিম ও প্রতিবেশীসুলভ বন্ধু? কাজেই চীন আমাদের ৯৭ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের অনুমতি দিলে সেটা কি ‘খয়রাতি’ হতে পারে? অথচ কিছুদিন আগে আমরা যখন পেঁয়াজ নিয়ে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছিলাম, তখন ভারতের কাছ থেকে আমরা কী সহযোগিতা পেয়েছি? এ ছাড়া ভারতের সাথে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি বছরে ৩০০ কোটি ডলার। নিজেদের মোট আমদানির মাত্র ২ শতাংশ তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করে থাকে। আর আমাদের আমদানির ১৬ শতাংশই আসে ভারত থেকে।

আসলে সমস্যা অন্য জায়গায়। ভারত তার সব প্রতিবেশীর সাথেই সমতার ভিত্তিতে নয়, বরং শক্তিমত্তার ভিত্তিতেই সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। চীন এই সুযোগটি লুফে নিচ্ছে। ফলে চীন দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক সফলতা অর্জন করেছে। এ কথাটি ভারতের পূর্বোল্লিখিত মিডিয়া দু’টি অকপটে স্বীকার করেছে। আনন্দবাজার বলেছে, ‘দক্ষিণে শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপ থেকে উত্তরে নেপাল-ভুটান, কারো সাথেই আর আগের উষ্ণ সম্পর্ক নেই ভারতের’ (নয়া দিগন্ত : ২২ জুন ২০২০) এমনকি এই সঙ্ঘাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও চীন বা ভারত কোনো পক্ষই অবলম্বন করে সুস্পষ্ট বক্তব্য দেননি। আজকের এই চীন-ভারত সংঘর্ষের সময় এটাই বাস্তবতা। এটাই চীনের কূটনৈতিক সফলতা। শক্তি দিয়ে স্বার্থ আদায় করা যায়, সমর্থন আদায় করা যায় না। গত ৫০ বছরে এটাই ঘটেছে দক্ষিণ এশিয়ায়। এর পরিণতিতে চীন আজ আঞ্চলিক কূটনীতিতে শতভাগ সফল।

তবে চলমান উত্তেজনাতেও ভারত তার মিডিয়ার মাধ্যমে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে পুরনো ধাঁচে সফলতা অর্জনের তৎপরতা চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান। কিন্তু পৃথিবী এখন অধিকতর বিশ্বায়নের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। সবাই আগের চেয়েও বেশি করে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। এই সময়ে উত্তম কূটনীতিকেই সফলতার নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করা বুদ্ধিবৃত্তিক আচরণ হবে বলে বাস্তবতা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। এমন বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে মিডিয়া কোনো স্ট্রাইকিং ফোর্স হতে পারে না, বরং তা হতে পারে আত্মসমালোচনা করে ভুল সংশোধনে সবার আস্থা অর্জনের মাধ্যম।

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং পিএইচডি গবেষক

E-mail: maksud2648@yahoo.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us