বেইজিংও এখন ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লায়!
বেইজিংও এখন ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লায়! - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের পরমাণু হামলার টার্গেট এখন আর পাকিস্তান নয়, বরং চীন। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বুলেটিন অব অ্যাটোমিক সায়েন্টিস্টস-এ প্রকাশিত ভারতের পরমাণু শক্তির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভারতের পরমাণু কৌশল পাকিস্তান থেকে চীনে বদলে গেছে। সমীক্ষাটিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের দোকলাম সঙ্কটের পর ভারতের এই অবস্থান জোরদার হয়।
লেখক হ্যান্স এম ক্রিস্টেনসেন ও ম্যাট কোরদা উল্লেখ করেন, ভারতের পরমাণু কৌশল ঐতিহ্যগতভাবে চিল পাকিস্তানকেন্দ্রিক্ এখন তা ক্রমবর্ধমান হারে চীনের দিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এখন বেইজিং ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পাল্লার মধ্যে।
ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস-এর নিউক্লিয়ার ইনফরমেশন প্রজেক্টের পরিচালক হচ্ছেন ক্রিস্টেনসেন।আর কোরদা হলেন ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস-এর গবেষণা সহযোগী। দুই লেখক উল্লেখ করেন যে ভারতের পরমাণু আধুনিকায়ন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে সে চীনের সাথে তার ভবিষ্যত কৌশলগত সম্পর্কের ওপর জোর দিচ্ছে।
সমীক্ষায় ভবিষ্যদ্বাণী করা হয় যে আগামী ১০ বছরে নতুন সক্ষমতা উন্নয়ন ও মোতায়েনে ভারতের চীনকেন্দ্রীক দৃষ্টিভঙ্গি ভূমিকা পালন করবে এবং পাকিস্তানের প্রতি ভারতের মনোভাবে পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২০১৮ সালে দেশীয়ভাবে তৈরী পরমাণু শক্তিচালিত ব্যালাস্টিক মিসাইল সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্তের প্রথম শক্তি প্রদর্শনমূলক টহল সম্পন্ন হওয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভারতের পরমাণু ট্রায়াড আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমীক্ষায় বলা হয়, ভারতের আট ধাপবিশিষ্ট পরমাণু ট্রায়াড এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, শিগগিরই এগুলোর কাজ শেষ হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতে এখন অন্তত দুটি এয়ারক্র্যাফট সিস্টেম, চারটি স্থলভিত্তিক ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম, দুটি সাগরভিত্তিক ব্যলাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (যা পরমাণু সক্ষমতাপূর্ণ) রয়েছে। লেখকদ্বয় জানান, আরো অন্তত তিনটি সিস্টেম তৈরী করা হচ্ছে। এগুলো শিগগিরই যুদ্ধ-প্রস্তুতি পর্যায়ে চলে আসবে।বেইজিং এখন ভারতীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার মধ্যে।
আকাশ যুদ্ধে ভারত সম্ভবত রাফাল যোগ করবে। ফরাসি বিমান বাহিনীতে এসব বিমান পরমাণু মিশনে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আছে মিরেজ ২০০০এইচ ও জাগুয়ার আইএস বিমান। ভারতীয় মিরেজ ২০০০এইচ এখন আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
স্থলভাগে ভারত অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করছে। এটি প্রায় আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর পাল্লা ৫০০০ কিলোমিটার। এই ক্ষেপণাস্ত্র চীনের সীমান্ত থেকে আরো ভেতরে আঘাত হানতে পারবে।
ভারত তার সাগরভিত্তিক পর্ব শক্তিশালী করছে পরমাণু ট্রায়াডে। ভারতের সাবমেরিন-চালিত ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কে-৪ তৈরীর পর্যায়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি ছয়টি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পাল্লার কে-৪ পাকিস্তানের সব ও চীনের বেশির ভাগ শহর টার্গেটে রয়েছে। ভারতের ডিআরডিও ৫০০০ কিলোমিটারের এসএলবিএম তৈরীর পরিকল্পনা করছে। এর ফলে ভারতীয় সাবমেরিনগুলো দক্ষিণ চীন সাগরসহ পুরো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে টার্গেট করতে পারবে।
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে