হাফতারের পলায়ন, সিসির আগমন
হাফতারের পলায়ন, সিসির আগমন - ছবি : সংগৃহীত
এর আগে এই কলামে ‘লিবিয়ায় তুর্কি বাহিনী’ ৩০ ডিসেম্বর ২৯১৯ সংখ্যায় লিখেছিলাম যে, ‘তুরস্ক সেনাবাহিনী লিবিয়ার মাটিতে পা রাখার সাথে সাথেই সমরে ও ভূরাজনীতিতে অর্থবহ পরিবর্তন আসবে এতে কোনো সন্দেহ নেই’। আজ ছয় মাস পর কার্যত তাই হয়েছে। ত্রিপোলি দখল করে নেয়ার চূড়ান্ত যুদ্ধে হাফতারের জয়ের পতাকা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলতে গেলে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পলায়ন করে মিসরে আশ্রয় নিয়েছেন। লিবিয়ার সাথে চুক্তির কারণে লিবিয়া তুরস্ক থেকে সেনা কনভয় ও অস্ত্র পাচ্ছে। নৌ ও বিমানবাহিনীর সহায়তা এবং বিভিন্ন সামরিক উপকরণও পাচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সামরিক তথ্য ও ইন্টেলিজেন্স সরবরাহ, যা ত্রিপোলি সরকারের বলতে গেলে নেই।
গাদ্দাফিকে যারা ক্ষমতাচ্যুত করেছে তারা এবার পরবর্তী যুদ্ধের অধ্যায় শুরু করেছে। যদিও এই অধ্যায় অনেক আগেই শুরু হয়ে এখন পূর্ণ ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত; তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ফ্রান্স ও রাশিয়া। এদের উদ্দেশ্য তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস আহরণ এবং আইএস, আলকায়দা ও ব্রাদারহুডকে শেষ করো কিন্তু এতে বহু বিভক্ত হচ্ছে মুসলিম উম্মাহ, মরছে সাধারণ মানুষ।
২০১৯ সালের এপ্রিলের শুরুতে হাফতার ত্রিপোলি দখলের জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ শুরু করে। এক বছর যুদ্ধ করেও তিনি কোনো কূলকিনারা করতে পারেননি। পরন্ত খলিফা হাফতার তুর্কি জাহাজসহ তুরস্কের অন্যান্য স্বার্থে আঘাত হানতে তার বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে তুর্কি বাহিনী ঝড়ের গতিতে যুদ্ধে ঝাঁপিরে পড়ে। তুর্কি ও সরকারি বাহিনী তাকে ঠেলে সেখানে নিয়ে গেছে যেখান থেকে তিনি ত্রিপোলি দখলের অভিযান শুরু করেছিলেন।
এমনকি তারহুনাতে মূল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই হাফতারের সৈন্যরা ভেগে যায়। এটা ৫ জুনের ঘটনা। তুর্কি ড্রোনের আক্রমণ ও হাজার হাজার সিরিয়া-আগত যোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণে পর্যুদস্তু হয় হাফতার বাহিনী। গ্রাউন্ডে যারা কর্মরত তাদের বিবরণীতে জানা যায়, হাফতার বাহিনীতে যুদ্ধে সেনাধাক্ষ্যদের কলহ ছিল অহরহ ও নেতৃত্বের অভাবও ছিল। হাফতার যখন কায়রোতে সিসির অতিথি তখন রাশিয়ার সৈন্যরাও পলায়ন করে। তুর্কি আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য হাফতার উন্নতমানের সামরিক জেট পাঠানোর অনুরোধ করা সত্ত্বেও মস্কো তা পাঠায়নি। যখন জেটগুলো আসে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। অবস্থা দেখে মনে হয় রাশিয়ার সেনারা হাফতারের কমান্ডে কাজ করছে না, তাদের নিজস্ব লাভ লোকসানের বিষয় দেখছে। সেনাদের অভিযোগ আছে যে, হাফতার ফ্রন্ট লাইনের সেনাদের কখনো ভিজিট করতেন না এবং পলায়নরত সৈন্যদের সাথেও দেখা করেননি, কথা বলেননি। অনেকে মনে করেন, তার সন্তানই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। হাফতারের যুদ্ধ কৌশল ছাড়াও রাজনৈতিক প্রজ্ঞারও অভাব। তিনি উপদেষ্টাদের কথা শুনেন না, পূর্ব লিবিয়ায় তার সমর্থকদের সাথেও মিলিত হন না।
যুদ্ধের ময়দানে পরাজিতদের পক্ষে কেউ থাকে না। রাশিয়া ও মিসর হাফতারকে জেতার জন্য সহায়তা দিয়েছে কিন্তু পিছু হটে যাওয়ায় নিজেদের ছক মতোই চাল দেবে এটাই স্বাভাবিক। হাফতারের দলে উচ্চাভিলাষী ফাতিহ বক্স ও পূর্ব লিবিয়ায় রাজনৈতিক ব্যক্তি আগুইলা সালেহ রয়েছেন। স্থানীয়ভাবে সালেহ জনপ্রিয়। বিদেশী বাহিনী হাফতারের সাথে এদেরও ভালো মূল্যায়ন করেন। হাফতারের পরাজয়ে এই দু’জন নেতৃত্বে চলে আসতে পারেন।
জেনারেল খলিফা হাফতার বাহিনীর পক্ষে যুদ্ধরত রাশিয়ার বেসরকারি সামরিক সংস্থা ওয়াগনার গ্রুপের ১৬০০ সৈন্য ২৫ মে ২০২০ রণক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেছে। ত্রিপোলি দখলের জন্য পুতিন এসব সৈন্য পাঠিয়েছিলেন। দক্ষিণ লিবিয়ার বানি ওয়ালিদ বিমানবন্দর থেকে মিলিটারি কার্গো বিমানের মাধ্যমে সেনাদের সরিয়ে নেয়া হয়।
যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ সৃষ্টি হওয়ায় হাফতারকে উপকূলীয় শহর সির্তে ও জুফরা অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করার শর্ত আরোপ করেছে লিবিয়ার জিএনএ সরকার। ৮ জুন সোমবার থেকে শুরু হওয়া সিসির একতরফা অস্ত্রবিরতি ও সব আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে মিসর। এ সময়ে সিসির পাশে ছিলেন হাফতার। সিসি বলেন, এ ঘোষণায় লিবিয়ার সব অঞ্চল থেকে বিদেশী ভাড়াটে সৈন্য প্রত্যাহার, মিলিশিয়াগুলো ভেঙে দেয়া ও তাদের অস্ত্র হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ দিকে সিসির ঘোষণার এ সময়ে আল ওয়াশাকা, আবু হাদি, সির্তে ও আল জুফরাসহ দেশটির উপকূলের বিভিন্ন শহরকে মুক্ত করার জন্য একটি অভিযান শুরু করেছে লিবিয়ার সরকারি সেনাবাহিনী। জিএনএ বাহিনীর মুখপাত্র মোহাম্মদ গুনুনু সিসির প্রস্তাবে ঠাণ্ডা পানি ঢেলে বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করার সময় ও স্থান আমরাই বেছে নেবো। হাফতারের আর সুযোগ নেই ত্রিপোলি অভিমুখে যুদ্ধের জন্য যাত্রা করা। তাই শান্তি প্রস্তাবের কার্ড তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হাফতারকে সিআইএ বহু বছর ধরে পুরিপুষ্ট করেছে এই কাজের জন্য। এখন লিবিয়া উপকূল অঞ্চলে হাফতার বাহিনী তৃতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন। অপর দু’টি হলো দায়েশ বা আইএস এবং কুর্দিস্থান ওয়ারকার পার্টি বা পিকেকে। হাফতার নিয়মিত মিসর চ্যানেল দিয়ে উল্লিখিত দেশগুলো থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ ও নগদ অর্থ পেয়ে থাকেন। বিনিময়ে দখল করা তেলকূপ থেকে তেল সরবরাহ করেন। এর মধ্যে আমিরাত লিবিয়ায় বিমানবাহিনীর বিমান ও বৈমানিক পাঠিয়েছে। সিরিয়ায় পিকেকে সমর্থিত ওয়াইপিজি যেভাবে অস্ত্র গোলা বারুদ পেত ঠিক সেভাবে হাফতার লিবিয়ায় পরিপুষ্ট হচ্ছে।
তুরস্কের সেনাবাহিনীর শত শত কনভয় এখন ত্রিপোলিতে রয়েছে। হাফতারের গতিরোধ করার জন্য লিবিয়া সরকার এতদিন তুরস্কের সহায়তার জন্য বসে ছিল। বর্ম ধ্বংস করার উপযোগী মিসাইল সেনা কনভয়ের আগেই পাঠিয়ে দেয়া হয়। আমরা দেখেছি মাত্র সাত দিনের মধ্যে সিরিয়ায় তুর্কি বাহিনী যুদ্ধের গতিবিধি বদলে দিয়েছিল, যা বহু দিন ধরে চলছিল। তুর্কিদের আগমনে লিবিয়াতেও যুদ্ধের গতি ফিরে গেল। বিরোধ শেষ হলেই তুরস্ক জ্বালানি ও নির্মাণ সংক্রান্ত নতুন চুক্তি নিয়ে লিবিয়ার সরকারের প্রতি সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলবে। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এ কথা বলেছেন। যুদ্ধ শেষ হলে তুরস্ক অন্যান্য ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে যেমন রাস্তা, সেতু, হাসপাতাল, হোটেল, আবাসন ইত্যাদি। তুরস্ক বারবার হাফতারের সমর্থক রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরকে তাদের সমর্থন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছে। এরদোগান বলেছেন, ‘হাফতারের সময় শেষ।’
লিবিয়ার সরকার হাফতারের কাছে থেকে একের পর এক জায়গা দখল করে নিয়েছে। আল ওয়াতিয়া বেস যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ১৯৪০ সালে নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। তার দখল নেয় তুর্কি সেনারা ভলকেনো অপারেশন চালিয়ে। এখন অবস্থা এই পর্যায়ে যে রাশিয়া, আমিরাত, সৌদি আরব ও মিসর ছাড়াও ফ্রান্স, গ্রিস এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও যদি লিবিয়ার ময়দানে নামে তারাও পরাজয়বরণ করবে। সঠিক সময়ে তুর্কি সামরিক বাহিনী লিবিয়ায় চলে আসে এবং যুদ্ধ কৌশল নির্ণয় করে। হাফতার ও মিসরের হাতে রাশিয়ার পানশির এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেয়া সত্ত্বেও কোনো সফলতা আসেনি। তুরস্কের ড্রোন অনবরত আক্রমণ চালিয়েছে। রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা আক্ষেপ করছেন এই বলে যে, আরবিতে লেখা নির্দেশনা সত্ত্বেও কিভাবে এই পুরো সিস্টেম অকার্যকর হলো তা বোধগম্য নয়। লিবিয়ার বৈধ সরকার ২৫ মার্চ পিস স্ট্রম অপারেশন শুরু করেছিল, তুর্কিদের আগমনে মাত্র ২০ দিনে যুদ্ধের পরিস্থিতি উল্টে যায়, হাফতারকে পিছু হটতে হয়।
মিসরের প্রেসিডেন্ট সিসি হুঙ্কার ছেড়ে বলেন, তুর্কিদের মদদপুষ্ট লিবিয়ার সরকার বাহিনী সির্তে প্রবেশ করলে মিসরের সেনাবাহিনী যুদ্ধে নামবে। তিনি জানান মিসরের জন্য সির্তে রেড লাইন। লিবিয়ার সরকার বলেছে, তাদের সীমানার ভেতর কিসের রেড লাইন? সিসি বলেন, লিবিয়ার জনগণ (হাফতারের সমর্থক) যদি চায় মিসর যুদ্ধে নামুক তবে তাদের সহায়তায় মিসর যুদ্ধে নামবে। লিবিয়ার সরকার বলেছে, তেমনটি হলে সার্বভৌমত্বের আঘাত হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তুরস্ক বলেছে, যুদ্ধবিরতির জন্য আল জুফরা ও সির্তে থেকে হাফতার বাহিনী ও সমর্থক গোষ্ঠীকে সরে যেতে হবে। সির্তে রাজধানী থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত শহর। যুদ্ধে বেগতিক অবস্থা দেখে সিসি অনেক আগে একবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু লিবিয়ার জিএনএ সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে।
গাদ্দাফি হত্যার পর লিবিয়া জুলুমবাজির চারণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়। উপজাতি মিলিশিয়া, জিহাদি, ভাড়াটে সেন্যদের খুদে রণক্ষেত্র পুরো লিবিয়া। মুসলিম ব্রাদারহুডও রয়েছে প্রচুর। মূলত এদেরই ভয় বেশি সিসি সরকারের। মিসরে দমন পীড়নের কারণে দেশ ছেড়ে অনেকে লিবিয়ায় আশ্রয় নেয়। সিসি অভিযোগ করে জানায়, বিদেশী শক্তি লিবিয়ার চরমপন্থী ভাড়াটে যোদ্ধাদের সহায়তা দিচ্ছে। সিসির লিবিয়া আক্রমণের আপাতত দু’টি উদ্দেশ্য, লিবিয়াকে পূর্ব-পশ্চিম দুই ভাগে ভাগ করে ন্যূনপক্ষে হাফতারকে পূর্ব দিকে বসানো এবং ত্রিপোলি আক্রমণ করে ব্রাদারহুড কর্মীদের খুঁজে বের করা। সিসি আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে প্রচুর আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন, তারাও চায় না লিবিয়ায় ব্রাদারহুড বা ব্রাদারহুড সমর্থিত কোনো সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। মিসর এখন তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করার মতো অবস্থানে নেই। সির্তে গাদ্দাফির জন্মস্থান, কৌশলগত ও অনেক তেলকূপে ভরা। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পরপর সিসি বড় সামরিক হার্ডওয়ার যেখানে ১৮টি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আবরামস ব্যাটাল ট্যাংক ও ওএমআই-২৫ হলিকপ্টার গানশিপ রয়েছে সেসব প্রস্তুত রেখেছেন।
সেনাবাহিনী লিবিয়া সীমান্তে এখন অবস্থান করছে। সম্প্রতি ‘কায়রো ডিকলারেশনে’ লিবিয়া থেকে সব বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারেরও প্রস্তাব করেছেন। তিনি তুর্কি সেনাদের লক্ষ্য করেই ঘোষণা দিয়েছেন। প্রস্তাবে মিলিশিয়াদের ভেঙে দিয়ে অস্ত্র সমর্পণের কথা বলা হয়েছে। সিসির মনে রাখা দরকার যে, লিবিয়ার মিলিশিয়ারা, আইএস বাহিনী ও ব্রাদারহুড কেউ তার কথা শুনবে না। ডিকটেটরদের এটাই ভুল যে, তারা মনে করেন আদেশ দিলেই সব হয়ে যায়।
লিবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য মিসর শুরু থেকে ট্যাংক, ফাইটার জেট, হেলিকপ্টার, এসরটেট অ্যামুনিশন দিচ্ছে জাতিসঙ্ঘের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও। হাফতার পলায়ন করায় মিসর যেকোনো সময় সরাসরি যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারে। কেননা সিসির কোনো লক্ষ্যই অর্জিত হয়নি। ২০১৫ সাল থেকে লিবিয়ার ডেরমায় আইএসের বড় ঘাঁটি রয়েছে। সিসি কোনোভাবেই শান্তি পাবেন না এদের ভয়ে। লিবিয়া ক্রাইসিসের চেয়ে আইএস, ব্রাদারহুড ও সুদানের জঙ্গিবাহিনী সিসির জন্য ভয়াবহ বিষয়।
জানা গেছে, আমিরাত ও মিসর হাফতারের পরিবর্তে অন্য কোনো জেনারেলের খোঁজে আছেন। রাশিয়া ও ফ্রান্স অসন্তোষের ভেতর রয়েছে কেননা হাফতার Skhirat Agreement ভঙ্গ করে নিজেকে লিবিয়ার শাসক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। হাফতারের মুখপাত্র আহমদ আল মিসমারী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘কোনো তুর্কি আমাদের ত্রিপোলি অগ্রযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না।’ মনে পড়ে ইরাক যখন প্রায় অবরুদ্ধ ও অধিকৃত তখন সাদ্দাম হোসেন টিভিতে তার বিজয়ের কথা বলেছিলেন। আরব বিশ্বে এ রকম রসিকতার অনেক উদাহরণ রয়েছে।
রাজনৈতিক টেবিলেও হাফতারের গোঁয়ার্তুমি তাকে বন্ধুহারা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে হাফতার জার্মানিতে থাকা সত্ত্বেও ‘বার্লিন কনফারেন্সে’ যোগদান করেননি, তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অস্ত্রবিরতির ডাককে উপেক্ষা করে এখন মিসরের অস্ত্রবিরতির কায়রো ডিকলারেশন বাস্তবায়নের ডাক দিচ্ছেন। তিনি ত্রিপোলির উপকণ্ঠে যোদ্ধাদের পরিবর্তে সিভিলিয়ানদের হত্যা করেছেন। এ পর্যন্ত লিবিয়া যুদ্ধে হাজারো প্রাণ হারিয়েছে এবং দুই লাখ গৃহহীন হয়েছে। এখন হাফতার ও সিসি দুই ডিকটেটর অস্ত্রবিরতির ঢালে মুখ ঢাকতে চাইছেন।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার