গলায় কাঁটা ফুটলে কী করবেন?
গলায় কাঁটা ফুটলে কী করবেন? - ছবি : সংগৃহীত
দুর্ঘটনা আগাম খবর দিয়ে আসে না। এই কারণেই বোধহয় খাদ্য রসিক বাঙালির গলায় মাছের কাঁটা আটকে যাওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে। রোগী চরম কষ্ট পান। অথচ বহু ক্ষেত্রেই রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু দিতে পারলেই হয়তো রোগীর কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়, প্রাণও বাঁচে।
গলায় কাঁটা ঢুকলে
গলায় কাঁটা ফুটলে, যতক্ষণ না বের হচ্ছে, ততক্ষণ খাবার খেতেই পারা যায় না। ঢোক গিলতেও কষ্ট হয়। কিছু ক্ষেত্রে কানেও ব্যথা হয়। এক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে কলা খাওয়া বা ভাত-রুটির শক্ত মণ্ড বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। গলায় ছোটখাট হাড়ের কুচি আটকালেও একই পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে। এভাবে কাজ হলে ঠিক আছে, না হলে এবং ক্রমাগত ব্যথা বাড়তে থাকলে ইএনটি বিশেষজ্ঞের কাছে যেতেই হবে। না হলে কাঁটা বা হাড় শ্বাসনালী বা খাদ্যনালীতে ঢুকে গিয়ে বিপদ ঘটাতে পারে। হাসপাতাল হোক বা ব্যক্তিগত চেম্বার, ডাক্তাররা সকলেই পিপিই পরে চিকিৎসা করছেন। যন্ত্রপাতি কঠোর নিয়ম মেনে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। ফলে ভয়ের কিছু নেই।
কানে কিছু ঢুকে গেলে
কানে যেহেতু একটি পর্দা থাকে, সেই কারণে বাইরের কোনো বস্তু কর্ণগহ্বরে ঢুকলেও বেশি দূর যেতে পারে না। আমাদের কর্ণগহ্বরের গভীরতা ২৪ মিলিমিটার। ফলে গহ্বরের মধ্যেই সেই বস্তুটি রয়ে যায়। অতএব সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করতে পারলে বাইরের যেকোনো বস্তু কানের বিরাট ক্ষতি করতে পারে না। কানে কিছু ঢুকলে ঘাড় কাত করে রাখলে যদি বস্তুটি বেরিয়ে আসে ভালো, না হলে আতঙ্কিত হবেন না। চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি ঠিক বের করে দেবেন।
নাকের ভিতরে কিছু ঢুকলে
নাকের ভিতরে সাধারণত বাচ্চারাই বাইরের বস্তু ঢুকিয়ে ফেলে। সেটা যেকোনো গোল আকৃতির জিনিস, পুঁতি, খেলনা বা খেলনার ভাঙা টুকরোর মতো বস্তু হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে পুঁতি বা ছোট শোলার টুকরো নাকের কাছে নিয়ে গেলে শ্বাসের টানে তা ভেতরে ঢুকে যায়। যেহেতু এখন সময় খুব খারাপ, অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে অভিভাবকদের। বাচ্চাদের খেলার সময় একটু বড় ধরনের খেলনা দিতে হবে, যা নাকে বা কানে ঢোকানো সম্ভব নয়।
আরো একটি সমস্যা হলো, নাক খুঁটে রক্ত বের করে ফেলা। মূলত সর্দি জমে নাকের ভেতর শুকনো বোধ হয়। তাই বাচ্চারা নাক খোঁটে। সতর্ক থাকতে হবে এ বিষয়েও। রক্তপাত হলে বাচ্চাকে শোওয়াবেন না। বসিয়ে রাখুন। সঙ্গে মাথাটা একটু ঝুঁকিয়ে দিতে হবে, যাতে রক্ত নাক থেকে নিচের দিকেই নামে। অন্য কোথায় চলে গিয়ে বিপদ না ঘটায়। এছাড়া নাকের পাটার উপরের অংশ অল্প কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখলেও, রক্ত অনেক সময় বন্ধ হয়ে যায়। এই সব করে কোনো কাজ না হলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে বাচ্চাকে।
* পরামর্শে পিয়ারলেস হসপিটাল অ্যান্ড বি কে রয় রিসার্চ সেন্টারের বিশিষ্ট ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ দুলাল বসু
সূত্র : বর্তমান