করোনা কেন এখনো অপ্রতিরোধ্য?
করোনাভাইরাস - ছবি : সংগৃহীত
অন্তত পাঁচ বছর লাগবে নতুন করোনাভাইরাসের বিদায় নিতে। রোগ ভোগের পরও অনাক্রম্যতায় রকমভেদ থাকবে। অ্যান্টিবডির স্থায়িত্বের উপর নির্ভর করবে হার্ড ইমিউনিটি। ২০২২ সাল পর্যন্ত শারীরিক দূরত্ব মানতেই হবে— ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় এমন মতই প্রকাশ করলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিয়োলজির অধ্যাপক মার্ক লিপস্টিক। শুরুতে চীনে দু’রকমের করোনা সংক্রমণ ছিল— ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে নতুন এল টাইপ ও বাকিদের সাধারণ পুরনো এস টাইপ। তার পর মাসে দু’বার করে পরিবর্তিত হয়ে ভিন্নরূপে বিশ্বকে আক্রান্ত করেছে। বেলজিয়ামের বেড়াল থেকে নিউইয়র্কের বাঘও করোনা-আক্রান্ত। ভাইরাস জীব না জড়, একটা ধাঁধা। মার্কিন বিজ্ঞানী গুস্তাভো সিটানো আনোলিস সেই ধাঁধার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন।
স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকা এক ধরনের কোষ থেকেই ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়ার জন্ম। প্রায় ৩৫০ কোটি বছর আগে শুরুটা একসঙ্গে করার পর ব্যাকটিরিয়ারা নিজেদের ক্রমশ জটিল করে তুলতে আরম্ভ করে আর ভাইরাসের জিনগুলো অব্যবহারে নিষ্ক্রিয় হয়। ১৫০ কোটি বছর আগে প্রাণিকোষে প্রবেশ করা যাবে এমন প্রোটিনে সজ্জিত হয় ভাইরাস। করোনা পরিবারের সার্স ও মার্সের সংক্রমণ পদ্ধতি আগেভাগে আঁচ করে আটকে রাখা সম্ভব হয়েছিল। নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চরিত্র এখনও রহস্য। প্রায় প্রতি দিনই নতুন করে জানা, চেনা।
করোনা আলফা, বিটা, গামা ও ডেল্টা— এই চারটি গণে করোনাভাইরাসের শ্রেণিবিন্যাস। আলফা ও বিটা করোনা বাদুড়, ইঁদুর ও মানুষের মধ্যে মেলে, ডেল্টা আর গামা মূলত শুয়োর ও পাখিদের মধ্যে। এনএল৬৩, ২২৯ই এবং ওসি৪৩ করোনা পরিবারের সদস্যরা মামুলি ঠান্ডা লাগার কারণ। এই করোনাভাইরাসগুলো নিজেদের বংশবৃদ্ধির জন্য মানুষকে অসুস্থ করতে চেয়েছে, কিন্তু মারতে চায়নি। সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম ও মিডিল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম, নোভেল করোনা, সেই ভাইরাসের নৃশংস রূপ। ২০০২ সালে সার্স করোনাভাইরাস চিনের হুবেই থেকে ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী আট হাজার মানুষকে আক্রান্ত করেছিল। মৃত্যু হয়েছিল ৭৭০ জনের। মৃত্যুহার ছিল প্রায় ১০ শতাংশ। মার্স ২০১২ সালে সৌদি আরব থেকে ছড়িয়েছিল। উটের গোশত, দুধ অথবা উটের পরিচর্যার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন থেকেই প্রথম সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ছিল ৩৪ শতাংশ। নোভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রথম রোগীর খোঁজ মেলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। উহানের সামুদ্রিক খাদ্যবাজারের এক চিংড়ি ব্যবসায়ীর দেহেই সম্ভবত প্রথম ভাইরাসের উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। প্রথম দিককার আক্রান্ত মানুষদের দেহেই ভাইরাসগুলো নিজেদের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সেরে ফেলেছিল। এই পরিবর্তনের বেশির ভাগটাই ভাইরাসের জিনের মিউটেশনের ফলে ঘটে। মিউটেশন বিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি।
২০১৬ সালে সাংহাই স্কুল অব লাইফ সায়েন্স-এর গবেষক শুন কু ও তার দল গবেষণা করে দেখালেন মার্স করোনাভাইরাস-এর ক্ষেত্রে অন্তত চারটি প্রোটিন উট ও মানুষের সংক্রমণের জন্য বিশেষ ভাবে নির্বাচিত। রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াদ মেমিশ সময়ের একটা হিসেব দিলেন। মার্স করোনাভাইরাস বাদুড় থেকে উটে আসতে শুরু করেছিল সম্ভবত ১৯৯০-এর শুরুর দিকে। উটের দেহ থেকে মানুষের দেহে ঝাঁপানোর প্রস্তুতি নিয়েছে ২০০৭ থেকে ২০১২। সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে মিউটেশনের হার স্থিতিশীল। ভ্যাকসিন তৈরির জন্য এই মিউটেশনের হার খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঘন ঘন বদলে যাওয়া ভাইরাসগুলোর ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন তৈরি বেশ কষ্টসাধ্য। ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও বি ভাইরাসের সম্ভাব্য পরিবর্তন ধরে আমেরিকায় প্রতি বছর নতুন করে ভ্যাকসিন তৈরি হয়। গুটি বসন্তের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন তিন থেকে পাঁচ বছর ধরে কার্যক্ষম থাকে। অন্য দিকে, ভাইরাস ইবোলা এতটাই ভয়ঙ্কর যে গবেষণা করার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের গ্রেড ফোর বায়োসেফটি প্রয়োজন হয়। দীর্ঘ গবেষণার পর অর্থ এবং বিরল বৈজ্ঞানিক প্রতিভার মেলবন্ধনে ইবোলা ভ্যাকসিন আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে। নতুন করোনাভাইরাসের প্রোটিনের সামান্য পরিবর্তন ঘটলেও যতটুকু ঘটেছে, তা বেশ জটিল। শুধু প্রোটিন নয়, সঙ্গে রয়েছে শর্করা অণুর বাঁধনের রকমফের। ফলে নতুন করোনাভাইরাসের মিউটেশনের রকমসকম বুঝে ওঠা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। তা হলে, ভাইরাস প্রতিরোধের কোনও হাতিয়ার কি আমাদের নেই? পঞ্চাশের দশকে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য আমাদের অস্ত্র হতে পারে ইন্টারফেরন।
১৯৫৭ সালে সুইস বিজ্ঞানী জেন লিন্ডেনম্যান এবং আলিক ইসাকের গবেষণা থেকে প্রথম জানা যায় ইন্টারফেরনের অস্তিত্বের কথা। ১৯৮৭ সালে, আবিষ্কারের ৩০ বছর পূর্তিতে জার্নাল অব ইন্টারফেরন রিসার্চের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। জার্নালের প্রধান সম্পাদক চার্লস উইসম্যান লেখেন লিন্ডেনম্যানদের কৃতিত্বের কথা ও আবিষ্কারের গুরুত্ব। উল্লেখ্য, ইন্টারফেরন বিষয়ক গবেষণার সূত্রপাত আরও একটি ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে— স্মল পক্স বা গুটি বসন্ত। প্রথমে ইন্টারফেরনকে ভাইরাস ইনহিবিটিং ফ্যাক্টর বা ভিআইএফ নামে ডাকা হত। ইন্টারফেরন অবশ্য সরাসরি ভাইরাসের বংশবৃদ্ধিতে বাধা দেয় না, বরং ভাইরাস-আক্রান্ত কোষগুলো থেকে ইন্টারফেরন নির্গত হয়, যা পাশের কোষগুলোকে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচায়। এ ছাড়াও ইন্টারফেরন কোষগুলোকে এমন কিছু বিশেষ প্রোটিন ক্ষরণে সাহায্য করে, যা ভাইরাসের প্রাণিকোষে প্রবেশ করার ক্ষমতা কমায় ও রেপ্লিকেশন পদ্ধতিতে নিজেদের সংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়াকে আটকায়। এ দিকে করোনা ও আরো কিছু ভাইরাস ইন্টারফেরন থেকে বাঁচার উপায়ও খুঁজে বের করেছে। ভাইরাসেরাও নতুন কিছু প্রোটিন তৈরি করে নিজেদের সুরক্ষিত করছে। এখন ভাইরাসের পরিবর্তনের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না ইন্টারফেরন। ইন্টারফেরনের তীব্র আক্রমণ সহ্য করেও মার্স, সার্স, নোভেল করোনা, ইবোলা, নিপা ভাইরাস বাদুড়ের দেহে বেড়ে উঠতে পারে। বেশির ভাগ ভাইরাসের আঁতুড়ঘর বাদুড়।
ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলের কারা ব্রুক ও মাইক বুটের গবেষণায় উঠে এসেছে বাদুড়ের দেহে ভাইরাসের করুণ কাহিনি। বাদুড়ের দেহে ভাইরাস প্রবেশের সঙ্গেই ইন্টারফেরনের ঝড় ওঠে। সেই ঝড় আশপাশের সমস্ত কোষগুলোকে দাবানলের মতো নষ্ট করে। কী ভাবে? ইন্টারফেরনের অনেক কাজের মধ্যে অন্যতম হল দেহের ইমিউন সিস্টেমের অন্তর্গত কোষগুলোকে লেলিয়ে দেওয়া। এই কোষগুলো অন্ধের মতো সংক্রমিত কোষ-সহ অন্য কোষকেও ধ্বংস করে। ইন্টারফেরন ঝড় থেকে বাঁচতে ভাইরাসগুলো কয়েকটা বিশেষ কোষে লুকোতে চেষ্টা করে। ঝড় কমলে পার্শ্ববর্তী কোষগুলোকে আক্রান্ত করে। এ ভাবেই ভাইরাসগুলো বাদুড়ের ইমিউনিটি থেকে বাঁচতে এক কোষ থেকে অন্য কোষে পালিয়ে বেড়ায়। পালাতে গিয়েই এরা উট, ইঁদুর, শুয়োর, গন্ধগোকুল, সাপের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আর তার পর আরও একটা লাফে সোজা মানুষে। এই ঘটনাকে বলা হয় জুনোটিক ট্রান্সফার। এ ভাবেই এক প্রাণীর দেহ থেকে আর এক প্রাণীতে ও শেষে মানুষের দেহে প্রবেশ করে ভাইরাস। এই সংক্রমণের উত্তরে মানুষও কিছু পরিকল্পনা করেছে, সেগুলো ভাইরাসের গঠন এবং চরিত্রের উপর নির্ভর করে এক-এক রকম। এই পরিকল্পনার তিনটি ধাপ— জনস্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন, আক্রান্ত হলে রোগ সারাতে ওষুধের সন্ধান ও সংক্রমণ ঠেকাতে ভ্যাকসিন তৈরি।
জনস্বাস্থ্য নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরোধের প্রথম পন্থা হলো সংক্রমণকে স্থানীয় ভাবে আবদ্ধ রাখা ও সংক্রমণ-শৃঙ্খল ভেঙে ফেলা। শুরুতেই সার্স, মার্সকে স্থানীয় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেই সম্ভব হয়েছিল সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়া। সার্স আমাদের কতগুলো মূল্যবান শিক্ষা দিয়েছিল। সার্স শিখিয়েছিল, তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে ও তথ্যের আদানপ্রদান দ্রুত করতে হবে। একুশ শতকের বিজ্ঞান এবং ওষুধ সার্সের ক্ষেত্রে বিশেষ কাজে আসেনি। উনিশ শতকের পন্থা কাজে লাগিয়ে সংক্রমণকে স্থানীয় ভাবে আবদ্ধ করা গিয়েছিল। সার্স চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিল, বন্যপ্রাণীর বাজারগুলোর অস্বাস্থ্যকর অবস্থা এবং নির্বিচারে বন্যপ্রাণীদের খাবারের প্লেটে নিয়ে আসতে গিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণের পথ খুলে যাচ্ছে। আমরা ভাইরাসের উপসর্গের চিকিৎসায় ব্যস্ত, আড়ালে থেকে যাচ্ছে কারণ। সার্সের থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগিয়ে মার্সকে পশ্চিম এশিয়াতেই সীমাবদ্ধ করে রাখা গিয়েছিল। সংক্রমণের গতি আবদ্ধ রাখতে সফল হওয়ার কারণেই, সার্স ও মার্স-এর ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু হলেও পরে তা গতি হারায়। সার্স-এর ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন বিজ্ঞানীরা নাসারন্ধ্রে প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৯১৮ সালের সংক্রামক সোয়াইন ফ্লু এইচওয়ানএনওয়ান ২০০৯ সালে আমেরিকায় ১২ হাজার মৃত্যু ঘটিয়ে মহামারি হিসেবে ফিরে এসেছিল। নামে এইচওয়ানএনওয়ান হলেও সেই ভাইরাস শুয়োর, পাখি ও মানুষের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের জিনোম মিশিয়ে তৈরি। আজ সেই ভাইরাস শক্তি হারিয়ে নিতান্ত নিরীহ হয়ে আমাদের চারপাশেই আছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সঙ্গে আমেরিকানরা এই এইচওয়ানএনওয়ান ভাইরাসের ভ্যাকসিনও নেন। তবে করোনা মোকাবিলায় প্রাথমিক ভাবে এই শিক্ষার প্রয়োগ হয়নি।
২০১৯-এর ডিসেম্বরের শেষে নোভেল করোনাভাইরাসের প্রথম খবর দিতে চেয়েছিলেন চিনের উহানের চোখের ডাক্তার হুইসেল ব্লোয়ার লি। থানায় ডাক পড়েছিল রোগের গুজব ছড়ানোর জন্য, মুচলেকা দিয়ে সে যাত্রায় মুক্তি পেয়েছিলেন লি। তত দিনে হংকং থেকেও সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি প্রকাশ পেয়েছিল। জানুয়ারির শেষে লি নিজেই করোনা-আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে লিখলেন, কেন এখনও বলা হচ্ছে না মানুষে মানুষে সংক্রমিত হয় এই ভাইরাস। তত দিনে বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে মারা গেলেন লি।
আমেরিকার বিজ্ঞানীরাও চীনে প্রবেশের অনুমতি পাননি। নতুন করোনা একের পর এক দেশকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেছে। সার্স থেকে নেয়া শিক্ষা, তথ্যের স্বচ্ছতাও রাখা যায়নি। তার পর অকল্পনীয় গতিতে ভাইরাসের জিনোম মানচিত্র অনুসারে তৈরি হয়েছে ভ্যাকসিন তৈরির ব্লুপ্রিন্ট। অন্তত ৩৫টি ওষুধ কোম্পানি ও রিসার্চ সংস্থা ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে। প্রথাগত পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন পথ। কখনো কাজে লাগানো হচ্ছে ব্যাকটিরিয়াকে, আবার কখনো বার্তাবাহক রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিডকে কাজে লাগিয়ে জিন থেরাপির চেষ্টাও জারি। আজ হুবেই থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে অতিমারি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বের ফাঁক দিয়ে করোনা বিশ্ব সংক্রমণ ঘটিয়েছে, সেই সঙ্গে চীনের ভূমিকাও বিজ্ঞানকে বিভ্রান্ত করেছে। সংক্রমণের কারণ ও মাধ্যম নিয়ে বিজ্ঞানীরা আজও দ্বন্দ্বে। ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ভারতে সংক্রমণের তীব্রতার ফারাক জাগিয়ে তুলেছে একাধিক নতুন প্রশ্ন। সংক্রমণ ছড়ানোয় কি প্রকৃতির ভূমিকা রয়েছে? না ভারতীয়দের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অপেক্ষাকৃত বেশি? উত্তর অজানা। পঁচাত্তর হাজার মৃত্যুর পর, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষে ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স-এর অধ্যাপক হার্ভে ফাইনবার্গ বলছেন হাঁচি-কাশি তো বটেই, কথা বললেও এমনকি নিঃশ্বাসেও এই ভাইরাস ছড়ায়। জুলাইয়ের গোড়াতে ৩২টি দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে খোলা চিঠি দিয়ে জানান করোনাভাইরাসের বাতাসে ভেসে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কার কথা। শুধুমাত্র হাঁচি বা কাশির সময় সৃষ্ট বড় ড্রপলেটস বা জলকণা নয়, করোনা ভেসে বেড়াতে পারে চোখে দেখা যায় না এমন ছোট ড্রপলেটস-এ ভর করেও। তাই আঁটোসাঁটো জনস্বাস্থ্য বিধি প্রণয়ন করেই করোনার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে হবে। তবেই রোখা যাবে নতুন সংক্রমণ। সার্স থেকে নেওয়া শিক্ষা প্রয়োগ করার মাধ্যমে, ভাইরাসের সংক্রমণের উৎসমুখ খুঁজে ভবিষ্যতের সংক্রমণের রাস্তা বন্ধ করতে হবে।
বিজ্ঞানীদের আগে থেকেই ধারণা ছিল ফ্লু ভাইরাস পরবর্তী মহামারির কারণ হতে পারে। গবেষণার অভিমুখ সে দিকেই ছিল। করোনার আক্রমণ অতর্কিত। শক্তি হারিয়ে করোনাভাইরাস যদি আমাদের সঙ্গে থেকেও যায়, সে ক্ষেত্রে সে এইচওয়ানএনওয়ান-এর মতো সাধারণ মরশুমি আক্রমণে পরিণত হবে। তত দিনে ভ্যাকসিনও বাজারে এসে যাবে আশা করা যায়।
আশা ভাইরাসের থেকে দ্রুত সংক্রমিত হয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা