চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Jul 15, 2020 09:23 am
চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি - ছবি : সংগৃহীত

 

দক্ষিণ চীন সাগরের একটি অংশের উপকূল থেকে চীনের সম্পদ সংগ্রহের চেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, তিনি স্পষ্ট করে বলতে চান বিরোধপূর্ণ নৌসীমার ‘নিয়ন্ত্রণ নিতে চীনের উসকানিমূলক প্রচারণা’ ভুল। গত সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এই অভিযোগ করেছেন। 

দক্ষিণ চীন সমুদ্রের বিশাল একটি অংশ নিজেদের বলে দাবি করে চীন। সেখানে একটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে বেইজিং। তবে তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামও ওই দ্বীপের এলাকাটির দাবি করছে। কয়েক শতাব্দি ধরেই ওই এলাকাটি নিয়ে এসব দেশের বিরোধ চলছে।

তবে গত কয়েক বছরে এই উত্তেজনা বেড়েছে। ‘নাইন-ড্যাশ লাইন’ নামে একটি এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে বেইজিং। আর দ্বীপ তৈরি, টহল এবং সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে ওই দাবি জোরালো করছে। বিরোধপূর্ণ এ সামুদ্রিক এলাকায় বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ আছে। নৌসীমাটি মৎস্য শিকার ও বাণিজ্যিক জলযান চলাচলের ক্ষেত্রেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের উৎস, হংকং ও শিংজিয়ানে চীনের ‘নিপীড়ন’, বাণিজ্য চুক্তি ও তাইওয়ান নিয়ে বেইজিং-ওয়াশিংটনের টানাপড়েনের মধ্যেই সোমবার মার্কিন প্রশাসন দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে তাদের দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করল।

ওই দিন এক বিবৃতিতে বিরোধপূর্ণ এলাকায় দ্বীপটির প্রতি চীনের দাবির নিন্দা জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ওই অঞ্চলে এককভাবে নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দেয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি বেইজিংয়ের নেই। যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকে বলে আসছে আঞ্চলিক বিরোধে কোনো পক্ষ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে সোমবারের বিবৃতিতে মাইক পম্পেও বেইজিংয়ের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ওই অঞ্চলে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার দাবি রয়েছে। তিনি বলেন, এসব সমুদ্র সীমায় অন্য কোনো রাষ্ট্রের মৎস্য আহরণ কিংবা হাইড্রোকার্বন উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটাতে চীনের যে কোনো কর্মকাণ্ড কিংবা এই ধরনের কর্মকাণ্ড এককভাবে এগিয়ে নেয়া হবে বেআইনি। পম্পেও বলেন, দক্ষিণ চীন সমুদ্রকে নিজেদের সামুদ্রিক সাম্রাজ্য হিসেবে বেইজিংকে বিবেচনা করতে দেবে না বিশ্ব।

এ দিকে দক্ষিণ চীনা সাগর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চীন বলেছে, এটা ‘একেবারেই অযৌক্তিক’। দক্ষিণ চীন সাগরে নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করতে গিয়ে চীন অন্য কয়েকটি দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করছে, এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছিল মার্কিন বিদেশ দফতরের এক বিবৃতিতে। তার জবাবে মঙ্গলবার আমেরিকায় চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিরোধে যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই সরাসরি জড়িত নয়। তা সত্ত্বেও এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে চলেছে।

চীনা দূতাবাসের বিবৃতিতে দক্ষিণ চীন সাগরে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের পেশিশক্তি প্রদর্শনেরও কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি স্থাপনের অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র আদতে পেশিশক্তি প্রদর্শন করছে, করে চলেছে। এতে দক্ষিণ চীন সাগর এলাকায় নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। তা ওই এলাকার দেশগুলোর মধ্যে বিরোধকে আরো উসকে দিচ্ছে। চীন তাদের শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে অভিযোগ করে ওয়াশিংটন সম্প্রতি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) এক পলিটব্যুরো সদস্যসহ চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর পাল্টায় চীনও পরে দুই মার্কিন সিনেটরসহ যুক্তরাষ্ট্রের চারজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জুলাইয়ের শুরুতে প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের আশপাশে চীনের মহড়ার সময়ই যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে দু’টি বিমানবাহী রণতরী ও চারটি যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করে সেগুলো দিয়ে মহড়া চালিয়েছে। সম্প্রতি জাপানের বার্ষিক প্রতিরক্ষা মূল্যায়ণে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের নৌ-তৎপরতাকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ অ্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। চীন দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরের স্থিতিশীল অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us