চীনের দাদাগিরিতে ভারত-ইরান সম্পর্কে ফাটল!

চীনের দাদাগিরিতে ভারত-ইরান সম্পর্কে ফাটল! - ছবি : সংগৃহীত
অবশেষে ঐতিহাসিক সম্পর্কে ফাটল ধরল। নেপথ্যে সেই চীন! ভারতীয় বিশ্লেষকদের মতে, কার্যত বেইজিংয়ের চাপেই ইরানের চাবাহার বন্দরে বড় মাপের এক রেলপ্রকল্প থেকে ভারতকে সরিয়ে দিয়েছে ইরান। জানা গেছে, চীনের সঙ্গে ইরানের সম্প্রতি ৪০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, চাবাহার বন্দরকে চীন ব্যবহার করবে শুল্কমুক্ত ব্যবসায়িক অঞ্চল হিসেবে। তৈরি করা হবে আধুনিক তৈল শোধনাগারও।
চাবাহার বন্দর থেকে আফগানিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত যাওয়া রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল ভারতীয় রেলের। ২০১৬ সালে ভারতের সঙ্গে ইরানের এই ব্যাপারে চুক্তিও হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, ওই ৬২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করার কথা ছিল ভারতের। ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়ের অধীন ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সঙ্গে ইরানের রেল মন্ত্রণালয়ের একটি সমঝোতাও হয়। সেই মেগা প্রকল্পটি ছিল, এশিয়ায় নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের তাৎপর্যপূর্ণ এক বিজ্ঞাপন। কারণ, ওই চুক্তি করতে ইরানে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আবদুল ঘানির উপস্থিতিতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হুসেন রুহানি ও প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রধানত চীন ও পাকিস্তানকে বার্তা দিতে ওই রেলপ্রকল্পটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিগত তিন বছরে ওই প্রকল্প রূপায়নে অনেক দেরি হয়েছে। সেই সঙ্গে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কও এখন তিক্ত। এই অবস্থায় বিগত কয়েক বছরে ভারত অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে আমেরিকার, যা ইরানের চরম অপছন্দের। পাশাপাশি চীনের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়েছে। ঠিক এরকম সময়েই চাবাহার বন্দর থেকে ভারতকে সরিয়ে দিয়েছে ইরান। ফলে ইরানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ফাটল আরো গভীর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইরানের অভিযোগ সমঝোতা হওয়ার ৪ বছর কেটে যাওয়ার পরও ভারত এই এই প্রকল্পের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিল দেয়নি ৷ তাদের দাবি এবার তারা নিজেরাই এই প্রকল্পের কাজ পুরো করবে ৷ চীনের সঙ্গে সমঝোতার পর এই কাজের বেশিরভাগ কাজই বেইজিং করবে ৷
সূত্র : বর্তমান
চীন-ইরান কৌশলগত সম্পর্ক
ইরানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের চিফ অফ স্টাফ মাহমুদ ওয়ায়েজি বলেছেন, ইরান ও চীনের মধ্যকার সম্ভাব্য ২৫ বছরের চুক্তির মধ্য দিয়ে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে। সম্ভাব্য এই চুক্তির বিরুদ্ধে যেসব সমালোচনা করা হচ্ছে তা নাকচ করে ইরানের এ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা বলেন, ইরানের শত্রুদের খুশি করার জন্য কিছু গোষ্ঠী এই সমালোচনা শুরু করেছে।
মাহমুদ ওয়ায়েজি বলেন, ইরানের প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষ করে চীন এবং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই উদ্যোগের বিরুদ্ধে ইরানের বাইরে থেকে ধ্বংসাত্মক অপপ্রচার চালানোর দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চীনের সাথে ভবিষ্যৎ কৌশলগত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরির চেষ্টা চলছে, যা বর্তমান কূটনৈতিক চর্চার মধ্যে একেবারেই সাধারণ ব্যাপার।
সূত্র : পার্স টুডে