শাহেদ করিম : প্রতারক জগতের আইডল!

শাহেদ করিম - ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ পুলিশের এলিট ফোর্স- র্যাব বলছে, রিজেন্ট হাসপাতালের পলাতক মালিক শাহেদ করিম প্রতারক জগতের আইডল।
তাকে এখনো গ্রেফতার করতে না পারার এটাই অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন র্যাবের গণমাধ্যম ও আইন শাখার পরিচালক কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
"তার প্রতারণার ধরণ একটি অনন্য ধরণ। তবে যেকোন সময় যেকোনো মুহূর্তে শাহেদকে আমরা গ্রেফতার করবো," তিনি ঢাকায় আজ এক ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, শাহেদ করিম সম্পর্কে নতুন নতুন অনেক অভিযোগ আসছে তাদের কাছে।
"সর্বশেষ অভিযোগ এসেছে রিজেন্ট কলেজ বা রিজেন্ট ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে। অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তিনি জাল সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ফলে শুধু শিক্ষার্থীদের জীবনই নষ্ট হয়নি, ব্যক্তিজীবনও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে"।
এক প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন শাহেদ করিম যেন পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, শাহেদ করিম যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য র্যাব সহ সব সংস্থা একযোগে কাজ করছে।
, রিজেন্ট হাসপাতাল র্যাব বন্ধ করে দেয়ার পর থেকেই হাসপাতালটির মালিক শাহেদ করিম পলাতক রয়েছেন।
করোনাভাইরাসের ভুয়া সনদসহ নানা জালিয়াতির অভিযোগে তিনিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
তবে এর পর থেকেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে শাহেদ করিমের ছবি এবং টেলিভিশন টকশো গুলোতে তার নিয়মিত উপস্থিতির বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার ওঠে।
আশিক বিল্লাহর কাছে একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন যে রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা, যারা তার পৃষ্ঠপোষকতা করতে তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য আছে কিনা?
জবাবে তিনি বলেন কারও সাথে ছবি থাকা মানে এই নয় যে তিনি পৃষ্ঠপোষক।
"গুরুত্বপূর্ণ বা দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সৌজন্যবশত ছবি তোলেন। তবে কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবেন"।
শাহেদ করিম তার সাথে যেসব গানম্যান নিয়ে চলাফেরা করতেন, সে টিমে যারা অস্ত্র ব্যবহার করতেন, তাদের সম্পর্কেও অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
আশিক বিল্লাহ বলছেন, শাহেদ কমির চেক জালিয়াতির ক্ষেত্রে অনন্য পন্থা অনুসরণ করেছিলেন।
"এটি অভিজ্ঞ ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও বিস্মিত করেছে। তিনি একাধিক চেকে একাধিক ধরণের স্বাক্ষর দিয়েছেন। উনি বৈধ চেকে অবৈধ স্বাক্ষর করতেন। ফলে পাওনাদাররা যেসব চেক পেয়েছে সব চেক ডিজঅনার হয়েছে"।
এ পর্যন্ত শাহেদ করিমের বিরুদ্ধে ৫০টির বেশি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে এবং সব মামলাই প্রতারণার- এ তথ্য জানিয়ে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বে থাকা আশিক বিল্লাহ বলেন শাহেদ করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার জন্যে ভুক্তভোগী মানুষরাই এগিয়ে আসছে।
"প্রতারিতরা অনেকে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছেন। আশা করি এগুলো আইনগতভাবেই নিষ্পত্তি হবে," বলছিলেন তিনি।
সূত্র : বিবিসি