পাকিস্তানের লাভ!
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান - ছবি : সংগৃহীত
চীন-ভারত উত্তেজনা চলছে লাদাখে। দুই দেশের মধ্যে সাময়িক সমঝোতা হলেও উত্তেজনা স্থায়ীভাবে সমাধানের কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।
এই প্রেক্ষাপটে উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র এসোসিয়েট ও উপপরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেন, চীনের প্রধান মিত্র ও ভারতের প্রধান শত্রু এই সমীকরণে ভূমিকা রাখবে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারত চারটি যুদ্ধ করেছে। ২০১৯ সালেও তারা যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছিল। ওই সময় পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটি বিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান।
যোশী বলেন, লাদাখের ওপর ভারতের দাবির প্রতিবাদ করছে পাকিস্তান। এখন এতে চীনও সামিল হলো। তিনি বলেন, সিয়াচেন হিমবাহ দখলের ভারতের প্রয়াসে সহায়তা করেছিল উত্তর লাদাখের সৈন্যরা। এমনকি দৌলত বেগ ওলদির বিমানঘাঁটিও সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ১৯৮৪ সালে গোপন অভিযান চালিয়ে সিয়াচেন হিমবাহের কয়েকটি চৌকি দখল করে কারাকোরাম পর্বত শৃঙের দিকে অগ্রসর হয়। এর ফলে পাকিস্তান বাধ্য হয় উত্তর কাশ্মিরের কৌশলগত অবস্থঅনে তার সৈন্যদের নিয়ে আসতে।
এখন পূর্ব লাদাখে চীনা সেনাবাহিনীর ভূমিকার কারণে ভারত দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের ঝুঁকিতে রইল।
ইকোনমিস্টের প্রতিরক্ষা সম্পাদক বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানের সাথে থঅকা এলওসি এবং চীনের সাথে থাকা এলএসিতে সৈন্য বিভক্ত করে ফেলে তবে পাকিস্তানের জন্য সামরিক চ্যালেঞ্জটি সহজ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ভারত যদি যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ায় চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিকে ঝোঁকে, তবে পাকিস্তানের সাথে চীন তার সম্পর্ক আরো জোরদার করার সুযোগ দেখতে পাবে।
জাইদি অতীতের একটি উদাহরণ টেনে এনে বলেন, ২০ বছর আগে কার্গিলে পাকিস্তানের হাতে একই ধরনের লজ্জায় পড়েছিল ভারত।
আঞ্চলিক কেন্দ্র ও বাণিজ্য
দুই প্রতিবেশী বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর অন্যতম হওয়ায় কুগেলম্যান বলেন, এই পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় শিকার হবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা। চীন ও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিশ্বে অন্যতম বৃহত্তম।
তিনি বলেন, এখন ভারতীয় অর্থনীতি সঙ্কটে থাকায় অর্থনৈতিক সহযোগিতায় সমস্যা হলে ভারতের জন্য খারাপ ফল হতে পারে। তিনি বলেন, ম্যানুফেকচারিং ও টেলিকমের মতো কিছু শিল্পে চীন ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
কুগেলম্যান বলেন, ভারত এখন তাইওয়ানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে চাইতে পারে। তাছাড়া কোয়াড গ্রুপের সাথেও অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারে।
তবে তিনি বলেন, চীনের সাথে বাণিজ্যিক বিরোধে গেলে তা ভারতের জন্যই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, চীনের সাথে বাণিজ্য করে ভারত বরং লাভবানই হচ্ছিল।
সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে নিরাপত্তার উদ্বেগের কথা বলে ২৯ জুন নয়া দিল্লি ব্যাপক জনপ্রিয় টিকটক, উইচ্যাটসহ চীনভিত্তিক ৫৯টি মোবাইল ফোন অ্যাপ নিষিদ্ধ করে।
তিনি বলেন, ভারত-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত।ভারত সম্ভবত ভারতে চীনা বিনিয়োগের ব্যাপারেও সতর্ক হবে।
কুগেলম্যান বলেন, এতে করে বেইজিং ভারত সীমান্তে চাপ বাড়াতে পারে, সেইসাথে দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে তার কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রয়াস জোরদার করতে পারে। জিজিন বলেন, সামরিকভাবে চীনকে হারাতে পারবে না ভারত এবং ভারতের দুর্বল অর্থনীতি চীনের ওপর অবরোধও আরোপ করতে পারবে না।
একইভাবে জাইদি বলেন, এই অঞ্চলে চীনা পদক্ষেপের জবাবে ভারতের হাতে বিকল্প আছে সামান্যই।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন