ইসলাম কেন মৃত্যু কামনা করা বারণ করে
ইসলাম কেন মৃত্যু কামনা করা বারণ করে - ছবি : সংগৃহীত
তোমাদের কেউ যেন বিপদগ্রস্ত হয়েও মৃত্যু কামনা না করে। একান্ত যদি করতেই হয় তাহলে সে যেন বলে, ‘হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রাখ যে পর্যন্ত আমার জীবন কল্যাণকর হয় এবং মৃত্যু দাও যে পর্যন্ত যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়। (সহিহ বুখারি)
তাই বিপদ যত প্রকট হোক মুমিন সর্বাবস্থায় ধৈর্যের পরিচয় দেবে। ধৈর্য ধারণকারীর সাফল্য সুনিশ্চিত, কারণ মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য ধারণকারীর সাথে থাকেন; আর আল্লাহ তায়ালা যার সাথে থাকবেন, তার সফলতা অবধারিত।
আমরা এক সময় ছিলাম না। মহান আল্লাহ আমাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। প্রভুর ইচ্ছা অনুযায়ী ভূপৃষ্ঠ থেকে চলে যেতে হবে পরপারে। এই আসা যাওয়ার মাঝে কিছু জগতে শুধু শান্তি আর অকল্পনীয় সুখ। আর কোনো জগতে শুধু দুঃখ আর কষ্ট। আর কিছু জগৎ শান্তি ও দুঃখ মিশ্রিত। যে জগৎকে আল্লাহ যে জন্য সৃষ্টি করেছেন সেখানে তা ব্যতীত আর অন্য কিছু জুটবে না। যেখানে শুধু শান্তি আর সুখ তার নাম জান্নাত। দুঃখভরা জায়গাটি হচ্ছে জাহান্নাম। সুখ-দুঃখ ও হাসিকান্না মিশ্রিত হচ্ছে আমাদের এ দুনিয়া। পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যে সুখের রাজ্যে বাস করে কখনো তাকে দুঃখ স্পর্শ করে না। যতই ধনাঢ্য হোক, সে চিরসুখী এমনটা কেউ দাবি করতে পারবে না। মুমিনদের আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন সময় মুসিবত দিয়ে পরীক্ষা করেন। যা স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে বলেছেন : ‘হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা : বাকারা : ১৫৩)
মুসিবতে করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন : তারা যেন বিপদে আপদে ধৈর্যধারণ করে। দুনিয়ার এ কষ্টে মৃত্যু কামনা করার অনুমতি ইসলাম দেয়নি। হাদিস শরিফে রাসূল সা: এ ব্যাপারে নিষেধ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কারণ সে সৎ হলে আরো পুণ্য অর্জন করবে। আর অসৎ হলে (তাওবা করে) আল্লাহর সন্তোষ লাভের সমর্থ হবে। (সহিহ বুখারি)
অনেক লোক অজ্ঞতাবশত দুনিয়ার কষ্ট ক্লেশ সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু কামনা করে ও ত্বরিত মৃত্যুর জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যা নিতান্ত নির্বুদ্ধিতা ও দুর্বল ঈমানের লক্ষণ।
হজরত আনাস রা: হতে বর্ণিত রাসূল সা: বলেন, তোমাদের কেউ যেন বিপদগ্রস্ত হয়েও মৃত্যু কামনা না করে। একান্ত যদি করতেই হয় তাহলে সে যেন বলে, ‘হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রাখ যে পর্যন্ত আমার জীবন কল্যাণকর হয় এবং মৃত্যু দাও যে পর্যন্ত যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়। (সহিহ বুখারি)
তাই বিপদ যত প্রকট হোক মুমিন সর্বাবস্থায় ধৈর্যের পরিচয় দেবে। ধৈর্য ধারণকারীর সাফল্য সুনিশ্চিত, কারণ মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য ধারণকারীর সাথে থাকেন; আর আল্লাহ তায়ালা যার সাথে থাকবেন, তার সফলতা অবধারিত।
(লেখক : সিনিয়র শিক্ষক, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর ঢাকা-১২৩০)