ভারত মহাসাগরে এবার নতুন সঙ্ঘাত!
ভারত মহাসাগরে এবার নতুন সঙ্ঘাত! - ছবি : সংগৃহীত
স্থলভাগে সাম্প্রতিক সঙ্ঘাতের পর সাগরে চীনের প্রতি বর্ধিত হারে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে ভারত।
গত সপ্তাহে ভারতীয় নৌবাহিনী ও জাপানি সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ভারত মহাসাগরে যৌথ মহড়া পরিচালনা করে। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে বিকাশমান কোয়াডের অংশবিশেষ।
ভারত আগে থেকেই অন্য তিন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সাথে দ্বিপক্ষীয় মহড়া আয়োজন করে আসছে। তাছাড়া বলা হচ্ছে যে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে মালাবার মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।
ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের উপ-পরিচালক লিন মিনওয়াং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্ক ইতোমধ্যেই আধা-জোটে পরিণত হয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নয়া দিল্লি বেশ কয়েকটি চুক্তি করেছে ওয়াশিংটনের সাথে। এসব চুক্তির কয়েকটির সামরিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
এসব চুক্তির মধ্যে রয়েছে লসিস্টিকস এক্সচেঞ্জ মেমোরেন্ডাম অব এগ্রিমেন্ট (এর মাধ্যমে একে অপরের স্থল, বিমান ও নৌঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে মেরামত ও পুনঃজ্বালানির জন্য), কমিউনিকেশন্স কম্পাটিবিলিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট (যার মাধ্যমে স্পর্শকাতর মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে) ও জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (গোপন তথ্য বিনিময়ের জন্য)।
একে অপরের কমান্ডে লিয়াজোঁ অফিসার নিয়োগ করা নিয়েও আলোচনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন প্রস্তাবের মতো করেই ইন্দো-প্যাসিফিক ওশেন্স ইনিশিয়েটিভের পরিকল্পনা করেছেন।
লিন বলেন, ভারতের কৌশলগত উদ্বেগ চীনকে টার্গেট করে।
সীমান্তে ২০ ভারতীয় সৈন্য ও অজ্ঞাতসংখ্যক চীনা সৈন্য মারা যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারত ও চীনের মধ্যকার উত্তেজনা এখন প্রবলভাবে বিরাজ করছে।
বেইজিংভিত্তিক নৌ বিশেষজ্ঞ লি জিয়ে বলেন, দক্ষিণ চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরে চীনকে সংযত করার জন্য মার্কিন প্রয়াসের সাথে যোগ দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
তিনি বলেন, ভারতীয় নৌবাহিনী একাকী চীনা নৌবাহিনীর সাথে মোকাবিলা করতে পারবে না। তবে জাপান বা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিত্রতা গড়ে তারা অনেক ভালো অবস্থানে থাকবে।
তিনি বলেন, ভার এই অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তার করতে চায়, আর আমেরিকা চায় তাদেরকে চীনের বিরুদ্ধে খেলাতে।
বৈশ্বিক তেল পরিবহন নেটওয়ার্কের কেন্দ্রে অবস্থান করছে ভারত মহাসাগর। এটি ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যকে সংযুক্তকারী চীনের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুটও।
অবকাঠামো ও বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ অতিক্রম করেছে দক্ষিণ চীন সাগর ও মালাক্কা প্রণালী দিয়ে, এটি এরপর প্রবেশ করেছে ভারত মহাসাগরে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা নৌবাহিনী এই অঞ্চলে বেশ সক্রিয় হয়ে পড়েছে। ভারত আশঙ্কা করছে, জিবুতি, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় বন্দর বানানোর মাধ্যমে ভারতকে ঘিরে ফেলছে চীন।
তবে ভারতের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তারা ইউরোপগামী চনিা বাণিজ্য রুট ছিন্ন করে ফেলতে পারবে তাদের বিমান ও নৌবাহিনীর মাধ্যমে। অবশ্য তা করতে হলে তাদের বিমান ও নৌবাহিনীর শক্তি আরো বাড়াতে হবে।
লি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে চীনা নৌবাহিনীকেও তার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তবে তা করতে হবে সংযত থেকেই।
তিনি বলেন, ভারত মহাসাগর ভারতের মহাসাগর নয়। আর চীনা নৌবাহিনী তার স্বাভাবিক যাত্রা ও কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
এসসিএমপি