চীন সীমান্তে সঙ্ঘাত : ভারতীয় জেনারেলের অবাক করা তথ্য

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Jun 27, 2020 05:00 pm
চীন সীমান্তে সঙ্ঘাত : ভারতীয় জেনারেলের অবাক করা তথ্য

চীন সীমান্তে সঙ্ঘাত : ভারতীয় জেনারেলের অবাক করা তথ্য - ছবি : সংগৃহীত

 

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য, যাকে সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং ভারত-চীন ঘটনাবলী সম্পর্কে সুবিদিত বলে মনে করা হয়, এমন একজন জেনারেল বলেছেন যে চীনের সামরিক নির্মাণ ও গালওয়ান, প্যাংগং হ্রদ ও দেপসাংয়ে সেনা অনুপ্রবেশ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া যেসব খবর প্রকাশ করেছে সেগুলো অতিরঞ্জিত এবং এর একটিও সত্য নয়।

সেন্টার ফর কনটেমপরারি চায়না স্টাডিজের পরিচালক লে. জেনারেল এস এল নরসিমান বলেন, ১৫ জুন গালওয়ানের সংঘর্ষটি হয়েছিলো ভারতীয় ভূখণ্ডে কারণ উভয় পক্ষ পরস্পরকে ঠেলে সরাতে চাচ্ছিল। এটা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) চীনা অংশেও ঘটতে পারতো। তিনি স্পষ্ট করেই বলেন যে ১৫ জুনের সংঘর্ষ হওয়ার পর এলএসির ভারতীয় অংশে কোন চীনা ছিলো না।

দি ওয়্যার-এর সঙ্গে ৪০ মিনিটের এক সাক্ষাতকারে জেনারেল নরসিমান নিশ্চিত করেন যে কর্নেল সন্তোষ বাবু যে কাঠামোটি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন সেটা এলএসি’র ভারতীয় অংশে ছিলো।

তবে সেই কাঠামোটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে কিনা তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে সাক্ষাতকারের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, স্যাটেলাইট ইমেজে টহল পয়েন্ট ১৪ বা এর আশেপাশে যেসব সাদা ও গোলাপি স্পট দেখা যাচ্ছে সেগুলো অসম্পৃক্ততা প্রক্রিয়ার ফল বা চীনাদের তৈরি নতুন কাঠামো হতে পারে।

এই ব্যক্তিক্রম ছাড়া জেনারেল নরসিমান দ্ব্যর্থহীনভাবে, আস্থার সঙ্গে এবং বার বার গালওয়ান, দেপসাং ও প্যাংগং হ্রদের সর্বশেষ ঘটনাবলী সম্পর্কে সংবাদপত্রের রিপোর্টগুলো বাতিল করে দেন। তিনি বলেন, গালওয়ানে সেনাবাহিনী এলএসির ভারতীয় অংশে একটি নো-ম্যান্স ল্যান্ড বা বাফার জোন প্রতিষ্ঠায় একমত হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। তিনি বলেন: আমি বাফার জোনের খবর জানি না। গালওয়ান রিভার ভ্যালিতে কোন ভারতীয় ক্যাম্প বা পোস্ট নেই বলে সংবাদ মধ্যমের খবরও তিনি বাতিল করে দিয়েছেন।

১৯৬০ সালের দাবি রেখা সম্পর্কে বলেন, চীন গালওয়ানের অংশ দাবি করে। গোটা সমস্যা জড়িয়ে আছে আমরা এলএসি-কে কিভাবে ব্যাখ্যা করছি তার সঙ্গে। জমিতে এর কোন চিহ্ন নেই।

প্যাংগংয়ের ৫০ কিলোমিটার ভেতরে এসে চীনারা ব্যাপকভাবে সামরিক কাঠামো গড়ে তুলছে এবং আগে যেসব জায়গায় ভারতীয়রা টহল দিতো এখন তারা সেখানে যেতে পারছে না বলে সংবাদপত্রের খবর সম্পর্কে জেনারেল বলেন, এই প্রতিরক্ষা কাঠামো নির্মাণের খবর পত্রিকাগুলো কোথায় পেলো সেটা তিনি জানেন না। এর একটিও সত্য নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নরসিমান বলেন, ৫ মে হাতাহাতি হয়েছে কিন্তু ফিঙ্গার ৪ ও ৮ এর মধ্যে চীনা কাঠামো সম্পর্কিত রিপোর্ট অতিরঞ্জিত অথবা মিথ্যা।

দেপসাংয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনা সেনাদের প্রবেশ সম্পর্কিত রিপোর্ট সম্পর্কে এই নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, এগুলো একেবারেই অতিরঞ্জিত বলে আমি মনে করি।

এলএসি’র চীনা অংশে তাদের সেনা সংখ্যা ৩০% বেড়েছে বলে খবর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে জেনারেল নরসিমান বলেন, ১৫ থেকে ২২ জুনের মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় সেনা সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু এর পরে বাড়েনি। সত্যি কথা হলো ২২-২৬ জুন এই গত পাঁচ দিনে চীনা সেনা বরং কমেছে।

জেনারেল নরসিমানের কাছে জানতে চাওয়া হয় চীন-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে কিনা। কারণ পত্রিকাগুলো বলছে যে পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। জবাবে তিনি বলেন যে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

চীনা সেনা নিহত হয়েছে কিনা জানতে জাওয়া হলে জেনারেল বলেন, এমন সম্ভাবনা প্রবল।

তার মতে এলএসি থেকে সার্বিক যে চিত্র পাওয়া যায় তাহলো চীনারা সেখানে চাপ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এর কারণ দারবুক-শাইওখ-দৌলত বেগ ওলদি সড়ক নির্মাণের কারণে বলে তিনি মনে করেন না। কারণ চীনারা বহু বছর ধরে এই সড়ক নির্মাণের কথা জানে। তারা কখনো এর প্রতিবাদ করেনি। এটা যে ভারতীয় ভূখণ্ড সেটাও তারা জানে।

সূত্র : এসএএম

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us