সাইবার যুদ্ধ ইরান-ইসরাইল
সাইবার যুদ্ধ ইরান-ইসরাইল - ছবি : সংগৃহীত
ইরানি সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীকে সীমিত সম্পদের মধ্যে চলতে হয়। তাই যুদ্ধের জন্য ইরানকে অন্য পন্থা যেমন- মিসাইল, ড্রোন, মিলিশিয়া, সাইবার যুদ্ধ এসবের উন্নয়ন করতে হয়েছে। তবে এর খরচও কম নয়। ইরানে সাইবার হামলা পরিচালনার বিষয়ে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ বলেছে, এই আক্রমণ ইসরাইল করেছে। ইরান বাধ্য হয়েই সাইবার কৌশলের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। নতুন করে ইসরাইল গত ৯ মে ইরানের শহীদ রাজি বন্দরে সাইবার হামলা চালায়, এতে বন্দর অকার্যকর হয়ে পড়ে। ইরান বন্দরে পাঁচটি ট্যাংকারে তেলভর্তি করেছিল ভেনিজুয়েলার জন্য। ইরানের খাদ্যবাহী জাহাজ ‘গোলশান’ ভেনিজুয়েলার সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর লা গুআইরা পৌঁছেছে। জাহাজে ভেনিজুয়েলায় ইরানি সুপার মার্কেটের জন্য খাদ্যসামগ্রী রয়েছে। আগে ইরান সরকার ভেনিজুয়েলায় বিপুল জ্বালানি তেল রফতানি করার পর এবার খাদ্যবাহী জাহাজ পাঠাল।
যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধবিমান ও সাবমেরিন যেমন একসময় যুদ্ধের ধারা বদলে দিয়েছিল, তেমনি সাইবার যুদ্ধ ব্যবস্থাও আধুনিক যুদ্ধের রূপ বদলে দিয়েছে। সাইবার যুদ্ধের সাথে এখন আরো যুক্ত হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ড্রোন হামলা, মহাকাশ যুদ্ধ কৌশল, অটো পাইলট, রোবট, লেজার গান ইত্যাদি। যারা এসব অর্জন করতে পারবে না তাদের যুদ্ধ শুরুর আগেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। সমুদ্রের গভীরে বা বিস্তীর্ণ মহাকাশ সাইবার যুদ্ধের বিরাট ক্ষেত্র। ইরান এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসরাইলের সাাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। শুধু ইরানের মাটিতে নয়, সিরিয়ায় ইরানি টার্গেটে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক বিমান হামলা করা হয়েছে, মরেছে সাধারণ মানুষ, ধ্বংস হয়েছে সম্পদ।
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করতে সাইবার যুদ্ধকে বেছে নিয়েছে। সম্প্রতি ইসরাইলে এক ভয়াবহ সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে ইরান, যার ফলে ইসরাইলও ভীত হয়ে পড়েছে, যদিও ইসরাইল অনেক আগ থেকেই ‘সাইবার নিরাপত্তার বলয়’ তৈরি করে সব সময় ‘অফেনসিভ’ ভূমিকা পালন করেছে। কিছুদিন আগে আমেরিকা আইআরজি কুদস ফোর্সের অধিনায়ক কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করেছে। সোলেইমানি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার অবকাঠামোতে, যেমন- বিদ্যুৎ গ্রিডে আক্রমণ চালানোর মূল নায়ক। ‘ফোর্বস’ এই তথ্য দিয়েছে। তা ছাড়া ইরান সৌদি আরামকোকে ২০১৭ সালে টার্গেট করে এবং ২০১৯ সালে ইরানি হ্যাকাররা অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও তেল শোধনাগারে আক্রমণ চালায়।
২০০৫ ও ২০১০ সালে স্টুক্সনেট ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ইরান সাইবার আক্রমণ প্রতিহতকরণ, নিরাপত্তা ও প্রতিআক্রমণের ক্ষমতা অর্জনের কাজ শুরু করে। আইআরজিসির ‘বাসিজ মিলিশিয়া’র মাধ্যমে যুবকদের সংগ্রহ করেছে। শত্রুকে আঘাত করার জন্য এই দলকে ‘সাইবার হিজবুল্লাহ’ বলেও ডাকা হয়। সাইবার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। ঈবহঃবৎ ভড়ৎ ঝঃৎধঃবমরপ ধহফ ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঝঃঁফরবং-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাশিয়া পোল্যান্ড ও এস্তোনিয়াকে টার্গেট করেছে। আজারবাইজানও আক্রান্ত হয়েছে, আক্রমণ কারা করেছে এখনো প্রকাশ পায়নি। পড়শিদের আক্রমণ করার জন্য ভিয়েতনামকে অভিযুক্ত করা হয়। উত্তর কোরিয়াও প্রায়ই সাইবার হামলা চালায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে বা হ্যাকারের দল এসব করে থাকে। এসব আক্রমণের স্পট নিশ্চিত করা খুবই কঠিন।
সাইবার আক্রমণের ক্ষেত্র অনেক প্রসারিত হয়েছে। সমাজ এখন তথ্যপ্রবাহের ওপর বেশি নির্ভরশীল। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হচ্ছে জটিল গ্রিড ও মেশিনে, তাই সব দেশ বলতে গেলে অনিরাপদ। দুনিয়ার যেকোনো এক স্থানে বসে হ্যাকাররা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারছে। ফলে এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, হাইব্রিড রেলওয়ে নিয়ন্ত্রণ, রাডার, কম্পিউটার চালিত ফ্যাক্টরি, জাতীয় ডিফেন্স সিস্টেম, ব্যাংকের অনলাইন হিসাবপত্র সব কিছু। অনলাইনে ঢুকলেই আপনি সবার চোখে পড়ছেন। এ জন্য চীন নিজস্ব অনলাইন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। সেটিও নিরাপদ নয়। তাই সাইবার যুদ্ধের ক্ষেত্র অনেক জটিল। মিলিটারি ইউনিটগুলো এখন বহু ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর দেয়। ইউনিট যদি গোপন আস্তানায় চলে যায় তবে তারা অনেক রকম সিস্টেম ব্যবহার করে, যেমনÑ ট্যাবলেট দিয়ে ড্রোন নিয়ন্ত্রণ, ট্যাংকের প্রটেকটিভ সিস্টেম এবং মোবাইল মিসাইল সিস্টেম চালু করা ইত্যাদি। যুদ্ধক্ষেত্রে এসব ডিভাইস খুবই মারাত্মক হিসেবে চিহ্নিত।
বর্তমানে সাইবার ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধে সিগন্যাল জ্যাম করা একটি প্রচলিত কাজ। প্রতি বছর এর সংখ্যা বাড়ছেই। ইসরাইল সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে বেশি পারঙ্গম। ইসরাইলি সাইবার যোদ্ধারা ডিফেন্স সংস্থাপনকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে। ইসরাইলি সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানিগুলো সারা বিশ্বে পরিচিত। ইসরাইলে এখন ২০০ সাইবার কোম্পানি রয়েছে যা তিন বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি। বিশ্বের অনেক দেশে এসব কোম্পানি কাজ করে এবং গোপনে স্বদেশে তথ্য পাঠায়। ২০১৭ সালে সাইবার নিরাপত্তা খাতে ৬.৫ বিলিয়ন ডলারের প্রোডাক্ট বিক্রি করেছে ইসরাইল। ইউসি কোহেন, মোসাদের প্রধান, অতিসম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহা সফর করেছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ডেথ স্কোয়াডও পরিচালনা করে থাকেন। তার সাথে ছিলেন ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রধান। কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল সানির আমন্ত্রণে তারা সেখানে যান। জানা যায়, বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে ‘হামাস’ পরিচালিত গাজাও ছিল। সাম্প্রতিক এক বছর ধরে কাতার ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক গভীর করেছে। ওয়াশিংটনের কাতার লবি লাখ লাখ ডলার খরচ করেছে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য, সৌদি-কাতার রাজনৈতিক সম্পর্কের বৈরিতা নিরসনের জন্য, সৌদি জোটের অবরোধের অবসানের জন্য। এই টিম প্রশংসা করে বলেছে, কাতার উপসাগরীয় স্টেটের ‘ইসরাইল’। চারপাশে শত্রুবেষ্টিত, অবরোধ, অবাস্তব দাবি; এর মধ্যে সে বাঁচার জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে।
আমীর আল সানি সফররত জায়োনিস্ট অর্গানাইজেশন অব আমেরিকাকে এক লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেন। কাতারের জন্য ছোট হলেও অন্যদের জন্য এটি বড় অঙ্কের অনুদান। এ বিষয়ে অন্য কোনো আরব দেশ এখনো অনুযোগ-অভিযোগ করেনি। সৌদি আরব, আমিরাত ও বাহরাইন কাতারের চেয়ে আরো এগিয়ে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। এই তিনটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য একই রকম।
ফিলিস্তিনি ইনটেলেক্ট ও একাডেমিক জোসেফ মাসাদ লিখেছেন, আরব দেশগুলোর ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার চিত্র আসলে ‘ভুয়া’ ও অর্থহীন। তিনি বলেন, ‘এসব ফিকশন; আরব নেতারা ও শাসক পরিবার ইসরাইলের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাচ্ছে না। অথচ সাধারণ জনগণের এক বিরাট অংশ ইসরাইল ও তাদের অগ্রযাত্রাকে ঘৃণা করে। অগণতান্ত্রিক আরব স্টেটস জর্দান, সুদান, মরক্কো, লেবানন, তিউনিসিয়া আর মিসর। তাই ইসরাইল নিজের স্বার্থেই চায় এ আরব দেশগুলোতে একনায়করা কাজ করুক। ইসরাইল যখন যুদ্ধ পরিকল্পনা করে তখন সেনাবাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ কম্পোন্যান্ট হিসেবে সাইবার ওয়ারকে অন্তর্ভুুক্ত করা হয়। ২০১১ সালে সেনাবাহিনীতে পৃথক সাইবার প্রতিরক্ষা ইউনিট সৃষ্টি করেছে। ২০১৭ সালে ইসরাইলি সেনাবাহিনী কম্পিউরাইজড সেনাবাহিনীতে পরিণত হয়। মাত্র একজন সাইবার সেনা একটি উপত্যকার বড় অংশ পাহারা দিতে এবং যে কাউকে টার্গেট করতে পারে। স্ট্যাসি পারমন ইসরাইলের উপর লেখা বইয়ে এসব তথ্যের বর্ণনা দিয়েছেন।
ইরানও সাইবার ক্ষমতা অর্জনের চেষ্ট চালায়, বিশেষ করে পরমাণু কেন্দ্রের কম্পিউটারে স্টুক্সনেট হামলার পর ইরান সাইবার যুদ্ধকৌশলকে সামনে নিয়ে আসে। আরআরজিসির বাসিল মিলিশিয়া ও স্থানীয় যোদ্ধারা সম্মিলিতভাবে ইসরাইলি আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকে। সাইবার যুদ্ধকে পাশ কাটাতে বড় শক্তিধর দেশের মিলিটারি ইউনিটগুলো বাইরের অনেক কোম্পানিকে নিয়োগ দিয়ে নানা সফটওয়্যার বের করছে। আবার কিছু কোম্পানি নতুন নতুন সাইবার ওয়ার্ম বের করছে। এরা মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে বিভিন্ন দেশে ভাড়াটে হিসেবে কাজ করছে।
কাতার ও আমিরাতে এমন সব হ্যাকার কাজ করছে মর্মে বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে। সাইবার আক্রমণের বড় দুর্বলতা হলো- লক্ষ্যবস্তু সম্পূর্ণ ধ্বংস করা যায় না, সাময়িকভাবে অচল হয়, তবে তাতেও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। স্টুক্সনেট ওয়ার্ম আমেরিকায় সিআইএ এবং ইসরাইল গোয়েন্দা বিভাগ একসাথে বসে তৈরি করেছে ২০০০ সালে। ওই ওয়ার্মকে মারাত্মক সাইবার অস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কেননা, এটা এর সাহায্যে ভৌত অবকাঠামোগত ইউরেনিয়াম-যন্ত্রপাতি যা কোনো প্রোগ্রামের সাহায্য চালানো হয়, তা ধ্বংস করে দিতে পারে। এটি তখনই ইরানের নাতাঞ্জ ইউরেনিয়াম প্রকল্পে ছেড়ে দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল। ২০০৬ সালে তদানীন্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ‘অলিম্পিক গেম’ নামে ইরানের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক সাইবার হামলা চালান। স্টুক্সনেট একটি আঘাতে নিয়ন্ত্রণবিহীনভাবে চলতে থাকে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের স্থাপনায় বড় ধরনের ধ্বংস সাধন করে, সেন্ট্রিফিউজ ভেঙে ফেলে। ২০০৯ সালে ওবামাও একই কাজ জোরদার করেছিলেন। ২০০৯-১০ সালে ইরানের এই প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এক হাজার সেন্ট্রিফিউজ নষ্ট হয়, এগুলো পরিবর্তন করতে ইরানকে দীর্ঘ সময় পার হতে হয়েছে।
আমেরিকার ওবামা প্রশাসনের হিসাব মতে, ওই আঘাতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি দুই বছর পিছিয়ে যায় বা বন্ধ থাকে। ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাইবার হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ইরান সাইবার হামলা, বিধ্বংসী ওয়াইপার হামলা চালায় এবং যুদ্ধজাহাজ মনিটরিং ব্যবস্থা হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করে। ইরান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, যুদ্ধ লাগলে উপসাগরীয় অঞ্চলে তা ছড়িয়ে পড়বে এবং মোতায়েন বেশির ভাগ মার্কিন সেনা মৃত্যুবরণ করবে। ইরান বলেছে, গত একটি বছরে ৩৩ মিলিয়ন সাইবার আক্রমণকে নিউট্রালাইজ করা হয়েছে। এই কাজে ইরান জাতীয় ‘ফায়ারওয়াল’ তৈরি করে ব্যবহার করেছে। ‘আমেরিকা-ইসরাইল অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু সার্থক হতে পারেনি।’ ইরানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজারি জাহরোমি এ কথা বলেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, উভয় দিকে যেকোনো ছোট ভুল থেকে বড় যুদ্ধ শুরু হতে পারে। হরমুজ প্রণালীতে বিস্ফোরণের পর যখন ইরানকে দায়ী করা শুরু হয় বলতে গেলে সাথে সাথেই ইরান ইন্টারনেটের তথ্যভাণ্ডার নেটওয়ার্ক, ওয়েবসাইট ইত্যদিতে আমেরিকা, ইসরাইল ও সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ‘জাল’ তথ্য প্রচার শুরু করে। গত ২০১৯ সালের এপ্রিলে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ব্যাংক ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থায়ও ইরান সাইবার হামলা চালায়। ২০১৮ সালে ইরানের সামরিক বাজেট ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার। আমেরিকার সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য ইরান আফ্রিকায় ৩০০ জনের এক কমান্ডো বাহিনী বানিয়েছে যারা যুক্তরাষ্ট্র এবং প্রয়োজনে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে হামলা চালাতে পারে। ২০১৯ সালে ২৪ জুন ডেইলি টেলিগ্রাফ এই সংবাদ পরিবেশনে করেছে।
ইসরাইলের জাতীয় সাইবার ডাইরেকটরেট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘জেরুসালেম দিবস’ উপলক্ষে ইরান ১৪-২২ মে সাইবার আক্রমণ চালাবে। অবশ্য তেমন সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। ডাইরেকটরেট আরো একটি হুঁশিয়ারি প্রচার করে যে, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিতে ইসরাইলিরা ‘র্যানজম মানি’র শিকার হতে পারে।
সরকার উপদেশ দিয়েছে, যেন নতুন কোনো অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড না করা হয়, সবাই যেন দীর্ঘ জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে যাতে সহজে ক্র্যাক করা না যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইমেইলে পাসওয়ার্ড যেন এভাবে লম্বা করে রাখা হয়। যেকোনো সময় ইরানি আক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য শিন বেতের মতো সব সরকারি এজেন্সিকে সতর্ক রাখা হয়েছে। গত মাসে ইরান আরেকটি সাইবার গোলা নিক্ষেপ করেছে, যার কারণে ইসরাইলে পানির সরবরাহ ব্যবস্থা, পাম্প ও পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে আর নিরাপদ ভাবা যাচ্ছে না। ইরান এই আক্রমণ চালাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সার্ভার ব্যবহার করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরান সাইবার হামলায় অনেক আধুনিক-কৌশলগত জ্ঞানের অধিকারী। এতে সাধারণ ইসরাইলি বা ইহুদিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার