নেপালি সৈন্যরা ভারতের হয়ে যুদ্ধ করবে না!
নেপালি সৈন্য - প্রতীকী ছবি
ভারতীয় রাজ্য উত্তরাখন্ডের কিছু এলাকা দাবি করার কয়েক দিন পর নেপাল এখন বিহারের দিকে নজর দিয়েছে, সেখানে একটি বাঁধ মেরামতের সময় নেপাল জানিয়েছে, ওই এলাকার অংশবিশেষের মালিক তারা। উল্লেখ্য, বিহারের সাথে নেপালের ৭০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বিহারের পূর্ব চাম্পারন জেলার লালবাকে নদীতে বন্যা প্রতিরোধের জন্য একটি বাঁধ মেরামতের কাজ করছিলেন। ২০ বছর আগে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নেপালের আপত্তির কারণে এখন এর মেরামতের কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে করে আসন্ন বর্ষায় সেখানে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিহারের পানিসম্পদ মন্ত্রী সঞ্চয় কুমার ঝা বলেন, বাল্মিকি নগরের গন্ধক ব্যারেজের ৩৮টি গেটের মধ্যে ১৮টি নেপালের অংশে রয়েছে। তারা সেখানে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করেছে। আগে তারা এ কাজ কখনো করেনি। রোববার এক লাখ ৫০ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়। বন্যা প্রতিরোধ সামগ্রী ও কর্মকর্তারা সেখানে যেতে না পারলে বড় ধরনের বিপদ দেখা দেবে।
ভারতবিরোধী মনোভাব
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে তীব্র সীমান্ত অচলাবস্থার মধ্যে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল দাবি জানিয়েছে যে ভারতের গোর্খা রেজিমেন্টের নেপালি নাগরিকরা ভারতের হয়ে চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করবে না।
দলটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গালওয়ান ভ্যালিতে ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে ভারত সম্প্রতি গোর্খা রেজিমেন্টের নেপালি নাগরিকদের (যারা দেশে ছুটিতে ছিল) কাজে আবার যোগদান করতে বলেছে। এর মানে হলো, চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী নেপালি নাগরিকদেরকে মোতায়েন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় পক্ষ।
এতে বলা হয়, নেপাল একটি স্বাধীন দেশ, কোনো দেশের সেনাবাহিনীতে কর্মরত এর তরুণদের অন্য দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা উচিত হবে না।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৭টি গোর্খা রাইফেলসে বর্তমানে ২৫ হাজারের বেশি নেপালি কাজ করছে। এর প্রতিটিতে ৫ থেকে ৬ ব্যাটালিয়ন (প্রতিটিতে ৮০০ থেকে ১০০০ করে সৈন্য) রয়েছে। এদেরকে পূর্ব নেপালের রাইস ও লিম্বাস এবং পশ্চিমের গুরুঙস ও মাগার্স থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
তত নীরব নয়
অধিকন্তু, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কালাপানি-লিম্পিয়াধুরা-লিপুলেখকে নেপালি ভূখণ্ড ঘোষণার পর থেকে উত্তরাখন্ডে ভারত-নেপাল সীমান্তের এফএম চ্যানেলগুলো ওই এলাকার আবহাওয়ার খবর প্রচার করছে।
সীমান্তের উভয এলাকায় শ্রুত নেপালি চ্যানেলগুলো ভারতবিরোধী গানও প্রচার করছে।
আরেকটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ
এদিকে নাগরিকত্ব আইন ২০৬৩ (হিন্দু পঞ্জিকা) সংশোধনের একটি বিলে নেপালের ক্ষমতাসীন দল নেপালি পুরুষদের বিবাহকারী বিদেশী নারীদের নাগরিকত্ব পেতে সাত বছর অপেক্ষা করার আইন প্রণয়ন করছে।
ভারত ও নেপালের পরিবারগুলোর মধ্যে বিয়ের সংখ্যা বিবেচনা করে অনেকে মনে করছে, ভারতকে টার্গেট করে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্ককে রোটি (রুটি) ও বেটির (কণে) সম্পর্ক হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
গত ৮ মে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং একটি কৌশলগত রাস্তা উদ্বোধনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
স্পুটনিক