সীমান্তে ভয়াবহ অস্ত্র মোতায়েন চীনের
সীমান্তে ভয়াবহ অস্ত্র মোতায়েন চীনের - প্রতীকী ছবি
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) ভারত সীমান্তে মোতায়েন তার বাহিনীকে নতুন লাইটওয়েট, ডিজিটালাইজড, যান-চালিত ১৫৫ এম হাউটজার অস্ত্রে সজ্জিত করতে পারে। আধুনিক স্থল যুদ্ধে মোবাইল আর্টিলারি অ্যাটাকে এটি নতুন মাত্রা আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের ২০১৯ সালের ন্যাশনাল ডে প্যারেডে পিএলএ পিসিএল-১৮১ প্রথমবারের মতো প্রদর্শন করা হয়। এটি আগের স্ব-চালিত হাউটজারের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষিপ্র, টেকসই ও যুদ্ধক্ষম। জুনে চীনের গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিসিএল-১৮১-এর ওজন মাত্র ২০ টন, আর আগেরগুলোর ওজন ছিল এর প্রায় দ্বিগুণ। নতুন অস্ত্রটির ওজন কম হওয়ায় এটি পরিবহন করা অনেক সহজ, এবং অনেক বেশি গতিশীল। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় এই অস্ত্র বিশেষ কার্যকর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পিসিএল-১৮১ অনেক আধুনিক, ডিজিটাল কন্ট্রোল প্যানেল সমৃদ্ধ। এতে অটোমেটিক গান ক্যালিব্রেশন ও সেমি-অটোমেটিক অ্যামুনেশন রিলোড ব্যবস্থা আছে। এই নতুন অস্ত্র চীনের তড়িৎ অভিযানে বিশেষ ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গ্লোবাল টাইমসে এক চীনা অস্ত্র বিশেষজ্ঞ বলেন, পার্বত্য এলাকায় যুদ্ধে হাউটজারের মতো আর্টিলারি অস্ত্র বিশেষ কার্যকর। কারণ এখানে প্যারাবোলিক পথে গোলা নিক্ষেপ করতে হয়। সাধারণ ট্যাঙ্ক এসব এলাকায় তেমন কার্যকর হয় না।
এই অস্ত্রের অস্তিত্ব ও মোতায়েন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধারণা করা হচ্ছে, চীন এখন তাদের অভিযানগুলো আরো ক্ষিপ্র, গতিশলি করতে চাচ্ছে। তারা মার্কিন অস্ত্রের বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন অস্ত্রের দিকে নজর দিচ্ছে। এছাড়া টাইপ ১৫ ভিটি৫ নামের হালকা ট্যাঙ্ক নির্মাণের দিকেও নজর দিয়েছে চীন।
চীন লাইটওয়েট ট্যাকটিক্যাল ট্রাকের ওপরও জোর দিয়েছে। আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের ওপরও নজর রেখেছে চীন। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের এম৭৭৭ বিশেষ সাফল্য পেয়েছে। এই ট্রাক ব্যবহারের আরেকটি কারণ সিএইচ-৪৭ চিনুক হেলিকপ্টারে করে এসব ট্রাক পরিবহন করা সম্ভব। এতে করে আকাশে করে অনেক সহজে ও দ্রুততার সাথে শত্রু এলাকায় আর্টিলারি কামান নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। পাহাড়ি এলাকায় এটি বিশেষভাবে প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র এর মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছিল যুদ্ধে। চীন এখন ২০ টনের ট্যাকটিক্যাল ট্রাক তৈরী করায় এ দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষতা অর্জন করল।
দ্বিতীয়ত, মার্কিন সেনাবাহিনী তাদের এম ১০৯ পলাদিন স্ব-চালিত হাউটজার ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছে। বিশেষ করে শত্রু পক্ষের হামলার মুখে বিশেষ কিছু প্রয়োজন হয়। এর মোকাবিলায় দ্রুত চলমান অস্ত্র বেশ কার্যকরি।এতে করে শত্রুর হামলা প্রতিরোধের পাশাপাশি নিজেদের বাহিনীকে সামনে বাড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বেশ কয়েক ধরনের ট্রাক-বাহিত গ্রাউন্ড-অ্যাটাক অস্ত্র ব্যবহার করে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মোবাইল এইচআইএমএআরএস রকেট। এই সেনাবাহিনী তার হেভি এক্সান্ডেন্ড মোবিলিটি ট্যাকটিক্যাল ট্রাকে ফালানক্স এরিয়া উইপেন্স, অডিশনাল আর্মড ও এক্সট্রা .৫০ক্যাল মেশিন গানও স্থাপন করেছে। একইসাথে ইউএস এম৭৭৭-এর মতো চলমান আর্টিলারি যোগ করার ফলে অগ্রসয়মান পদাতিক ব্রিগেড কমব্যাট টিমসকে আরো ভালোভাবে সহায়তা করতে পারে।
সূত্র : ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট