লাভের হিসাবে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী
লাভের হিসাবে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী - প্রতীকী ছবি
প্রতিরক্ষা বাজেট ও সামরিক ক্রয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা তাদের পরিচালিত ও মালিকানায় থাকা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ক্রয়কে অগ্রাধিকার দেয়।এতে করে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ অব্যাহত থাকার বিষয়টি উৎসাহিত হয়। স্থানীয় একটি অধিকার গ্রুপ এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় অধিকার গ্রুপ জাস্টিজ ফর মিয়ানমারের এক মুখপাত্র গত সপ্তাহে মিয়ানমার নাউকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে দুর্নীতি ও স্বার্থের সঙ্ঘাত হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ক্ষমতা ও সুবিধা সুরক্ষিত রাখতে সামরিক নেতৃত্বের হাতে রচিত মিয়ানমারের সংবিধান সামরিক বাহিনীকে সুযোগ দিতে পার্লামেন্টের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে।
বুধবার সকালে গ্রুপটির প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, এসব সঙ্ঘাত সামরিক বাহিনীকে গৃহযুদ্ধ অব্যাহত রাখতে আর্থিক প্রণোদনা দেয়। নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় থাকা ও গণতান্ত্রিক সংস্কার রুদ্ধ করতে উদ্যোগী হয়।
জাতিসঙ্ঘের একটি তদন্তে দেখা যায়, সামরিক ক্রয় বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা মেজর জেনারেল খিন মঙ থান অন্তত ১৯টি সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি পরিচালকের দায়িত্বও পালন করছেন।
গ্রুপটি জানায়, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা নীতিগতভাবে নিরপেক্ষ ও সৎ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তিনি তার ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে বিপুলভাবে লাভবান হন।
এতে বলা হয়, ক্রয় হওয়া উচিত অবশ্যই উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়, যাতে মিয়ানমারের জনগণ বুঝতে পারে যে তাদের অর্থ কোথায় ব্যয় হয়।
খিন মং থানের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে মিয়ানমা ফাইভ স্টার লাইন শিপিং কোম্পানি, কায়াহ স্টেট মিনারেল প্রডাক্টশন কোম্পানি, মিয়াওয়াদ্দি ব্যাংক, ল্যান পিয় মেরিন, মিয়ানমার ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। এসবের সবগুলোই সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন মিয়ানমা ইকোনমিক হোল্ডিংসের (এমইএইচএল) অংশবিশেষ।
এমইএইচএলের সব শেয়ারের মালিক সামরিক রেজিমেন্ট ও ব্যাটালিয়ন, সক্রিয় ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সদস্যরা। এর প্যাট্রন গ্রুপের প্রধান হিসেবে রয়েছেন কমান্ডার-ইন-চিফ মিন আঙ হ্লাইং।
এমইএইচএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে খিন মং থানের ভূমিকা হলো শেয়ারহোল্ডারদের (তাদের মধ্যে তিনি নিজেও আছেন) মুনাফা সর্বোচ্চ করা। সামরিক ক্রয় বিভাগের পরিচালক হিেসব তার ভূমিকা হলো সরকারি তহবিলে সামরিক ক্রয় সম্পন্ন করা।
জাস্টিজ ফর মিয়ানমার জানায়, সিনিয়র জেনারেল মিন আং হ্লাইং, মেজর জেনরেল খিন মং থান ও অন্যান্য সামরিক জেনারেলরা সরকারের অধীনে চাকরিজীবী হিসেবেই বিবেচিত তাদের বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। কিন্তু তারা তাদের সরকারি পদে থেকেই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার ব্যবস্থা করছেন।
কোয়ার্টারমাস্টার জেনারেল কিয়াও সোয়ার লিন আরেকটি সামরিক মালিকানাধীন বিশাল কোম্পাটি মিয়ানমার ইকোনমিক কোঅপারেশন (এমইসি) পরিচালনা করেন। তিনি সামরিক বাহিনীর বাজেটও তদারকি করেন। ২০১২ সাল থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাজেটের ১৩ থেকে ১৫ ভাগ হয় এই বাজেট।
মেজর জেনারেল হতুন আং, বিমান বাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল মো মিয়ন্ত তুন, বিশেষ অভিযানের প্রধান নে পিয় তাও, নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো আংও এমইএইচএলের পরিচালনা পর্ষদে বসেন।
জাস্টিজ ফর মিয়ানমার জানায়, সশস্ত্র বাহিনীকে মুনাফার জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাথে একীভূত করার এমন নজির আর কোথাও নেই। সরকারের কার্যক্রম সামরিক নেতৃত্বের মুনাফা লাভের সাথে একীভূত হয়ে পড়েছে।
মিয়ানমার নাউ