চোখের পানিতে করোনার বিষ!

নিজস্ব প্রতিবেদক | Jun 12, 2020 02:10 pm
করোনাভাইরাস

করোনাভাইরাস - সংগৃহীত

 

হাঁচি-কাশি তো বটেই, চোখের পানিতেও লুকিয়ে থাকতে পারে করোনা ভাইরাসের বিষ! অতএব, কান্না পেলেও চেপে রাখুন। পাবলিক প্লেসে চোখের পানি কখনো ফেলবেন না, কোনো অবস্থাতেই নয়! এমন পরামর্শ দিচ্ছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা। 

জ্বর, কাশি, গলাব্যথার পাশাপাশি কোভিডের অন্যতম উপসর্গ ‘পিংক আই’ বা কনজাংটিভাইটিস। বাংলায় যাকে ‘চোখ ওঠা’ বলে। যদিও এই উপসর্গটি বাকিদের তুলনায় সংখ্যালঘু। তবু ডাক্তার সাহেবরা সচেতন করেছেন আম জনতাকে। জানিয়েছেন, কারো চোখ লাল দেখলেই সাবধান। তার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। চোখ থেকে পানি পড়লেও সাবধান। এগুলো কোভিডের উপসর্গ হতে পারে।

সমস্যা হলো, জুন-জুলাইয়ের এই সময়েই কনজাংটিভাইটিসের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। বর্ষা শুরু হলে আরো বাড়বে। এমনটাই জানালেন কলকাতার ‘রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজি’-র সহকারী অধ্যাপক ডা. চন্দনা চক্রবর্তী। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “কোভিড পজিটিভ রোগীদের ১-৩ শতাংশের কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। চোখ লাল নয়, তবু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, এমন ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। চোখের পানি ধরে নিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। ভাইরাস থাকলে তা ধরা পড়ে যাবে।”

একই বক্তব্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চক্ষুবিভাগের প্রধান ডা. সৌম্যস্বরূপ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি জানালেন, করোনারোগীর ‘ড্রপলেট’-এ ভাইরাস থাকার আশঙ্কা ৯০ শতাংশ, ঘামে ৮০ শতাংশ এবং চোখের পানিতে ৭০ শতাংশ। সুতরাং চোখের পানি ‘কালচার’ করলেও ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়বে। আরআইও-র একদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। অন্যদিকে ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’। দু’ জায়গাতেই এখন কোভিড টেস্ট হয়। ট্রপিক্যালে আরটিপিসিআর যন্ত্রে, মেডিক্যালে ট্রুন্যাটে। আরআইও-র সাবেক অধ্যাপক ডা. হিমাদ্রি দত্ত জানিয়েছেন, ট্রপিক্যালে চোখের জল পাঠিয়ে ‘কালচার’ করা যেতেই পারে। তবে, বিষয়টি ‘র‌্যান্ডম’ হলে ভালো হয়।

কনজাংটিভাইটিসের রোগী দেখলেই এখন ‘আরআইও’-তে আইসোলেশনে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে। হিস্ট্রি নেয়া হচ্ছে। জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট আছে কি না দেখা হচ্ছে। কোনো কোভিড রোগীর সংস্পর্শে ওই রোগী এসেছেন কি না তা-ও জানার চেষ্টা হচ্ছে। চন্দনা জানিয়েছেন, চোখে থাকা নেত্রনালির পথ ধরে নভেল করোনা শরীরে ‘এন্ট্রি’-ও নিতে পারে। চোখের পানিরও করোনা টেস্ট চোখের উপরে কনজাংটাইভা নামে এক ধরনের ঝিল্লি থাকে। সেখানে সংক্রমিত ব্যক্তির ‘ড্রপলেট’ এসে পড়লেও কোভিডের সম্ভাবনা তৈরি হয়।

আরআইও-তে এখন রোজ ৭০-১০০ জন রোগী আসছেন বহির্বিভাগে। তার মধ্যে ১০-১২ জনের কনজাংটিভাইটিস পাওয়া যাচ্ছে। চোখ থেকে পানি পড়ার সমস্যা নিয়েও অনেকে আসছেন। তাই, কোনো ঝুঁকি নিচ্ছেন না ডাক্তার সাহেবরা। পিপিই পরেই রোগী দেখছেন। ফেস শিল্ড, ব্রিদ শিল্ডও থাকছে। চোখের পাওয়ার নির্ণয়ের লেন্সগুলি স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে স্লিট ল্যাম্পও। অস্ত্রোপচার হলে তো কথাই নেই। কোভিড টেস্ট মাস্ট। এবার চোখের পানির নমুনাও যাবে ল্যাবরেটরিতে।

কনজাংটিভাইটিস ও চোখের পানি নিয়ে চীন-সহ বহু দেশে গবেষণা হয়েছে। ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ অপথালমোলজি-তেও বেশ কয়েকটি আর্টিকল বেরিয়েছে। ডাক্তার সাহেবরা এখন কনট্যাক্ট লেন্স পরতে বারণ করেছেন। জানিয়েছেন, যাদের চশমা নেই তারা পাওয়ারহীন গ্লাস ব্যবহার করুন। ফেস শিল্ড পরুন। আর ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। আর কোনোভাবেই চোখে হাত দেবেন না।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

 

 

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us