করোনা : যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল আর রাশিয়ার পরেই ভারত
করোনাভাইরাস - সংগৃহীত
ভারতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি চিন্তা ক্রমেই বাড়িয়ে দিচ্ছে। টানা কয়েক দিন ধরেই আক্রান্তের সংখ্যা এক দিনে ৯ হাজারের গণ্ডি পেরোচ্ছিল। এ বার গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে প্রায় ১১ হাজারের কাছাকাছি চলে গেল। মৃত্যু হয়েছে ৩৯৬ জনের। এই সংখ্যাবৃদ্ধিতে ব্রিটেনকে পেছনে ফেলে করোনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ দেশের তালিকায় চার নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। তার আগে শীর্ষ থেকে যথাক্রমে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও রাশিয়া।
শুক্রবার সকালে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০,৯৫৬ জন। এর ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২,৯৭,৫৩৫ জন। এর মধ্যে সেরে উঠেছেন ১,৪৭,১৯৫ জন। সুস্থতার হার ৪৯.৪৭ শতাংশ। এক দিনে আরো ৩৯৬ জনের মৃত্যু হওয়ায় করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮,৪৯৮। এখনও পর্যন্ত ৫৩,৬৩,৪৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছে ১,৫০,৩০৫ জনের।
বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রেও রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এক দিনে সেখানে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩,৬০৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের। এর ফলে মোট আক্রান্ত ৯৭,৬৪৮ জন। আক্রান্তের নিরিখে কানাডাকেও ছাপিয়ে গেছে মহারাষ্ট্র। এর পরেই রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে আক্রান্ত ৩৮,৭১৬ জন।
দিল্লি ও মুম্বইয়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। কেন্দ্রের উপদেষ্টা তথা নয়াদিল্লি এইমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া বলেছিলেন, আগামী ২-৩ মাসে সংক্রমণ শিখরে পৌঁছতে পারে। গুলেরিয়ার কথার সূত্র ধরেই দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী দু’দিন আগে দাবি করেছেন, ৫০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে সংক্রমণের উৎস বোঝাই যাচ্ছে না। সামাজিক সংক্রমণের সব রকম নিদর্শন মজুত, কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থা আইসিএমআরের অধিকর্তা বলরাম ভার্গব বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ভারতে সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়নি।
ভারতের শীর্ষ মেডিক্যাল গবেষণা সংস্থার দাবি, তারা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পরিধি বুঝতে কনটেনমেন্ট এবং নন-কনটেনমেন্ট- দু’ধরনের জোনেই সেরো সার্ভে চালিয়েছিল। তার রিপোর্টই বলছে, ভারতে নন-কনটেনমেন্ট জোনে সংক্রমণের হার মাত্র ০.৭৩ শতাংশ! শহরের বস্তি এলাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি গ্রামাঞ্চলের বস্তির থেকে ১.৮৯ গুণ বেশি আর সাধারণভাবে শহরাঞ্চলে সংক্রমণের ঝুঁকি গ্রামের চেয়ে ১.০৯ গুণ বেশি। প্রতি লাখ জনসংখ্যায় সংক্রামিত ও মৃতের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই কম। করোনায় মৃত্যুর হার মাত্র ০.০৮ শতাংশ। আইসিএমআর অধিকর্তার মতে, এতেই স্পষ্ট, ভারতে সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়নি। সংক্রমণের হার এতটা কম মানে, বিপুল জনসমষ্টি এখনো সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি।
সূত্র : আজকাল