পঙ্গপালের বিরুদ্ধে নামছে পাকিস্তানের ভরসা ‘মুরগি বাহিনী’
পঙ্গপালের বিরুদ্ধে নামছে পাকিস্তানের ভরসা ‘মুরগি বাহিনী’ - সংগৃহীত
পঙ্গপালের হামলায় জেরবার পাকিস্তান। ফসলের চরম ক্ষতির পাশাপাশি বাড়িতে ঢুকে পড়ছে এই রাক্ষুসে পতঙ্গের ঝাঁক। শত চেষ্টা সত্ত্বেও কিছুতেই এঁটে উঠতে পারছে না সেপাই-সান্ত্রীরা। তাই এবার বিপদমুক্ত হতে পাকিস্তানের ভরসা ‘মুরগি বাহিনী’।
শুনতে অবাক লাগলেও, পাকিস্তানে মুরগির খাবারে পরিণত হয়েছে পঙ্গপাল। হাজার হাজার মুরগির জন্য দিব্বি সুস্বাদু খাদ্যে পরিণত হয়েছে রাক্ষুসে পোকাগুলি। বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে কিছুটা হলেও সেগুলির বংশবৃদ্ধি কমেছে। সেই কথা মাথায় রেখে এবার পাঞ্জাব প্রদেশে একটি পাইলট প্রজেক্ট শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর আওতায় পঙ্গপাল জমা করে সরকারের হাতে তুলে দিলে নগদ ইনাম দেওয়া হবে। জমা হওয়া পোকাগুলিকে শুকিয়ে মুরগির খাদ্যে পরিণত করা হবে। এতে লাভবান হবে হাজার হাজার পোলট্রি ব্যবসায়ীরা। এই পরিকল্পইন তৈরি করেছেন পাকিস্তানের খাদ্যমন্ত্রকের এক কর্তা মহম্মদ খুরশিদ ও প্রাণীবিদ জহর আলি। এর আগে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে খাদ্য সংকটের মোকাবিলা করেত জনতাকে পঙ্গপাল খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সবে দেশের সরকার।
উল্লেখ্য। এর আগে পঙ্গপালের আক্রমণ থেকে বাঁচতে ‘বন্ধু’ চীনের মদত চেয়েছিল পাকিস্তান। যথারীতি সেই ডাকে সাড়াও দিয়েছিল বেইজিং। পঙ্গপাল নির্মূল করতে পাকিস্তানে ১ লক্ষ বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হাঁস পাঠাতে সম্মত হয়েছিল দেশটি। পাক অধিকৃত কাশ্মীর লাগোয়া জিনঝিয়াং প্রদেশে জড়ো করা হয়েছিল সেই হংস বাহিনীকে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কতটা ফল মিলেছে তা নিয়ে ইসলামাবাদ কোনো কথা বলেনি। এদিকে, পাঞ্জাব, সিন্ধ, বালুচিস্তানের মতো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। আফ্রিকা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসা এই পতঙ্গের ফৌজ পাকিস্তানে ফসলের বিপুল ক্ষতি করেছে। এমনকি শহরে বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে রীতিমতো হুলুস্থুল বাধিয়ে দিয়েছে এই পোকাগুলি।
তারা এখন বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পাঞ্জাবের ওকারা জেলা বেছে নিয়েছে। যেখানে কৃষকরা এখনো পঙ্গপাল দমনে এমন কোনো কীটনাশক ব্যবহার করেননি যাতে পঙ্গপাল খেতে অনুপযুক্ত হয়ে যায়।
মুহাম্মদ খুরশিদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমাদের প্রথমে শিখতে হয়েছে। তারপর পঙ্গপাল কীভাবে ধরতে হবে তা স্থানীয়দের শিখিয়েছি। সাধারণ জাল এই পোকার বিরুদ্ধে অকেজো।’
রাতের শীতল তাপমাত্রায় গাছপালাতে পঙ্গপাল নিশ্চল অবস্থায় থাকে। তখন গাছে ঝাকি দিয়ে ওগুলো ধরে ফেলা সহজ।
পঙ্গপালের আক্রমণে পুরো ফসল হারানো একজন কৃষক জানিয়েছেন, তিনি ও তার ছেলে এ পোকাটি ধরে এক হাজার ৬০০ রুপি আয় করেছেন, যা তা ফসলের ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে গেছে।
আয়োজকরা প্রথম প্রথম এতে কাউকে যুক্ত না করতে পারলেও তৃতীয় রাতেই প্রায় শতাধিক ব্যক্তি কাজে লেগে যান। ২০ টনের মতো পঙ্গপাল সংগ্রহ হয়ে যাওয়ার পর অর্থের অভাবে তখন কর্তৃপক্ষ তা সংগ্রহ স্থগিত করে রাখে।
সংবাদ প্রতিদিন