ভারতকে নেপালের কড়া হুঁশিয়ারি
কেপি শর্মা ওলি - সংগৃহীত
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি বুধবার তার দেশের সংসদে অভিযোগ করে বলেছেন, নেপাল-ভারত সীমানা সৃষ্টিকারী কালী নদীর ভুয়া উপস্থাপনার মাধ্যমে নেপালের অংশ দখল করে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। তিনি বলেন যে কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা এলাকা ভারত দখল করে রেখেছে এবং তা নিজেদের মানচিত্রে প্রদর্শন করেছে। এই এলাকা উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিব্বতের মতো ভুল নেপালের করা উচিত নয় বলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যা বলেছেন বলে প্রকাশিত হয়েছে তারও নিন্দা করেছেন ওলি। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে “নেপালের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ” করা হয়েছে।
দেশের বার্ষিক বাজেট অধিবেশনে বিতর্কের সময়ে প্রশ্নের উত্তরে ওলি জানান, ভারত ভুয়া কালী নদীর উপস্থাপনার মাধ্যমে নেপালের এলাকা দখল করে সেখানে সেনা মোতায়েন করেছে, তবে নেপাল সে সব এলাকা পুনরুদ্ধারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন সারা দেশে এই ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ যার মাধ্যমে সমস্ত দলের সদস্যদের মধ্যে সহমতের মতো বিরল ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে।
একটি রাস্তাই কি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় বিবাদের মূলে?
এই এলাকাগুলো নেপালের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনী বিলের ব্যাপারে সমস্ত দল একমত হয়েছে। মাদহেস-কেন্দ্রিক সমাজবাদী পার্টির সরিতা গিরি এই এলাকাগুলো বিতর্কিত ও নেপালের অংশ নয় বলে বিল প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন – কিন্তু দলের পক্ষ থেকে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়া হয় তাকে। বলে দেয়া হয়, তা না হলে তিনি শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে পড়তে পারেন।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি বলেন, সীমান্ত এলাকায় ভারত বাঁধ নির্মাণ করছে যার জেরে নেপালের বিভিন্ন এলাকা ডুবে যাবে। তিনি বলেন, “আপনারা আইন অনুসারে এবং সুপ্রতিবেশী হিসেবে এমনটা করতে পারেন না। আমরা ভারতকে একাধিক বার সাবধান করেছি এবং আমরা এ ধরনের অন্যায্য ক্রিয়াকলাপ আর বরদাস্ত করব না।”
ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের মন্তব্য সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি তিনি এমন কথা বলে থাকেন তবে তা নেপালের সার্বভৌমত্বের পক্ষে হানিকর এবং তা নিন্দাযোগ্য।
৩ জুন বেশ কিছু সংবাদ সংস্থা আদিত্যনাথকে উদ্ধৃত করে যেখানে তিনি বলেছিলেন তিব্বতের মতো ভুল নেপালের করা উচিত নয়। তিনি বলেন, “দু দেশের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক যোগ রয়েছে যা শতশত বছরের পুরনো এবং নেপালের সে কথা মনে রাখা উচিত।”
নেপালের সংবাদমাধ্যমে সেদেশের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীর বিলাসবহুল জীবনযাপন ও সরকারের প্রতি তাঁর সুবিধাদান নিয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তার নিন্দা করেন। তিনি বলেন, যারা প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করছে তারা নেপালের শৃঙ্খলাভঙ্গের ষড়যন্ত্র করছে।
সূত্র : ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস