চীনাদের সাপ-ব্যাঙ খাওয়া আর দন্তহীন হু
চীনাদের সাপ-ব্যাঙ খাওয়া আর দন্তহীন হু - সংগৃহীত
কেবল চীনেই এমন ভয়াবহ ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে। চীনারা খুব বেপরোয়া, তারা কোনো ধরনের নিয়ম-কানুন মানে না। তারা পশুপাখি, সাপ-ব্যাঙ, পোকামাকড় সবই খায়। তাদের কোনো বাছ-বিচার নেই। চীনাদের ওপর গজব পড়েছে। নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের এমন সংস্কার আমরা দেখেছি। বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়াও ছিল নানা ধরনের কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। বন্ধুরাষ্ট্র সবাই চীনাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। একেবারে ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও তাদের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতিক্রিয়া ছিল আরো কঠোর। ‘চীনারা অচ্ছুত, তাদের এড়িয়ে চলো’। যাদের গায়ে চীনা ‘বাতাস লেগেছে,’ তাদেরও বয়কট করল আমেরিকা।
এ অবস্থা থেকে মনে হয়েছিল চীনারাই মূল অপরাধী। ‘তাদের অপরাধের শাস্তি পাচ্ছে। অন্যরা যেহেতু অপরাধী নয়; তাদের ওপর এ ভাইরাসের সংক্রমণ হবে না। চীনাদের থেকে নিজেদের আলাদা রাখলেই এ ভাইরাস থেকে বাঁচা যাবে।’ তবে কয়েক মাসের ব্যবধানে বাস্তবতা বদলে গেল। এখন মনে হচ্ছে চীনারা যদি ‘অপরাধী’ হয়ে থাকে তাহলে ইউরোপ ও আমেরিকানরা ‘মহাঅপরাধী’। এমনকি তারা কয়েক ডজনগুণ বেশি অপরাধী। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষের এ দুটো মহাদেশে চীনাদের তুলনায় শতগুণ বেশি মানুষ আক্রান্ত, একই সাথে প্রাণও হারিয়েছে কয়েকগুণ বেশি। চীনের মাত্র একটি প্রদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ হয়েছিল। অন্যান্য প্রদেশে এর সংক্রমণ ছিল খুবই সামান্য। সব মিলিয়ে আট হাজারেরও কম মানুষ সেদেশে প্রাণ হারিয়েছে।
লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হচ্ছে- সবচেয়ে উন্নত রাষ্ট্র আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মহামারীতে আক্রান্ত। প্রাণ হারিয়েছে এক লাখ ১০ হাজার মানুষ। করোনা যদি অভিশাপ হয়ে থাকে এখন মন্তব্য করা যাবে যে, আমেরিকা সবচেয়ে বেশি অভিশপ্ত। আমেরিকার পর কোনো একটি দেশকে যদি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলতে হয় তাহলে সেটা আমেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য বা ব্রিটেন। আমেরিকার পরই এদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে এ যাবত প্রাণ হারিয়েছে। বিগত সাত দশকে বিশ্বাঙ্গনে আমেরিকার নেতৃত্বে বড় বড় যেসব অন্যায় হয়েছে যুক্তরাজ্য তার সহযোগী। আমেরিকার প্রত্যেকটি অন্যায়কে বৃহৎ শক্তি এবং সাবেক ঔপনিবেশিক দেশটি সমর্থনের পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতা দিয়ে বাস্তবায়ন করেছে। করোনাকে যদি ‘অভিশাপ’ বলতে হয় তাহলে এ দুটো দেশকে বলতে হবে সর্বাধিক অভিশপ্ত। এ দুটো দেশের বড় বড় অন্যায়গুলো কোটি কোটি মানুষের জীবনে দুরবস্থা এনেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকালে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
অভিশাপের অনিশ্চিত তত্ত্ব দিয়ে করোনার হিসাব পুরোপুরি মেলানো যায় না। ১৪০ কোটি মানুষের দেশ চীন স্বল্প ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। এখন পৃথিবীর প্রতিটি দেশ ও অঞ্চলে করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে। কোনো কোনো দেশে এর ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি, কিছু দেশে সেই তুলনায় কম। তবে জনবহুল দেশ ব্রাজিল, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে করোনা কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে তা এখনো পরিষ্কার করে বোঝা যাচ্ছে না। এ দেশগুলোতে করোনা সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা যায়।
করোনার একটি বৈশ্বিক মহামারী। এটি কমবেশি সব দেশকে সংক্রমিত করেছে। এই ভাইরাসের ব্যাপারে একটি আন্তর্জাতিক সমন্বিত মোকাবেলা জরুরি প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত এর বৈশ্বিক সমন্বিত মোকাবেলার কোনো আয়োজন দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ভাইরাস উৎপাটনের চেয়ে করোনা সংক্রমণে সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে নিজের রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য বেশি আগ্রহী। তিনি এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য বিনা প্রমাণে একচেটিয়াভাবে চীনকে দায়ী করে আসছেন। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-এর বিরুদ্ধে করে চলেছেন কঠোর সমালোচনা। তার মতে, ‘হু’-এর সামর্থ্য নেই, এই ভাইরাস মোকাবেলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের এবং ‘হু’ এমন একটি সংস্থা যাদের ‘ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য’ রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘হু’ চীনাদের সহযোগী একটি প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটির বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। এ অবস্থার মধ্যে বৈশ্বিক মহামারী সমন্বয়ের জন্য একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘হু’ নিজে বিষম বিপাকে পড়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আক্রমণ এবং অন্যান্য প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর নির্লিপ্ততায় মধ্যে দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি বিশাল সঙ্কট মোকাবেলা করছে। সংস্থাটি যারপরনাই চেষ্টা করছে যাতে ১৯৪টি সদস্য রাষ্ট্র তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করে চলে। একজন ভাইরোলজিস্ট ও ‘হু’র জরুরি কমিটির উপদেষ্টা জন ম্যাকেনজি বলেছেন, ‘হু’-এর নেতারা ‘অত্যন্ত হতাশ’। তিনি বলেন, বার্তা ‘লাউড ও ক্লিয়ার’; কিন্তু এরপরও অনেকে এই সতর্কতাকে আমলে নেন না। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশই এই কাতারে। ‘হু’র মহাসচিব তেদরোস আধানম গেব্রেসাস ১১ মার্চ করোনাভাইরাসকে একটি ‘বৈশ্বিক মহামারী’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন, তবুও অনেক দেশই ‘আশঙ্কাজনক নির্লিপ্ততা’ দেখিয়েছে বলে এ বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেছেন।
‘হু’ বা ডব্লিউএইচও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মতো জাতিসঙ্ঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা। এর এমন কোনো শক্তি নেই যে, সিদ্ধান্ত সদস্য দেশগুলোর ওপর তা চাপিয়ে দেবে। ২০১৯ সালে সংস্থাটির পরিচালন ব্যয় ছিল মাত্র ২০০ কোটি ডলার। সংস্থাটির পক্ষে যারা যুক্তি তুলে ধরছেন তাদের মতে, এ বাজেট অতি সামান্য। একজন জেনারেল কিংবা ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে জয় পাওয়া একজন নেতার চেয়ে সংস্থাটির ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অতি সামান্য। এটাকে ‘কম বেতনের একজন খেলার কোচে’র সাথে তুলনা করা হয়েছে। তিনি সব সময় চাপে থাকেন চাকরি হারানোর ভয়ে। বাস্তবতা হচ্ছে- অনেক প্রভাবশালী রাষ্ট্র ‘হু’র ঘাড়ে দায়দায়িত্ব চাপিয়ে দিতে চায়; অথচ সংস্থাটির ওপর সেই কর্তৃত্ব দেয়া হয়নি।
আন্তর্জাতিকতাবাদের সুদিনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গোলযোগের পর ‘হু’র জন্ম। রোগবালাই মোকাবেলায় সমন্বিত সহযোগিতার অর্জন এর লক্ষ্য। গত শতকের ৮০ ও ৯০ দশকে ‘হু’র গতিশীলতা হারাতে থাকে। কারণ ততদিনে গুটিবসন্ত, ইয়েলো ফিভার ও প্লেগ বিদায় নিয়েছে। এইডসের মতো রোগ সামনে এলেও স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যক্রমের গতি কমতে থাকে।
২০০২ সালে চীনের গুয়াঙ্গডং প্রদেশে এক কৃষক নতুন এক রোগে আক্রান্ত হন। শ্বাসকষ্টজনিত এ রোগ দ্রুত তাকে চিকিৎসা দেয়া হাসপাতালের স্টাফদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। এটিই একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে প্রথম মহামারী। এর কোনো চিকিৎসা দেয়া যায়নি, তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো বিশ্বে।
এটি ছিল সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম- সার্স। তা ছড়িয়ে পড়েছিল ২৬টি দেশে। মারা গিয়েছিল সহস্রাধিক মানুষ। এ মহামারী কোনো টিকা দিয়ে মোকাবেলা করা যায়নি। কোনো ধরনের ওষুধ কিংবা ডাক্তারি কাজে লাগেনি। ভ্রমণ সতর্কতা, টেস্ট, শনাক্তকরণ, বিচ্ছিন্নকরণ এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আহৃত তথ্যের ব্যবহার করে সার্স মোকাবেলায় ‘হু’ সফলতা দেখায়। সার্স দমন হওয়ার পর ‘হু’র প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব নতুন করে অনুভব করা হয়। ২০০৫ সালে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক একটি নতুন স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ন করেছে। এ বিধি অনুসারে প্রত্যেকটি সদস্য রাষ্ট্রকে তারা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির বিষয়ে একটি মানসম্মত প্রতিবেদন তৈরি করার তাগিদ দেয় যাতে করে ‘হু’ জনস্বাস্থ্যের জন্য আন্তর্জাতিক সতর্কতা জারি করতে পারে সময়মতো। মহামারী মোকাবেলায় এরপর ‘হু’ আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়। প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর বিরোধিতায় তা আর সম্ভব হয়নি। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি- এমন রোগ মোকাবেলায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যায়নি।
২০০৯ সালে মেক্সিকোতে সোয়াইন ফ্লু আবিষ্কৃত হয়। ‘হু’ যখন একে মহামারী ঘোষণা করে তখন ৭৪টি দেশে ২৮ হাজার মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এর মোকাবেলায় ‘হু’র সক্রিয়তা ছিল সার্সের তুলনায় কম। শেষ পর্যন্ত ওই ফ্লুতে সাড়ে ১৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। রোগটি ২০০ এর বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সময়মতো কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় মিডিয়া ও ইউরোপীয় রাজনীতিবিদরা ‘হু’র কার্যক্রম নিয়ে তদন্তের দাবি করেন। তদন্তও হয় তবে ‘হু’ সঠিক দায়িত্ব পালন করেছিল কি করেনি- এ নিয়ে বিপরীতমুখী মতামত পাওয়া গিয়েছিল ওই তদন্তে। সংস্থাটি এরপর থেকে আস্থার সঙ্কটে রয়েছে। ওই সময়ে জরুরি কর্মসূচিতে বরাদ্দ ও জনবল কমানো হয়। এর আয় ও ব্যয়ের মধ্যে এক বড় ফারাক দেখা দেয়। মহামারী নিয়ে কাজ করার অফিসটি বন্ধ করে দেয়া হয়, বিজ্ঞানীদের সেই টিমকে বাদ দেয়া হয়।
ওই অবস্থার মধ্যে ২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা ছড়িয়ে পড়লে সংস্থাটি বেশি সাড়া দিতে পারেনি। আক্রান্ত দেশগুলোর অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয় ওইসব দেশে। ইবোলা মোকাবেলায় হু’কে এড়িয়ে জাতিসঙ্ঘের একটি অস্থায়ী কমিটিকে এ ব্যাপারে দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। ইবোলায় ১১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ যায়। এটাকে ‘হু’র একটি বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়েছে।
বর্তমান ডি. জি. তেদরোসের সময়ে ‘হু’র অবস্থা আরো সঙ্গিন। সংস্থাটি যখন ইতিহাসের বৃহত্তম মহামারীর মুখোমুখি তখন যেসব দেশের উপর সংস্থাটিকে বেশি নির্ভর করতে হয়, সেসব দেশ সংস্থাটি ও এর দায়দায়িত্বের সমালোচনা করছে। করোনার শুরুতে চীনের ডাক্তারদের এ ব্যাপারে কথা বলা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। ‘হু’ কিছুটা বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। যদিও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চীনের বিজ্ঞানীরা জেনে যান, একটি ভাইরাসের সংক্রমণ চীনে ঘটেছে। চীন ৭ জানুয়ারির আগে বিষয়টি বাইরের কাউকে জানায়নি।
তারপর থেকে ‘হু’ চীনকে অনুরোধ করে আসছিল মহামারীর কেন্দ্র হুবেইতে বিজ্ঞানীদের একটি দলকে পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠাতে। ২৮ জানুয়ারি তেদরোস চীনা প্রেসিডেন্টের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার সুযোগ পান। এর দুদিন পর তেদরোস ভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়া রোধে সফলতা অর্জনের জন্য চীনের প্রশংসা করেন। সেদিন থেকে ‘হু’ সারা বিশ্বের জন্য প্রেসক্রিপশন দেয়া শুরু করে। চীনও ‘হু’র পর্যবেক্ষকদের সে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়। ব্যাপারটিকে তেদরোসের সমর্থকরা একটা কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখছেন। চীনকে আস্থায় রেখে মহামারী মোকাবেলায় তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন বলে তারা বলতে চাইছেন। তেদরোসের মুখে চীনের প্রশংসাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দেখছেন সন্দেহের চোখে।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে ‘হু’র মহাপরিচালক পদে তেদরোসের নির্বাচন রাজনৈতিক খেলায় পরিণত হয়েছিল। তেদরোস আফ্রিকার ইথিওপিয়ার নাগরিক। তিনি প্রথমে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন। ‘হু’র মহাসচিব নির্বাচন নিয়ে বিশ্ব দুটো ভাগ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা একে ‘বাজে’ একটি নির্বাচন বলছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা তেদরোসের বিরোধিতায় নামে। তারা ব্রিটিশ ডাক্তার ডেভিড নাবাররোকে সমর্থন জানান। এ সময় তারা ইথিওপিয়ায় মানবাধিকারের দুর্বল রেকর্ডের জন্য তেদরোসের সমালোচনা করেন। অন্যদিকে তেদরোসের সমর্থনে আফ্রিকা, এশিয়া ও চীন এক হয়ে যায়। ফলে বেশির ভাগের সমর্থনের জোরে উন্নত বিশ্ব তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে লেজ গুটিয়ে নেয়।
সেই ফাটল এখনো রয়ে গেছে। ‘হু’র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, সংস্থাটি ‘সময়মতো শক্তিশালী’ নির্দেশনা দিতে পারছে না। করোনা নিয়ে ‘হু’ নিজে রয়েছে বিভ্রান্তির মধ্যে। তাই ‘একেক সময় একেক কথা’ বলছে। ছোটখাটো নির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রেও তারা দ্বিধায় ভুগছেন। তারা নিজেরা এ মহামারীর ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা রাখছেন না। এ অবস্থায় মহামারী আক্রান্ত বিশ্ব কোনো একক শক্তিশালী কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাচ্ছে না। ফলে নভেল করোনাভাইরাসকে বিভক্ত বিশ্ব বিচ্ছিন্নভাবে মোকাবেলার করছে। কারো কাছে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই কেন?
jjshim146@yahoo.com