ট্রাম্পের বিপদে খুশি শি!
শি ও ট্রাম্প - সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে বেশ বেকায়কায় পড়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই অবস্থায় কি খুশি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং?
বিবিরি খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে এখন যে তীব্র গণবিক্ষোভ চলছে তার উপর নজর রাখছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু চীনে যেন একটা বাড়তি আগ্রহ নিয়ে এই বিক্ষোভ দেখা হচ্ছে।
গত বছর যখন হংকং-এ গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছিল তখন তাতে সমর্থন দিয়েছিল ওয়াশিংটন। কাজেই এবার যখন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়েছে, তখন বেইজিং এই সুযোগ লুফে নিয়েছে ওয়াশিংটনকে একহাত দেখে নেয়ার জন্য।
চীনের গণমাধ্যমে এই বিক্ষোভের খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে যে চরম বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে এবং সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে যেসব নির্মমতার অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো বেশ ফলাও করে প্রচারের মাধ্যমে চীন দাবি করছে যে তাদের দেশে সামাজিক স্থিতিশীলতা অনেক বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের নিন্দায় সরব হয়েছে যেসব দেশ, চীন এখন তাদের সঙ্গে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। চীনের কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় দেখাতে চাইছেন বেইজিং অনেক বেশি দায়িত্বশীল নেতৃত্ব দিতে পারে।
‘কী চমৎকার একটি দৃশ্য’
গত গ্রীষ্মে যখন হংকং এর গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা হাজারে হাজারে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তখন সেটিকে ’কী চমৎকার সুন্দর দৃশ্য’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। এবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম যুক্তরাষ্ট্রকে একহাত নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তারা যুক্তরাষ্ট্রের গণবিক্ষোভের দৃশ্যকে “বিউটিফুল ল্যান্ডস্কেপ” বলে বর্ণনা করছে।
চীনের আরেকটি রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক হু শিজিন লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা এখন তাদের নিজেদের ঘরের জানালা দিয়েই এই চমৎকার দৃশ্য উপভোগের সুযোগ পেয়েছেন।
বেইজিং মনে করে, হংকংয়ে বিক্ষোভের সময় ঘটা সহিংসতাকে মার্কিন রাজনীতিবিদরা ‘মহিমান্বিত’ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বেইজিং এর দৃষ্টিতে হংকং এর বিক্ষোভকারীরা যে ধরণের দাঙ্গায় লিপ্ত হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল সন্ত্রাসবাদের লক্ষণ।
গত বছরের বেশিরভাগ সময় হংকং বিক্ষোভে প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল। বেইজিং মে মাসে একটি হংকং এ সাময়িকভাবে একটি নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারি করে। এটি করা হয় তিয়ানানমেন স্কোয়ারের বিক্ষোভ দমনের বার্ষিকীর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে।
আয়ানি কোকাস যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স এর একজন সিনিয়র ফ্যাকাল্টি। তার মতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন দুটি দেশই আসলে এখন খুবই অস্থিতিশীল এক পরিস্থিতিতে খাবি খাচ্ছে। এর সূত্রপাত হয়েছে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনাবলির মাধ্যমে।
“এই মূহূর্তটি চীনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রে এখন স্থিতিশীলতার যে চরম অভাব দেখা দিয়েছে, এটিকে চীন তাদের জাতীয় নিরাপত্তা লক্ষ্য অর্জনের কাজে ব্যবহার করতে পারে।”