দুনিয়াজুড়ে নতুন খলনায়ক মাস্ক-গ্লাভস
দুনিয়াজুড়ে নতুন খলনায়ক মাস্ক-গ্লাভস - সংগৃহীত
গত ৫ মাস ধরে সমুদ্রসৈকতের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন 'ওশান এশিয়া' নামে একটি সংস্থার গবেষকেরা। তাদের মতে, গত কয়েক মাসে এশিয়ার বিভিন্ন সৈকতে বিপুল পরিমাণে সার্জিক্যাল মাস্ক মিলছে।
কেবল মানুষই নয়, করোনা-সংক্রমণের মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে এবার পরিবেশও। এক্ষেত্রেও খলনায়ক মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিবেশবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে ব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত সার্জিক্যাল মাস্ক এবং গ্লাভস। অভিযোগ, হংকং-এর সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে আমেরিকার শহরাঞ্চল- সর্বত্রই দূষণের মাত্রা বাড়াচ্ছে পরিত্যক্ত মাস্ক ও গ্লাভস, পিপিই কিট। বিশেষ করে সমুদ্রসৈকতের পরিবেশ নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে করোনা রুখতে ব্যবহৃত এই উপকরণগুলোর কারণে।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই এখন মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। বেশির ভাগ সরকারই রীতিমতো নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরনো নৈব নৈব চ। নাগরিকরা করোনা আতঙ্কের জেরে মাস্ক কিনছেনও দেদার। কেবলমাত্র ওষুধের দোকান নয়, নামী বস্ত্র বিপণীর ম্যানিকুইনের মুখেও ঝুলছে মাস্ক। রংবেরং মাস্ক ধীরে ধীরে জায়গা করে নিয়ে নিচ্ছে ফ্যাশন মানচিত্রেও। কিন্তু সেসবের জেরেই আতঙ্কিত পরিবেশবিদেরা।
গত ৫ মাস ধরে সমুদ্রসৈকতের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন ‘ওশান এশিয়া’ নামে একটি সংস্থার গবেষকেরা। তাদের মতে, গত কয়েক মাসে এশিয়ার বিভিন্ন সৈকতে বিপুল পরিমাণে সার্জিক্যাল মাস্ক মিলছে। এর ফলে ব্যপক ক্ষতির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক পরিবেশ। সিগারেটের টুকরো, ফাঁকা বোতল, খাবারদাবারের প্যাকেটের পাশাপাশি রাবারের গ্লাভস ও মাস্ক বিষিয়ে দিচ্ছে সামুদ্রিক পরিবেশ। কেন পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক গ্লাভস ও মাস্ক? পরিবেশবিদদের বক্তব্য, কারণ মূলত দুধরনের।
প্রথমত, এগুলো ফ্রেবিক ও প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। যা একেবারেই বায়োডিগ্রেডেবল নয়।
দ্বিতীয়ত রংবেরঙের গ্লাভস ও মাস্ক আকৃষ্ট করে সামুদ্রিক প্রাণীদের। ওশান এশিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গ্যারি স্টোকসের কথায়, ”কিছু দিনের মধ্যে সামুদ্রিক প্রাণীদের মৃতদেহেও মিলতে পারে করোনা রুখতে ব্যবহৃত গ্লাভস ও মাস্ক”।
কেবল সমুদ্রসৈকতই নয়, শহরের পরিবেশের জন্যও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে ব্যবহৃত সার্জিক্যাল মাস্ক। আমেরিকার মিয়ামি শহরে সক্রিয় পরিবেশকর্মী মারিয়া অ্যালগার্না সম্প্রতি শুরু করেছেন #দ্য_গ্লাভস_চ্যালেঞ্জ নামে একটি অনলাইন ক্যাম্পেন। নেট-নাগরিকদের কাছে তিনি পরিত্যক্ত গ্লাভস ও মাস্কের ছবি পোস্ট করার আবেদন করেছেন। মারিয়ার আশঙ্কা, আগামীতে শহরের পরিবেশ বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে ফেলে দেয়া গ্লাভস ও মাস্কের কারণে। অতএব, কেবল মানুষ নয়, করোনা আতঙ্কে পরিবেশও থরথরিকম্প।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি দ্বিগুণ
হাসপাতালে করোনাভাইরাস নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, সেখানে উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে এমন রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা অন্যান্য রোগীর দ্বিগুণ। আবার যে সব উচ্চরক্ত চাপ সম্পন্ন রোগী ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, তাদের মৃত্যু ঝুঁকি তারও দ্বিগুণ। শুক্রবার এক গবেষণা তথ্যে এ কথা বলা হয়। ইউরোপীয়ান হার্ট জার্নালের এক খবরে বিশেষজ্ঞরা এ কথা জানান।
চীনের জিয়ান-এর শিজিং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ও কার্ডিওওলাজিস্ট ফি লী জানান,‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে,উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের বুঝতে হবে তাদের কোভিড-১৯-এ মৃত্যু ঝুকি অনেক বেশি।’
চীন এবং আয়ারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত উহানের হোশেনশান হাসপাতালের ২,০২৭ জন রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, হাসপাতালের ভাইরাস আক্রান্ত শতকরা ৩০ ভাগ, ৮৫০ জন রোগীর হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের এসব রোগীর মধ্যে শতকরা চার ভাগের মৃত্যু হয়েছে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ নেই তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে শতকরা ১ ভাগের।
একই হাসপাতালের কোভিড-১৯ আক্রান্ত ২,৩০০ রোগীর ওপর পৃথক আরেকটি মেটা এনালিসিস চালান বিশেষজ্ঞরা। তারা উচ্চ রক্তচাপের বিভিন্ন ওষুধ সেবনকারিদের ওষুধের প্রভাব ও তাতে মৃত্যুর হারও গবেষণা করে দেখেন।
তারা দেখেছেন রাস ইনহিবিটরস নামে একটি ওষুধ যাতে এনজিওটেনটিং-কনভারটিং এনজাইম ইনহিবিটর (এসিই) ও এজিওটেনসিন রিসেপটর ব্লকার (এআরবি) রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে এই ওষুধ সেবনকারিরা কোভিড-১৯ মৃত্যুর ঝুঁকিতে নেই।
শিজিং হাসপাতালের অধ্যাপক লিং টাও বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা দেব যে, যেসব রোগী হাইপারটেনশনের ওষুধ সেবন করেন তারা যেনো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ পরিবর্তন বা ওষুধ সেবন থেকে বিরত না থাকবেন।’
সূত্র : এএফপি