বাংলাদেশে করোনা : একটি আশঙ্কাজনক তথ্য
করোনাভাইরাস - সংগৃহীত
করোনা যুবকদের বেশি আক্রান্ত করছে। করোনা বয়স্কদের বেশি আক্রান্ত করে এ ধারনাটি বাংলাদশে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তবে ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা মৃত্যুবরণ করছে বেশি। বাংলাদশে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার ১৪০ জন ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমাজিন্সি অপারেশন সেন্টারের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আখতার জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত করোনায় ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সীরাই সবচেয়ে আক্রান্ত হয়েছে বলে পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে।
গত ৮ মার্চ থেকে ২ জুন পর্যন্ত পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের যুবা বয়সীরাই আক্রান্তরা ছিল সবচেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের ২৮ শতাংশই এরা। আক্রান্তের দিক থেকে আবার ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের অবস্থান এর পরই। এই বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে মোট আক্রান্তের ২৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সীরাই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের ৫৫ শতাংশ মানুষই এ বয়সী। তাহলে দেখা যাচ্ছে মোট আক্রান্তের ১৫ হাজার ৪৩৯ জনই ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। আবার ৩১ থেকে ৪০ বয়সীদের আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৮৭ জন। তাহলে দেখা যাচ্ছে ৩০ হাজার ৩২৬ জনই ২১ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত বয়সী মানুষ। অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, এই জনগোষ্ঠীই কর্মক্ষম বলে এদের বেশি করে বাইরে যেতে হয়। আবার এদের মধ্যে অনেকেই একটু বেশি সাহসী গোছের। ফলে এদের এরা বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু সরকারের উচিৎ এ জনগোষ্ঠীটির প্রতি একটু বেশি মনযোগী হওয়া। সরকার সবার স্বাস্থ্যের দিকটা খেয়াল করবে কিন্তু এই জনগোষ্ঠীটার প্রতি একটু বেশি খেয়াল করতে হবে এ কারণে যে এরাই অর্থনীতিতে বিশেষভাবে অবদান রাখতে সহায়তা করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের আক্রান্তের হার ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের ৯ হাজার ৩৭৩ জন করোনা আক্রান্ত এ বয়সী। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সীরা ১১ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে। তাহলে এদের মোট সংখ্যা হলো ৬ হাজার ৬৫ জন। এছাড়া ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা সংক্রমিত হয়েছে ৭ শতাংশ করে।
আমাদের দেশের সবচেয়ে সক্ষম বয়সীরাই সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর দিক থেকে ৬০ বছরের বেশি বয়সীরাই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী ২ জুন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর ৩৭.০৮ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে থেকে। এরপরই রয়েছে ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সীরা মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭.১১ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মৃত্যুহার ৮.০৫ শতাংশ। এটাও ঠিক যে ৪০ বছরের নিচের গ্রুপের মানুষের মধ্যে আরোগ্যের হার সবচেয়ে বেশি। ২ জুন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যু সবচেয়ে কম ১.০১ শতাংশ। সারাদেশে করোনায় মোট আক্রান্তদের মধ্যে নারী ২৯ শতাংশ এবং পুরুষ ৭১ শতাংশ।
অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, তবে বয়স্করা বেশি মৃত্যুবরণ করছেন। সাধারণত: শ্বাসকষ্টেই বেশি মানুষ মারা যায়। কারণ হাসপাতালে যথেষ্ট পরিমাণে আইসিইউ বেড অথবা ভেন্টি লেটর নেই। বাংলাদেশে সাড়ে ৫ হাজার আইসিইউ বেড প্রস্তুত করে রাখতে পারলে আরো বেশি মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।