সামাজিক দূরত্ব, মাস্কে লাভ কতটা?
-
ল্যান্সেটের এক গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে মহামারীর কার্ভ ফ্ল্যাট করতে কতকগুলো সাধারণ নিয়ম পালনই যথেষ্ট। আংশিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আর্থিক সহায়তায় এবং সারা পৃথিবীর গবেষকদের পরিচালনায় ৪৪টি গবেষণাপত্র (৭টি কোভিড-১৯, সার্সের ২৬টি ও মার্স নিয়ে ১১টি), যা ২৫৬৯৭ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে করা হয়েছে, তা থেকে মেটা অ্যানালিসিস করে দেখা হয়েছে সোশাল ডিসট্যান্সিং, চোখের সুরক্ষা উপকরণ ও মাস্ক পরলে কোভিড ১৯ কতটা আটকানো যায়।
এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে বর্তমান নীতি অনুসারে ১ মিটারের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখলে সংক্রমণ সম্ভাবনা অনেকটাই কমে, তবে ২ মিটার দূরত্ব বেশি কার্যকর।
এই পরিসংখ্যানে আরো বলা হয়েছে যে ফেস মাস্ক স্বাস্থ্য কর্মী ও সাধারণ মানুষ, উভয়কেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয় এবং চোখের সুক্ষা উপকরণ অতিরিক্ত সুবিধাদায়ী। তবে এ সবের কোনও কিছুই সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারে না, এবং এদের ভূমিকা বোঝার জন্য বেশ কিছু পরিপ্রেক্ষিতকেও সঙ্গে বুঝতে হবে।
৯টি গবেষণার তুল্যমূল্য বিচারে দেখা গেছে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন ৩ শতাংশ এবং যাঁরা ১ মিটারের কম দূরত্ব বজায় রেখেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ১ মিটারের কম।
তেরোটি গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখা গেছে যারা চোখের সুরক্ষা উপকরণ পরেছেন, তাদের মধ্যে সংক্রমণ ৬ শতাংশ, অন্যদিকে যারা তা পরেননি, তাদের মধ্যে সংক্রমণ ১৬ শতাংশ।
১০টি গবেষণা পরীক্ষা করে দেখা গেছে মাস্ক পরলে সংক্রমণের আশঙ্কা ৩ শতাংশ, মাস্ক না পরলে আশঙ্কা ১৭ শতাংশ।
পুনের পালমোকেয়ার রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন ফাউন্ডেশনের সন্দীপ সালভিইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন লকডাউন শেষ হওয়া মানে অতিমারী শেষ হওয়া নয়, বরং ভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি এক যুদ্ধের সূচনা, যেখানে সামাজিক দূরত্ব, হাতের স্বাস্থ্য, চোখের সুরক্ষা উপাদান ও মাস্ক পরা রোগ ছড়ানো প্রতিরোধে হাতের কাছের সেরা উপায়।
এর মধ্যে মাস্ক পরিধান সবচেয়ে কার্যকরী। তিনি বলেন, সাধারণ সুতির মাস্ক, বা সুতি ও শিফন মিশ্রিত বা সুতি ও সিল্ক মিশ্রিত মাস্ক কার্যকরী সুরক্ষা দেয়।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
অ্যান্টিবায়োটিকের অধিক ব্যবহারে মৃত্যু বাড়বে
মহামারী কোভিড ১৯ মোকাবেলায় অ্যান্টিবায়োটিকের অধিক ব্যবহার ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জোরদার করবে। এ কারণে চলমান সঙ্কট এবং সঙ্কটোত্তর কালেও অধিক হারে লোক মারা যাবে।
ডব্লিউএইচও’র মহাসচিব টেডরস আধানম গেব্রিয়াসিস সোমবার জেনেভা সদরদপ্তরে ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, কোভিড-১৯-এর কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়ে গেছে। এন্টিবায়োটিকের অধিক ব্যবহারের কারণে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধক্ষমতার হারও বাড়বে। এর ফলে মহামারী ও মহামারীর পরেও মৃত্যু হার বেড়ে যাবে।
ডব্লিউএইচও বলছে, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের হুমকি মোকাবেলায় মাত্র কিছু সংখ্যক কোভিড -১৯ রোগীর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন।
সংস্থাটি চিকিৎসকদের জন্যে ইস্যু করা দিকনির্দেশনায় যে সকল লোকের কোভিড -১৯ এর মৃদু উপসর্গ কিংবা অল্প অসুস্থতা রয়েছে তাদেরকে অ্যান্টিবায়োটিক না দেয়ার কথাই বলেছে।
টেডরস বলছেন, নির্দেশনায় জীবন রক্ষায় জীবাণুর প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠেকানোর কাজে সহায়তার কথা বলা হয়েছে।
তিনি জীবাণুর প্রতিরোধক্ষমতাকে আজকের এ সময়ের সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেন।
টেডরস এন্টিবায়োটিক সঠিকভাবে ব্যবহার না করার বিষটিকে তুলে ধরে বলেন, কিছু কিছু দেশে এটি বেশি বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশ যেখানে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ সহজলভ্য নয়। আর এন্টিবায়োটিকের অতিব্যবহার অপ্রয়োজনীয় দুর্ভোগ এবং মৃত্যুহারও বাড়াচ্ছে।