লাদাখ সীমান্তে চীনা যুদ্ধবিমান সতর্ক ভারত
লাদাখ সীমান্তে চীনা যুদ্ধবিমান - সংগৃহীত
ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। লাদাখে সীমান্তের কাছে চীনের সেনাবাহিনী ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত আছে বলে খবর এসেছিল আগেই। এবার সামনে এলো আরো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে পশ্চিম লাদাখ সীমান্তের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে দিয়ে ঘোরাফেরা করছে চীনের যুদ্ধবিমান।
পশ্চিম লাদাখের কাছাকাছি চীনের বিমানবাহিনীর এয়ার বেসে হামলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০ থেকে ১২টি যুদ্ধবিমান। হোটান ও গারগুনসা নামে দু’টি এয়ার বেসে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফাইটার জেটগুলো। একটি সূত্র জানাচ্ছে যে, সেখানে জে-৭ ও জে-১১ ফাইটার এয়ারক্রাফট রয়েছে যেগুলো ভারতীয় সীমান্তের ৩০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। যদিও এই দূরত্বকে খুব বিপজ্জনক বলে মনে করা হচ্ছে না, তবুও ভারতীয় সেনাবাহিনী সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। যেকোনো মুহূর্তে সীমান্তের একেবারে ঘাড়ের কাছে চলে আসতে পারে চীনের ওইসব যুদ্ধবিমান।
মে মাসের শুরুতেই পশ্চিম লাদাখের কাছে যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল ভারত। সেই সময় ভারতের যুদ্ধবিমান ও চীনের হেলিকপ্টার আকাশে একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছিল। লাদাখের কাছে হোটান নামে ওই এয়ার বেসে চীনের সাথে যৌথ মহড়া চালায় পাকিস্তান। তাই ওই এয়ার বেসের ওপর প্রায় এক বছর ধরে ভারতীয় বিমানসেনাদের বিশেষ নজর রয়েছে।
গত ২৫ দিন ধরে লাদাখে মুখোমুখি ভারত-চীন সেনাবাহিনী। বাড়ছে তিক্ততা। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব লাদাখের দুই প্রান্তে ভারী যুদ্ধসামগ্রী, অস্ত্র, আর্টিলারি গান এবং কমব্যাট ভেহিকল মজুদ রাখার কাজ শুরু হয়েছে। এমন খবরই জানানো হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। এ দিকে দুই দেশের মধ্যে সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা চলছে। এমন অবস্থায় সীমান্তে সমরসজ্জা বাড়ছে। বিরোধপূর্ণ এই অঞ্চলে আকাশ পথে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় বিমনাবাহিনী।
টাইমস অব ইন্ডিয়া
দূতাবাস কর্মকর্তা বহিষ্কার ঘিরে পাক-ভারত উত্তেজনা
হিন্দুস্তান টাইমস ও আলজাজিরা
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসের অন্তত দুই কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে ভারত। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে পাকিস্তান। দূতাবাস কর্মকর্তা বহিষ্কার এবং রাষ্ট্রদূত তলবের এই ঘটনা ঘিরে চিরবৈরী এ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রোববার ভারতীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে আটক করে। কূটনৈতিক মিশনের সদস্য হিসেবে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার দায়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ভারত। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানি এ দুই কর্মকর্তাকে নয়াদিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ দিকে দূতাবাস কর্মকর্তাদের বহিষ্কারের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে গত রোববার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাইকমিশনের মধ্যস্থতায় কর্মকর্তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। মিথ্যা অভিযোগে দূতাবাস কর্মকর্তাদের আটক এবং নির্যাতনের নিন্দা জানাচ্ছে ইসলামাবাদ।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাকিস্তান ও ভারত প্রায়ই দুই দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার করে।
ভারতের সাথে কাশ্মির অঞ্চল নিয়ে পাকিস্তানের দীর্ঘ দিনের বিরোধ রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর কাশ্মিরের বেশির ভাগ ভূখণ্ড দখল করে নেয় ভারত। এ জন্য স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তান অন্তত তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে; যার দু’টি যুদ্ধই হয়েছে কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে। এ ছাড়া দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রায়ই কাশ্মির ঘিরে যুদ্ধে জড়ানোর হুমকি দেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়ে পাক-ভারত যুদ্ধ এড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।