হিন্দুত্ববাদের জনক’ সাভারকর ছিলেন ‘ব্রিটিশ এজেন্ট
সাভারকার ও কাটজু - সংগৃহীত
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু ‘ হিন্দুত্ববাদের জনক ‘ বিনায়ক দামাদর সাভারকরকে ‘ ব্রিটিশ এজেন্ট বলে আখ্যায়িত করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। কাটজু বলেন, সাভারকর মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষ ছড়ানোর মাধ্যমে ব্রিটিশদের ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসির বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করতেন। সাভারকরের ১৩৭ তম জন্মবার্ষিকীতে জাস্টিস কাটজু নিজের ব্লগে ‘ বীর সাভারকর সম্বন্ধে সত্যকথা ‘ শিরোনাম দিয়ে এক নিবন্ধ লিখেছেন। সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, ‘ হিন্দুত্ববাদের জনক ‘ হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তি সর্বদা উপনিবেশিক শাসকের সঙ্গে সহযোগিতা করে গেছেন।
আরএসএস – বিজেপির নাম উল্লেখ না করেই তিনি কটাক্ষ করেন, অনেকে তাকে মহান স্বাধীনতা যোদ্ধা বলে প্রশংসা করে থাকে। কিন্তু তার আসল চেহারাটা কী ? আসল সত্য তুলে ধরে কাটজু জানান, ব্রিটিশ শাসনামলে অনেক জাতীয়তাবাদী নেতা গ্রেফতার হন। জেলে ব্রিটিশরা তাদেরকে প্রস্তাব দেয়, যদি তারা শাসকের হয়ে কাজ করে তবে তাদের মুক্তি মিলবে। সাভারকর এই প্রস্তাবে সায় দিয়ে ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমাভিক্ষা করে চিঠি লেখেন। তাই জেল থেকে বের হয়ে তিনি হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানো শুরু করেন। ব্রিটিশ এজেন্ট হয়ে যান।
প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাটজু আরো বলেন, সাভারকর প্রথম দ্বিজাতি তত্ত্বের প্রচার শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিন্দু মহাসভার সভাপতি থাকাকালীন সাভারকর ‘ রাজনীতির হিন্দুত্বকরণ ও হিন্দুরাজত্বের সামরিকীকরণ ‘ – এর উপর তিনি ব্যাপক ভাবে জোর দেন। প্রচার শুরু করেন। হিন্দুদের সামরিক শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি যুদ্ধের সমর্থন করেন।
১৯৪২ সালে কংগ্রেস ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করলে সাভারকর এর তীব্র সমালোচনা করেন এবং হিন্দুদের এ থেকে দূরে থাকতে বলেন। সরকারের আদেশ অমান্য না করতে নির্দেশ দেন সবাইকে। তিনি শুধু হিন্দুদেরকেই যুদ্ধকৌশল শিখে নিতে আবেদন জানান। এই মানুষটি কি স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে শ্রদ্ধা ও প্রশংসার যোগ্য , প্রশ্ন তোলেন কাটজু। সাভারকারকে ভারতঙ্গ দেয়া হবে বলে একটি মহলে জল্পনা চলছে। কিন্তু সেটা করলে দেশের প্রকৃত সংগ্রামীদের অপমান করা হবে।
সাবেক বিচারপতি কাটজুর মতে , প্রকৃত বীর ছিলেন ভগৎ সিং, সূর্য সেন, চন্দ্রশেখর আজাদ, বিসমিল, আশফাকউল্লাহ, ক্ষুদিরাম, রাজগুরুরা। তারা প্রাণ দিয়েছেন। সাভারকর কী করেছেন? কাটজুর এই ব্লগের পাঠকরা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। অরুণ মেহতা বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলা ২৭ বছর জেলে ছিলেন। তিনি হেরে যাননি। সাভারকন এটা করেছিল। আরেকজন পাঠক ড . পাবা কুমার সাভারকরকে ব্রিটিশদের পোষা কুকুর আখ্যা দিয়ে বলেন, ও গান্ধিকে খুন করতেও সক্রিয়ভাবে সাহায্য করেছিল। দেশভাগেও সাহায্য করেছিল।
সূত্র : টিডিএন