চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ : কিছু ঐতিহাসিক ভুল
চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ : কিছু ঐতিহাসিক ভুল - সংগৃহীত
ভারত যদিও লাদাখ অঞ্চলে তার পূর্ব সীমান্তজুড়ে সাম্প্রতিক চীনা সামরিক অনুপ্রবেশকে তেমন গুরুত্বহীন বিষয় নয় বলে প্রকাশ্যে জানিয়েছে, কিন্তু এই অঞ্চলে উদ্বেগ বেশ বড় হয়েই দেখা দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
উভয় দেশ ১৯৬২ সালে মাসব্যাপী যুদ্ধে লড়াই করেছিল। এর অবসান হয়েছিল চীনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
ভারত বিশ্বাস করে যে চীনারা তাদের অগ্রবর্তী চৌকিগুলোতে হামলার মাধ্যমে এর সূচনা করেছিল। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় প্রকাশ্যে আসা সামগ্রীতে দেখা যাচ্ছে যে মানচিত্র নিয়ে ভারতের বিলাসী চিন্তাভাবনা ও ভূখণ্ডগত দাবির (এমনকি ব্রিটিশরাও তা করেনি) কারণেই এই অঞ্চলে যুদ্ধ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
মূলত এসব কারণেই হয়েছিল। তবে পাঁচ দশক হয়ে গেলেও ভারত এখনৈা হেন্ডারসন ব্রুকস-ভাগত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। ওই প্রতিবেদনেই যুদ্ধের কারণগুলো এবং ওই সময়ের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা সচিবদের ছাড়া মাত্র একজন বেসামরিক নাগরিকই ওই প্রতিবেদনটি দেখেছিলেন। তিনি হলেন ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ভারত ১৯৫০-এর দশক ও ১৯৬০-৬১ সালে যেসব সাংঘর্ষিক মানচিত্র প্রকাশ করেছিল, তার জের ধরেই যুদ্ধ হয়েছিল।
তিনি ছিলেন দেশটির প্রধান তথ্য কমিশনার। পরলোকগত সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে পিটিশন দায়ের করার ফলে তিনি প্রতিবেদনটি তলব করেছিলেন।
হাবিবুল্লাহ ২০১০ সালে নায়ারের পিটিশন প্রত্যাখ্যান করলেও এখন বিশ্বাস করেন যে ভারতের নতুন মানচিত্রগুলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
তিনি অরুনাচল প্রদেশ সীমান্তজুড়ে থাকা সীমান্ত পিকেটগুলো নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমরা যেসব মানচিত্র দিয়েছিলাম, সেগুলো ছিল চীনের সাথে থাকা ম্যাকমোহন লাইনের রূপরেখার সাথে সাংঘর্ষিক। তাদের কাছে হস্তান্তর করা আমাদের মানচিত্র দেখে চীনারা মনে করে থাকে যে উত্তর-পূর্বের এসব সীমান্ত পিকেটের একটি এখন আমাদের [ভারতীয়] বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে, যা আসলে তাদের।
এর জের ধরে ১৯৬২ সালের ২০ অক্টোবর চীনা সেনাবাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে ওই সীমান্ত পিকেট দখল করার জন্য। এতে করে বৈরিতার সূচনা ঘটে।
ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত চিহ্নিত করতে ব্রিটিশরা ১৯১৪ সালে ৮৯০ কিলোমিটার (৫৫৩ মাইল) দীর্ঘ ম্যাকমোহন লাইনটি প্রণয়ন করেছিল। অবশ্য, বেইজিং এখনো এই সীমান্ত রেখা গ্রহণ করেনি।
ভারতের একগুঁয়েমির নতুন প্রমাণ প্রকাশ
যুদ্ধের পরপরই লে. জেনারেল হেন্ডারসন ব্রুকস ও ব্রিগেডিয়ার প্রেম ভগতকে দায়িত্ব প্রদান করা হয় যুদ্ধের কারণ ও ভারতের পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য। তারা ১৯৬৩ সালে ২৮ খণ্ডের প্রতিবেদন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহেরলাল নেহরুর কাছে উপস্থাপন করেন। এরপর থেকে প্রতিবেদনটি কঠোর সতর্কতার সাথে প্রতিরক্ষা সচিবদের কাবার্ডে রাখা আছে।
সাবেক শীর্ষ আমলা হাবিবুল্লাহ বলেন, আমি এখনো বিশ্বাস করি যে প্রতিবেদনটি গোপনীয়তামুক্ত করা উচিত নয়। ১৯৬২ সাল থেকে এসব এলাকায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর মোতায়েনে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়নি। ফলে এসব তথ্য গোপনীয়তামুক্ত করা মানে চীনকে প্রতিরক্ষা তথ্য সরবরাহ করা। অধিকন্তু, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা এতই পীড়াদায়কভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে এমনকি এখনো তা বাহিনীর মনোবলের ওপর প্রভাব ফেলবে।
হাবিবুল্লাহর সাথে একমত হয়ে প্রখ্যাত লেখক ও সংবিধান ও কূটনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ এ জি নূরানি প্রমাণ তুলে ধরে দেখিয়েছেন যে ভারতীয় নেতা ও কূটনীতিকরা ইতিহাসের বস্তুনিষ্ঠ তথ্যগুলো বিশেষ করে মিডিয়া ও শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে আড়াল করেছেন। এর ফল হয়েছে ক্ষতিকর ও স্থায়ী পরিণামযুক্ত।
তিনি বলেন, একটি মিথ্যা গল্প বানিয়ে রটনা করা হয়েছে যে জম্মু ও কাশ্মিরের একটি বিরাট অংশ পাকিস্তান ১৯৬০-এর দশকে চীনকে উপহার দিয়েছে।
ভারত ১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবরের দাবি অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের আয়তন ৮২,২৫৮ বর্গ মাইল।
তবে ১৮৯১ সালের আদমশুমারি নথিতে এলাকাটি ৮০,৯০০ বর্গ মাইল বলে উল্লেখ করা হয়। এই তথ্যটি ১৯০১ সালের আদমশুমারিতেও পুনরাবৃত্তি করা হয়। ১৯১১ সালে এলাকাটির আয়তন দেখানো হয় ৮৪,২৫৮ বর্গমাইল। তবে ১৯৪১ সালের আদমশুমারির কমিশনার এর আয়তন কমিয়ে দেখাতে বলেন ৮২,২৫৮ বর্গ মাইল।
স্বাধীনতার পর ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার প্যাটেলের ভারতীয় রাজ্যগুলো প্রশ্নে প্রকাশিত শ্বেতপত্রে এই হিসাবটির পুনরাবৃত্তি করা হয়।
অবশ্য, ১৯৬১ সালের আদমশুমারিতে সম্ভবত প্রকৃত সীমন্ত রেখা নির্ধারণ প্রশ্নে চীনের সাথে বিরোধের বিষয়টি বিবেচনা করে ভারত জম্মু ও কাশ্মিরের আয়তন ৮৬,০২৪ বর্গ মাইল হিসেবে উল্লেখ করে।
এই অতিরিক্ত ৩,৭৬৬ বর্গ মাইল এলাকা কোথা থেকে এলো, সে সম্পর্কে কারো কাছেই কোনো ধারণা ছিল না। অথচ এই সময়ে ভূখণ্ডগত কোনো দখলদারিত্ব বা সামরিক অভিযানও হয়নি।
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, প্রধানমন্ত্রী নেহরু ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের তদানিন্তন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সাথে ঐতিহাসিক সিন্ধু অববাহিকা পানি চুক্তি সই করে করাচি থেকে ফেরার পরপরই এই ভূখণ্ড যোগ করা হয়।
মানচিত্র পোড়ানো
আইয়ুব খানের মুখ্যসচিব কুদরাতুল্লাহ শাহাব তার আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন যে মনোরম মারিতে অবকাশের সময় অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়ের সময় নেহরু জানতে চান যে চীনের সাথে পাকিস্তান কোনো সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে কিনা।
আইয়ুব হ্যাঁসূচক জবাব দিলে তিনি মানচিত্র সম্পর্কে ধারণা দিতে বলেন।
শাহাবের আত্মজীবনীতে উল্লেখ রয়েছে যে ওটা ছিল অনানুষ্ঠানিক সভা। এমনকি আইয়ুব পর্যন্ত মানচিত্রের একটি কপি পাঠাতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু নেহরু দিল্লি ফেরার পরপরই কূটনৈতিক আলোড়নের সৃষ্টি হয়, রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের কাছে মানচিত্র হস্তান্তর করার জন্য পাকিস্তানের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
নেহরু এমনকি পার্লামেন্টে বলেন যে এটি হলো পাকিস্তান ও চীনের যৌথ ষড়যন্ত্র।
শাহাবের মন্তব্যের সাথে মিল রেখেই নূরানি তার সর্বশেষ গ্রন্থ ইন্ডিয়া-চায়না বাউন্ডারি প্রবলেম, ১৮৪৬-১৯৪৭ : হিস্টরি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি (অক্সফোর্ড)-এ উল্লেখ করেছেন, কিভাবে পররাষ্ট্র দফতর নতুন একতরফা মানচিত্র সৃষ্টির জন্য পুরনো মানচিত্রগুলো পুড়িয়ে ফেলেছিল।
নূরানি সাবেক এক পররাষ্ট্র সচিবের (তিনি তখন ছিলেন জুনিয়র অফিসার এবং এই বাজে কাজটি করার নির্দেশ পালন করতে বাধ্য হয়েছিলেন) উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ১৯৫৩ সালের ২৪ মার্চ সীমান্তের নতুন সীমানা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। পুরনো মানচিত্রগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এ জি নূরানি তার মুম্বাইয়ের বাসভবন থেকে আনাদুলু এজেন্সিকে বলেন যে নেহরুর ইস্যু করা ১৭ প্যারার স্মারকে মন্ত্রণালয়কে সুস্পষ্টভাবে সব পুরনো মানচিত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
নূরানি বলেন, আর্কাইভের প্রমাণ অনুযায়ী, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তের কোনো সীমারেখা প্রদর্শন ছাড়াই নতুন মানচিত্রগুলো ছাপানো হয়। নেহরু আরো নির্দেশ দেন যে এসব মানচিত্র বিদেশে দূতাবাসগুলোতে পাঠাতে হবে, তিনি পরামর্শ দেন, এগুলো সাধারণভাবে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হবে এবং স্কুল ও কলেজগুলেতে ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন যে এই সীমান্তকে দৃঢ় ও সুনির্দিষ্ট বিবেচনা করতে হবে এবং কারো সাথে এ নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করা যাবে না।
পুস্তকে প্রকাশিত স্মারকটিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয় যে তারা যাতে পুরনো মানচিত্রগুলো সম্পর্কে আলোচনা পর্যন্ত না করেন এবং কেবল নতুন মানচিত্রগুলোর কথাই উল্লেখ করেন।
নেহরুর স্মারকে বলা হয়, পুরো সীমান্তজুড়ে চেকপোস্ট ছড়িয়ে থাকার একটি সিস্টেম থাকা প্রয়োজন। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এমন সব স্থানে আমাদের চেক পোস্ট থাকা উচিত, যেগুলো বিরোধপূর্ণ এলাকা বিবেচিত হতে পারে।
নেহরুর নির্দেশনা আলোচনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল
নূরানি বিশ্বাস করেন যে এই নির্দেশনার ফলে সব ধরনের আলোচনা বা সীমান্ত ইস্যুতে লেনদেনের সব দরজা বন্ধ হয়ে যায়। রূপকথার ‘অচিহ্নিত সীমান্ত’ ১৯৫৪ সালের নতুন মানচিত্রে পশ্চিম (কাশ্মির) ও মধ্য সেক্টরে (উত্তর প্রদেশ) ফেলা হয়, যা ১৯৪৮ ও ১৯৫০ সালের সরকারি মানচিত্রগুলোতে অস্তিত্বশীল ছিল।
পাকিস্তান তার কিছু ভূমি চীনের কাছে ছেড়ে দিয়েছে বা উপহার দিয়েছে বলে ভারতের সৃষ্ট ধারণা এবং এমনকি কাশ্মিরি নেতাদের কাছে ব্যাপকভাবে গৃহীত ধারণাটি প্রত্যাখ্যান করেছেন এই লেখক। আর্কাইভের প্রমাণে বরং দেখা যায় যে চীনই ১৯৬৩ সালের ৩ মার্চের পাকিস্তান-চীন সীমান্ত চুক্তির আওতায় পাকিস্তানকে ৭৫০ বর্গ মাইল এলাকা ছেড়ে দিয়েছে।
নূরানি বলেন, ভারত হয়তো প্রতিবাদ করে বলতে পারে যে এই চুক্তি করার কোনো কর্তৃত্ব পাকিস্তানের নেই। কারণ জম্মু ও কাশ্মির হলো বিরোধপূর্ণ এলাকা। কিন্তু চুক্তির ৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে কাশ্মির নিষ্পত্তির পর এই চুক্তি সংশোধিত হতে পারে।
প্রখ্যাত মানচিত্রকর ও ওই সময়ের পাকিস্তানের সার্ভেয়র-জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আসলাম চীনের সাথে সীমান্ত চিহ্নিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ঐতিহাসিক তথ্যের আলোকে নিখুঁতভাবে সীমান্তরেখা টানা হয়েছে।
তিনি ইরানের সাথে সীমান্ত চিহ্নিতকরণেও ভূমিকা পালন করেন। এর ফলে ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি তাকে নিশান-ই-হুমায়ূন খেতাবে ভূষিত করেন।
নূরানি বলেন, পাকিস্তানের সাড়া ছিল ঐতিহাসিক তথ্য ও বিদ্যমান বাস্তবতার ভিত্তিতে। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান সরকার স্রেফ পুরনো মানচিত্রগুলোর ভিত্তিতে দাবি করেন এবং এতে করে চীনও ৭৫০ বর্গ মাইল এলাকার ওপর দাবি ছেড়ে দেয়।
ব্রিটিশরা সীমান্ত অচিহ্নিত রেখে দিয়েছিল
ব্রিটিশরা ১৮৪৬ সালের মার্চ মাসে অমৃতসর চুক্তির আওতায় জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য প্রতিষ্ঠার সময় এর উত্তর ও পূর্ব সীমান্তগুলো অচিহ্নিত রেখেছিল। ১৮৪৬ ও ১৮৪৭ সালে সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য চীনকে হয়রানি করতে থাকে। কিন্তু চীন এতে সাড়া দেয়নি।
১৯৬৩ সালের চুক্তিটির ভিত্তি ছিল ১৮৯৯ সালে চীনকে দেয়া ব্রিটিশ প্রস্তাব। এতে পাকিস্তানের জন্য ভূখণ্ডগত লাভ হয়। অধিকন্তু নূরানির মতে, নিষ্পত্তির জন্য চীন কিন্তু পাকিস্তানকে চাপ দেয়ীন। বরং তারা প্রথমে ভারতের সাথে সীমান্ত নিষ্পত্তিতে আসতে চেয়েছিল।
কলকাতা ও নর্থ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বি এন গোস্বামীও বলেন যে সীমিত হলেও জানাশোনা লোকজন মনে করে যে এই রূপরেখাটি ছিল ন্যায়সঙ্গত ও উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য।
নূরানি সীমান্ত সমস্যাটি জিইয়ে রাখার জন্য বিভক্ত মন্ত্রিসভা, দায়িত্বহীন বিরোধীদল, বেখেয়াল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও অবাধ্য পার্লামেন্টকে দায়ী করেন। তিনি আরো বলেন যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিস্টরিক্যাল ডিভিশনের পরিচালক কে জাকারিয়ার ব্যাপকভিত্তিক ও বস্তুনিষ্ঠ সমীক্ষা এখনো গোপন রাখা হয়েছে।
সীমান্ত সমস্যা সম্পর্কে দৃশ্যত ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও ভারতের নীতির মধ্যে পুরোপুরি অসামঞ্জস্যতার কথা উল্লেখ করে লেখক বলেন যে কূটনীতিও অনড় হয়ে যায়। কারণ এটি এমন এক নীতিকে সমর্থন করে যা লেনদেনে বাধার সৃষ্টি করে।
ওই সময়ের চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইও ১৯৬০ সালের এপ্রিলে নয়া দিল্লি সফরের সময় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা যোগ্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট নয়- এই ভিত্তিতে একটি সমাধান গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন।
লেখক দাবি করেন, তিনি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। চীন তার একতরফাবাদ, সশস্ত্র বাহিনীর জয়লব্ধ পবিত্র ভূখণ্ড বজায় রাখার বিশেষ নীতিতে অগ্রসর হয়। তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারত ও চীনের মধ্যকার গভীর হতে থাকা বিভাজনের পরিণতি অপরিমেয়, বিশেষ করে অন্যান্য প্রতিবেশী, বিশেষত পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
আনাদুলু এজেন্সি