কেরল মডেল : ছাতাই প্রতিরোধ করবে করোনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক | May 29, 2020 09:25 am
কেরল মডেল : ছাতাই প্রতিরোধ করবে করোনা!

কেরল মডেল : ছাতাই প্রতিরোধ করবে করোনা! - সংগৃহীত

 

কথায় বলে বর্ষায় ছাতা, শীতে কাঁথা। আর এখন কোভিড শেখাচ্ছে, বর্ষায় ছাতা। শীতেও ছাতা! বাঁচতে চাইলে বারো মাসই ছাতা ধরো মাথায়। সে রোদ হোক, বর্ষা হোক কিংবা শীত। আবার হোক না সে শরৎ, বসন্ত, হেমন্তের স্নিগ্ধ-সুখের আবহাওয়া। ছাতা বিহনে যেন না হয় বিপন্ন জীবন! কে জানত, এভাবে ছাতা একদিন হয়ে উঠবে কোভিড-যুদ্ধের বিশাল ঢাল। হারাতে বসবে তার মরশুমি-কৌলিন্য?

ছাতার এই বারোমাস্যার মাহাত্ম্য কিন্তু আগেভাগেই টের পেয়েছিল ভারতীয় রাজ্য কেরল। লকডাউন, দূরত্ব বজায় রাখার বিধি— এসব নিতান্তই গালভারি কথা। নিছকই সরকারি নির্দেশনামা মাত্র। ঘন জনবসতির দেশ ভারত। চিলতে জমিতে গাদাগাদি বাস। লকডাউন, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা এমন দেশে অনেকটা সোনার পাথর বাটির মতোই। এই সারসত্যটুকু বুঝে উঠতে একটুও সময় নষ্ট করেননি কেরলের অর্থমন্ত্রী ডাঃ টি এম টমাস আইজাক।

কোভিড-যুদ্ধে ঢাল হতে পারে, বেপরোয়া জনগণকে দূরত্ববিধি শেখাতে মোক্ষম অস্ত্র হতে পারে, ছাতার এইসমস্ত সম্ভাব্য উপকারিতা সবই ছিল ভাবনা বা চর্চার স্তরে। আলাপ্পুঝা কেন্দ্রের বাম-বিধায়ক পেশায় চিকিৎসক টমাস এতকিছু চর্চার মধ্যে ঢোকেননি। বরং ভাবনাটিকে লুফে নিয়ে নিজের কেন্দ্রের জনগণের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন একটি করে ছাতা। ফলও মিলছে হাতেনাতে। হাটে-বাজারে, রাস্তায় ‘সঙ্গরোধ’ হচ্ছে হাসিমুখেই। পুলিসের শাসানি নেই। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যারিকেড নেই। মুখে মাস্ক আর হাতে ধরা ছাতাটাই নিজের ব্যারিকেড। ব্যাস! তাতেই ঠান্ডা কোভিডের দূরন্তপনা! কোভিড নিয়ন্ত্রণে থমাসের এই ‘ছত্র-মডেল’ ইতিমধ্যেই উচ্চপ্রশংসিত হয়েছে দেশ-বিদেশে। ঠাঁই পেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্যের মানচিত্রেও।

টমাস বলছিলেন, ‘সামাজিক সঙ্গরোধে সত্যিই ছাতার কোনো বিকল্প অস্ত্র নেই। আপনি মাথার উপর ছাতা ধরে পথ চলুন। দেখবেন আপনার ধারে-কাছে কেউ ঘেঁষতেই পারছেন না। অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে সকলে আপনাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। কোভিড ভাইরাসের সাধ্যি নেই আপনাকে ছুঁয়ে দেখার।’

আর ক’দিন পরেই কেরলে ঢুকে পড়বে বর্ষা। দ্বৈতভূমিকায় ছাতাকে কাজে লাগাতে অভিনব প্রকল্প হাতে নিয়েছে টমাসের বিধানসভা কেন্দ্রের থান্নেরমুক্কম গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রকল্পটি দারিদ্র দূরীকরণের অন্তর্ভুক্ত। পরিচালনার দায়িত্বে মহিলারা। উপকূল সংলগ্ন এই পঞ্চায়েতে ২২টি ওয়ার্ড। প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ছাতা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাড়ির বাইরে পা রাখলেই ‘ছাতা ধরো হে...!’ বলে আর্জি রাখছেন প্রকল্প পরিচালকরা। বৃষ্টি পড়ুক বা না পড়ুক। রোদের তেজ থাক বা না থাক। ভর্তুকিতে পাওয়া ছাতা ফেলে রাখা চলবে না বাড়িতে। চলতি মাসেই ছ’হাজার ছাতা বিলি করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০ হাজার ছাতা বিতরণের। এবং বর্ষা নামার আগেই তা পূরণ করতে চায় পঞ্চায়েত প্রশাসন।

পঞ্চায়েত প্রধান পি এস জয়োথিসের কথায়, ‘আমাদের স্লোগানই হল মাথার উপর ছাতা ধরো। বৃষ্টি-রোদ রুখে কোভিডকেও বধ করো।’ ছাতার এমন মাহাত্ম্য কেরল বুঝতে পারল অথচ, সংক্রমণে উজাড় হয়ে যাওয়া অন্য রাজ্যগুলির চোখে এখনো ঠুলি। কেন? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন!

সূত্র : বর্তমান


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us