করোনার মধ্যেই নিউ ইয়র্কে নতুন ভাইরাস কাওয়াসাকি
করোনার মধ্যেই নিউ ইয়র্কে নতুন ভাইরাস কাওয়াসাকি - সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যেই নতুন ভাইরাসের আক্রমণ নিউইয়র্কে। এই ভাইরাস নিউইয়র্কে কমপক্ষে ৮০টির বেশি শিশুকে আক্রান্ত করেছে। ‘কাওয়াসাকি’ ঘরানার এ রোগটির সাথে কভিড-১৯-এর যোগসূত্র আছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। তবে এ সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
করোনা ভাইরাস নিয়ে তার প্রতিদিনকার সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বুধবার আরো জানান, শিশুদের মধ্যে রোগটি সংক্রমিত হলেও এখনো এর ভয়াবহতা শুরু হয়নি। আগে ‘পিএমআইএস’ নামে পরিচিত হলেও করোনাকালে এটি নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে আবির্ভূত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ব্লাজিও। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা মাত্র সপ্তাহখানেক আগেও এর দেখা পাননি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, হঠাৎ করেই শিশুদের মধ্যে কভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরই বিষয়টি নজরে এসেছে। এতে আক্রান্ত ৮২ শিশুর মধ্যে ৫৩ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ব্লাজিও।
এদিকে গভর্নর এন্ড্রু কোমো সংবাদ সম্মেলনে জানান, এক ধরণের বিষাক্ত শক সিন্ড্রোম হিসেবে চিহ্নিত ‘কাওয়াসাকি’ ঘরানার এই রোগের আবির্ভাবের কারণে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে অন্তত ১০২ শিশুকে। নিউইয়র্ক রাজ্য কর্তৃক প্রকাশিত উপাত্ত বলছে, এই রোগের লক্ষণ নিয়ে পরীক্ষা করতে আসা ৬০ শতাংশ শিশুর দেহে কভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি ও ৪০ শতাংশের দেহে করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
যার মধ্যে ৭১ শতাংশকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। ইনটিউবেশনে আছে ১৯ শতাংশ এবং হাসপাতালে ভর্তি আছে ৪৩ শতাংশ। এসব রোগীর বেশিরভাগের বয়স ৫ থেকে ৯ বছরের মধ্যে। তবে কোমো জানান, ১ থেকে ২১ বছর পর্যন্ত এ ধরণের রোগী দেখা যাচ্ছে। এতে যথাক্রমে ৫, ৭ ও ১৮ বছর বয়সী তিনজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে নিউইয়র্কের বিভিন্ন জায়গায়। এই অবস্থায় আবারো সবাইকে একযোগে সচেতন হওয়ার ও কাজ করার আহ্বান জানান কোমো। প্রাথমিকভাবে রোগটি সনাক্ত হলে অনেক শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে বলেও মন্তব্য করেন গভর্নর।
রোগটির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, জ¦র, ত্বকের ফুসকুড়ি, পেটে ব্যাথা, রক্তাক্ত চোখ, বমি ও ডায়রিয়া। এছাড়া তথ্য-উপাত্ত বলছে গায়ের রঙ ফ্যাকাশে বা নীলচে হয়ে যাওয়া, বুকে ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, তরল যে কোন কিছু পানে অসুবিধাও এর লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিষয়টিকে ভয়াবহ আখ্যা দিয়ে মেয়র ব্লাজিও বলেন, এসব লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্রই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শিশুদের সুরক্ষায় যে কোন কিছু করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। নিজেকে একজন পিতা বা অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, যেকোনো বাবা-মায়ের জন্য এটি একটি ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন।
নিউইয়র্ক ছাড়াও আরো ১৪টি রাজ্য, যার মধ্যে অন্যতম হলো ক্যালিফোর্নিয়া, কানেকটিকাট, ডেলোয়ার ও নিউজার্সি এবং ইউরোপের ৫টি দেশ, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, ইতালি ও সুইজারল্যান্ডে এই ধরণের রোগীর দেখা মিলছে।
সূত্র : সাপ্তাহিক নবযুগ