চতুর্থ দফার লকডাউনের মধ্যেও ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত দু'দিনে ভারতে নয়া আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ শতাংশ। এই ধারা অব্যহত থাকলে আগামী বুধবারের মধ্যে ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৫০ হাজারের গণ্ডি টপকে যাবে। সোমবার এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন পরিসংখ্যান বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, সোমবার ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৫ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬,৯৭৭ জনের শরীরে এই মারণ ভাইরাসের উপস্থিতির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা রেকর্ড। সব মিলিয়ে সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত বিশ্বের ১০ আক্রান্ত দেশের তালিকায় ভারতও ঢুকে পড়েছে। ভারতের নাম ১০ নম্বরে। আর তালিকায় শীর্ষে আছে আমেরিকা। অন্য দেশগুলো হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ব্রিটেন, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও তুরস্ক।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৪ জনের। মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪,০২১। ওয়ার্ল্ডমিটারস-এর তথ্য অনুসারে, মৃতের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বে ভারতের স্থান ১৫ নম্বরে।

করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার গতি অনেক শ্লথ ছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। সর্বাধিক করোনা সংক্রমিত অধিকাংশ দেশের তুলনায় এই মুহূর্তে ভারতে নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোটা বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন পরিসংখ্যানবিদরা। এমন চলতে থাকলে আগামী দিনে ভারতের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপরে আরো বড় ধাক্কা আসতে চলেছে বলে তাদের হুঁশিয়ারি।

জোড়া কারণে দেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের সাতটি রাজ্যের ১১টি পুরসভা এলাকার জন্য আগামী দু’মাস রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ। এই তালিকায় রয়েছে কলকাতাও। এই এলাকাগুলোকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এই সতর্কবার্তার কারণ, প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণের নয়া রেকর্ড হচ্ছে দেশে।

এই পরিস্থিতিতে সাতটি রাজ্যের প্রশাসন, নাগরিক-সহ সকলকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রাজ্যগুলো হলো মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ রাজস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গ৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের ৭০ শতাংশই এই রাজ্যগুলোর অন্তর্গত ১১টি পুরসভা অঞ্চলের। এই তালিকায় পড়ছে কলকাতা পুরসভা এলাকাও।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদানের পরামর্শ, করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই পুরসভার অধিবাসীদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। সাতটি রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে তার বক্তব্য, ‘পুরোনো শহরগুলির ঘনবসতি, বস্তি অঞ্চল এমনকী বহুতলেও করোনা প্রতিরোধ অভিযান চালাতে হবে। বিশেষ নজর দিতে হবে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের দিকে।'

সূত্র : এই সময়