এক লাখ কোটির বিদেশি পুঁজি উধাও ভারতের বাজার থেকে!

এক লাখ কোটির বিদেশি পুঁজি উধাও ভারতের বাজার থেকে! - সংগৃহীত
ভারত থেকে মুখ ফেরাচ্ছে বিদেশি পুঁজি। ১৬০০ কোটি ডলারের বিদেশি পুঁজি উধাও ভারতের বাজার থেকে। ভারতীয় মূল্যের হিসেবে অন্তত এক লাখ কোটির কাছাকাছি। তবে শুধু ভারতই নয়, গোটা এশিয়ার বাজার থেকে মোট ২৬০০ কোটি ডলারের বিদেশি পুঁজি তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
মার্কিন সংস্থার একটি সদ্য রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। তবুই ওই রিপোর্টে জানানো হচ্ছে, করোনা সংক্রমণ ও বিশ্বজুড়ে লকডাউনের জেরে আন্তর্জাতিক মন্দায় সামান্য রক্ষে পাবে ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়া। এই তিনটি দেশের আর্খির বৃদ্ধির হার কমলেও মাইনাসে পৌঁছবে না। আগেই একই কথা বলেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)। মার্কিন কংগ্রেসের রিপোর্ট জানাচ্ছে, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, স্পেন ও ইতালিতে ৩ কোটি মানুষ সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন।
২০২০ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ইউরোজোনের অর্থনীতির বহর কমেছে ৩.৮ শতাংশ। ১৯৯৫ সালের পর থেকে আর কোনও ত্রৈমাসিকে অর্থনীতির এতদূর সংকোচন হয়নি। আমেরিকায় ২০২০ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে সেখানকার জিডিপি কমেছে ৪.৮ শতাংশ। ২০০৮ সালে বিশ্ব জোড়া মন্দার পরে সেদেশের অর্থনীতির হাল আর কখনই এত খারাপ হয়নি। কম–বেশি সব দেশই বিদেশি পুঁজি হারিয়েছে এই সময়। তার ওপর দেশগুলির অভ্যন্তরীন উৎপাদন বন্ধ। আমদানি–রপ্তানি ব্যাহত। সব মিলিয়ে অর্থনীতি বাঁচাতে অধিকাংশ দেশের সরকারই স্টিমুলাস ঘোষণা করছে। বিদেশি পুঁজি নিজের দিকে টানতে আর্থিক নীতি ঢেলে সাজাচ্ছে। আর তাই করতে গিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কও নষ্ট হচ্ছে। জানাচ্ছে ওই মার্কিন রিপোর্ট।
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দা আসছে ভারতে!
চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের গড় জাতীয় উৎপাদন ৪৫% কমতে পারে। আশঙ্কা মূল্যায়ন সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্সের। পাশাপাশি ২০২০–২১ অর্থবর্ষে বার্ষিক গড় উৎপাদন সব মিলিয়ে ৫% কমতে পারে, জানাল তারা। গোল্ডম্যানের বক্তব্য, এমন মন্দা আগে কখনো দেখেনি ভারত। আগেও একবার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের পূর্বাভাষ দিয়েছিল গোল্ডম্যান।
সেবার বৃদ্ধির হারে ২০% হ্রাসের কথা বলেছিল তারা। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিক যখন শেষ হওয়ার মুখে, ঠিক সেই সময়ে আরো একবার ভারতের বৃদ্ধির হারে কাঁচি চালাল ওই সংস্থা। তবে পরবর্তী ত্রৈমাসিকে ভারতের সার্বিক বৃদ্ধির হার ২০% বাড়তে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছে তারা। পাশাপাশি চলতি অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিক (১৪%) ও পরবর্তী অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (৬.৫%) বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাষ আপাতত অপরিবর্তিত রেখেছে গোল্ডম্যান স্যাক্স।
ভারতের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সম্প্রতি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের আওতায় ২০ লক্ষ কোটি রুপির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। তারপরই গোল্ডম্যান স্যাক্সের এই পূর্বাভাষ মোদি সরকারের অন্দরে কাঁপুনি ধরাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ১৭ মে তারিখের একটি নোটে সংস্থার দুই অর্থনীতিবিদ প্রাচি মিশ্র ও অ্যানড্রু টিলডন জানাচ্ছেন, ‘বিগত কয়েক দিনের ঘোষণায় দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সেক্টরের পরিকাঠামোগত সংস্কারের দিকে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। এই সংস্কারের প্রভাব খুব শিরগিরই দেখা যাবে না। আমরা ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখব।’
সূত্র : আজকাল