রাফাল, এফ-২১-এর বদলে তেজাস?
রাফাল, এফ-২১-এর বদলে তেজাস? - সংগৃহীত
ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিদেশী ডিজাইনে নির্মিত শতাধিক জঙ্গি বিমান কেনার পরিকল্পনায় গত দুই দশকে সামান্যই অগ্রগতিতে হয়েছে। পরিকল্পনায় সর্বশেষ সংশোধনীটি আসে ২০১৮ সালের এপ্রিলে। ওই সময় ভারতীয় বিমান বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যে ১১৪টি জঙ্গি বিমান কেনার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে।
ভারতীয় বিমানবাহিনী একইসাথে ৬ বিলিয়ন ডলারে দেশীয়ভাবে তৈরী ৮৩ ইউনিট তেজাস বিমান কেনা নিয়েও আলোচনা করতে থাকে। ভারতীয় বিমানবাহিনী আগেই হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্যাল লিমিটেডকে (এইচএএল) ৪০টি তেজাস জেট কেনার অর্ডার দিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ভারতীয় বিমান বাহিনী বিদেশী বিকল্পের স্থানে তেজাসকে গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
ব্লুমবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে রাওয়াত বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী হালকা যুদ্ধ বিমানের (এলসিএ) অর্ডার পরিবর্তন করছে। তারা বলছে যে স্থানীয় বিমানই ভালো হবে। এটি ভালো কথা।
রাওয়াত যুক্তি দেখান যে অতিরিক্ত তেজাজ জঙ্গি বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জামে প্রধান রফতানিকারকে পরিণত হতে ভারতকে সহায়তা করবে। তিনি এক্ষেত্রে স্থানীয় বিমানের স্বল্প মূল্যের কথা বলেন।
রাওয়াত স্থানীয়ভাবে নির্মিত তেজাস জঙ্গি বিমান কেনার প্রস্তাবিত উদ্যোগকে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত অস্ত্র ব্যবহারের সূচনা হিসেবে অভিহিত করেন। রাওয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্লুমবার্গ জানায়, প্রতিরক্ষা বাহিনী স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত অনেক পণ্য ব্যবহার করে এবং কিছু কিছু ব্যাপারে মানের বিষয়টিও ওঠে আসছে। তবে এসবের মান উন্নত হবে।
রাওয়াত ব্লুমবার্গকে বলেন, আর্টিলারি গান, বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার- সবই হবে স্থানীয়ভঅবে তৈরী ব্রবস্থা। আমরা আর্টিলারি গান ও বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় ভালো করছি। আমরা আমাদের দেশে গোলাবারুদ নির্মাণের উদ্যোগও গ্রহণ করেছি।
বিদেশী বিমানের বদলে স্থানীয়ভাবে নির্মিত তেজাস গ্রহণ করা হবে ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য একটি বড় ধরনের পরিবর্তন। ১১৪টি জঙ্গি বিমানের অর্ডার লাভ করার জন্য সাতটি বিমান লড়াই করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কিন নক্সায় তৈরী এফ-১৬ এবং ফরাসি ড্যাসাল্ট রাফাল। ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ১২৬টি রাফাল জেট কেনার দরপত্র বাতিল করে ফ্রান্সের কাছ থেকে সরাসরি ৩৬টি রাফাল জেট কেনার সিদ্ধান্ত নেয়।
মজার ব্যঅপার হলো, ২০১৭ সালে বলা হয় যে ভারতীয় বিমান বাহিনী অভিযোগ করেছে যে বর্তমানে তেজাস যে অবস্থায় আছে, তাতে তারা এফ-১৬ বা সুইডিশ গ্রিপিনের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী তেজাসের দুর্বল এরিয়াল এনডুরেন্স, অস্ত্র লোড, উচ্চতর রক্ষণাবেক্ষণ খরচের কথা উল্লেখ করে।
ভারতীয় বিমান বাহিনী যে ৮৩টি তেজাস জেট কিনছে, সেগুলোতে উন্নত এমকে১এ কনফিগারেশন থাকবে। এতে আরো ভালো ইলেকট্রনিক্স, রাডার ও এয়ার-টু-এয়ার রিফুয়েলিং সক্ষমতা থাকবে।
ভারতীয় বিমান বাহিন ২০১৮ সালে প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকা সাপেক্ষে ২০১টি তেজাস এমকে২ জঙ্গি বিমান কিনবে বলে জানিয়েছিল। এটি বাস্তবে পরিণত হলে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে মোট তেজাসের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩২৪টিতে।
তেজাসকে দেশীয় বিমান বলা হলেও এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশই বিদেশে তৈরী। বর্তমান তেজাস সংস্করণে জেনারেল ইলেকট্রিক এফ৪০৪ ইঞ্জিন, ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এতে ব্রিটিশ ইজেকশন সিট, ইসরাইলি রাডার ব্যবহার করা হয়। তেজাসে রুশ ও ইসরাইলি এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রেও সজ্জিত।
দি উইক