করোনায় আমেরিকার সঙ্কট, চীনের উত্থান
করোনায় আমেরিকার সঙ্কট, চীনের উত্থান - সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র করোনাযুদ্ধে কাঙ্ক্ষিত সুবিধা করতে না পারায় বিশ্বে একচেটিয়া কর্তৃত্বে ভাটা পড়েছে। মহামারীর যে পরিণতি হোক না কেন আজকের বিশ্ব করোনার সমাধানের জন্য আর ওয়াশিংটনে ধর্না দিচ্ছে না। কিছু দিন আগে বিশ্ব নেতারা ভার্চুয়াল সভায় মিলিত হয়েছিলেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র এ সমস্যাকে ‘উহান ভাইরাস’ নামকরণ করতে গিয়ে সুবিধা করতে ব্যর্থ হয়। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন চীনকে অবদমিত করতে এই কৌশল অবলম্বন করতে গিয়ে বিশ্ব নেতাদের সমর্থন লাভ করতে পারল না। আরকানসাস রিপাবলিকান সিনেটর টম কটনও একই ধারায় চীনকে অভিযুক্ত করেছেন। তার ভাষায়, ‘চীন বিশ্বে এই প্লেগ ছড়িয়েছে, এ জন্য চীন দায়ী।’
১৯৪৫ সালে পরিসমাপ্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র যে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে তা একটি মূল সূত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত। সেটি হলো- ওয়াশিংটনের প্রয়োজনীয় কাজটি আন্তর্জাতিক কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন ও সমন্বয় করিয়ে নেয়া, সেটি প্ররোচনার মাধ্যমে হোক, ভয়ভীতি দেখিয়ে হোক বা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে হোক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দেশ এখন আর আশানুরূপ সাড়া দিচ্ছে না। বর্তমান ও নিকটাতীতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখব, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব সঙ্কট ও রাজনীতিতে প্রতারণা ও ধাপ্পাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৫৬ সালের সুয়েজ সমস্যায় ব্রিটিশদের পদক্ষেপ এবং ১৯৮০ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসন, খোমেনিকে ধরে নেয়ার ওয়াশিংটনের অপারেশন, ফিলিস্তিনে শান্তির জন্য জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা, আরব ন্যাটো বাহিনী তৈরি করা- এরূপ অসংখ্য উদাহরণ রাজনীতির মাঠে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
করোনাভাইরাসের আগ্রাসন সুয়েজ ও আফগানিস্তানের মতো ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় সমস্যা। সত্যি বলতে কি, প্লেগ এসবের চেয়ে আরো বড় সমস্যা করোনা। কেননা বিশ্বের সব দেশের মানুষ কোভিড-১৯ জ্বরে কোনো না কোনোভাবে সংক্রমিত হয়েছে ও হচ্ছে। অর্থাৎ এই গ্রহটিই এখন সংক্রমিত। এ ধরনের একটি মেগা বিষয়ে আমেরিকা দায়িত্ব নিতে ও নেতৃত্ব দিতে এখন পর্যন্ত সক্ষম হলো না, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও উন্নত হলো না।
অন্য দিকে রাশিয়ার বদলে চীনের উত্থান অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যা করোনা-পরবর্তী সময়ে আরো উজ্জীবিত হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। চীন নতুন মহামারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে; যা অন্য দেশগুলো এখনো পারেনি। চীন সবার আগে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত ইতালি ও আফ্রিকায় মেডিক্যাল টিম, পরীক্ষার কিট, ভেন্টিলেটর, ফেস মাস্ক পাঠিয়েছে। ইতালি দেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলোতে তাদের চাহিদার ক্রন্দনে কোনো প্রতিক্রিয়া না হলেও চীন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। চীনা সমাজসেবীরা বেলজিয়ামে তিন লাখ ফেস মাস্ক পাঠিয়েছে। এসব বিশেষ মুহূর্তের হলেও দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক স্থাপনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা কমা শুরু হলেও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ৮০০ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এ জন্য মিলিটারি বাজেটের ৭৪৮ বিলিয়ন ডলার খরচ পড়ে। খরচের পাহাড় গড়ালেও আমেরিকা সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও ইরাকে কাক্সিক্ষত অর্জন লাভ করতে পারেনি। ট্রাম্প কোনো যুদ্ধ শুরু করেননি, তথাপি তার যুদ্ধংদেহী গর্জন বিশ্বকে কাঁপিয়েছে। তিনি পেন্টাগনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারির ক্ষমতা বেশি প্রয়োগ করেছেন। ইরানের বিরুদ্ধে শক্ত অবরোধ, অন্য কিছু দেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধের হুমকি বহু দেশকে বিপাকে ফেলেছে। তিনি বিশ্বাস করেন ডলারের ক্ষমতাই বড় শক্তি। তিনি হিন্দু জাতীয়তাবাদী নরেন্দ্র মোদি ও জিওনিস্ট নেতানিয়াহুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন এবং উচ্চাভিলাষী দু’জন নেতা উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন এবং সৌদি আরবের মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিজ অক্ষে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
সরকারকে জনগণের ভালো করতে হয়। বিশেষ করে এই প্লেগের সময়ে। জনগণ রাষ্ট্রক্ষমতাধারীদের রক্ষাকারীভাবে। অবস্থা দেখে মনে হয় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন সে কাজটি সঠিকভাবে আঞ্জাম দিতে পারেনি। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে এখন জনগণ করোনাভাইরাস ম্যানেজমেন্টে কে বেশি পারঙ্গম তা দিয়ে মাপছে।
ট্রাম্প এখনো আমেরিকায় জনপ্রিয়। তবে বলা হচ্ছে ট্রাম্প নিউ ইয়র্ক ও বোস্টনে গুরুত্ব দেননি। যদি এই ধারা টেক্সাস ও ফ্লোরিডায় অব্যাহত থাকে তবে তার জনপ্রিয়তা বাষ্পের মতো উড়ে যেতে পারে। আরো বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন সমাজকে বিভক্ত করেছে, বাধা দেয়া না হলে এই বিভক্তি গভীরতর হবে। আমেরিকানরা বলছেন, তিনি সঠিকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারেননি।
করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে এবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে। তাই যুক্তরাষ্ট্রেই কর্মহীন হতে পারে দেশটির অগণিত মানুষ। এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে আগামী এক বছর যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি পাবেন না ভারতীয় ও চীনা নাগরিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, এক কোটি মার্কিন নাগরিক বেকারত্ব ভাতার জন্য আবেদন করেছেন। অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, এপ্রিলের শেষ নাগাদ বেকারের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি হতে পারে। বেকার তারা যারা চাকরি হারিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় টিকে থাকতে রেস্তোরাঁ, হোটেল, ব্যায়ামগার, সিনেমা হলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাই করছে। ট্রাম্প করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে চীনের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন। তার মতে, ভাইরাসটির যেখানে উৎপত্তি হয়েছিল সেখানেই এটি শেষ হয়ে যেতে পারত। তিনি মনে করেন, জার্মানি করোনার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হিসেবে চীনকে ১৬৫ বিলিয়ন ডলার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণের জন্য চীনকে চাপ দিতে পারে।
লিডারশিপ নিয়ে আমেরিকা ও চীনের ভুল বোঝাবুঝিতে মাইক পম্পেও আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছেন এবং চীনকে বিশ্ব প্রোপাগান্ডা যুদ্ধে নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন। তিনিও মনে করেন, চীন থেকেই তো এমন প্রাণঘাতী রোগের সূত্রপাত হয়েছে। তাই চীনের দায়দায়িত্ব রয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ২৭৪ মিলিয়ন ডলার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, প্রায় ৬৪টি দেশে এই সহায়তা দিতে হবে। জানা যায়, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ভারত, কাজাকিস্তান অগ্রাধিকার পাবে। উহানে ভাইরাস প্রাদুর্ভাব হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র উহানে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিল। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র হুকে ৪০০ মিলিয়ন অনুদান দেয়, চীন দেয় ৪৪ মিলিয়ন। তা ছাড়া ইউনিসেফকে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে ৭০০ মিলিয়ন দেয়, চীন দেয় ১৬ মিলিয়ন। ইউনিসেফ জানুয়ারির শুরুতে চীনের উহানে ব্যবহারের জন্য ৬ টন respiratory masks and protective suits প্রদান করে। বিস্তারিত জানতে মেথিও ক্রোয়িং এর ‘The Return of Great Power Rivalry: from the Ancient World to the U.S. and China’ বইটি পড়া যেতে পারে। পশ্চিমারা মনে করেন, মহামারী রোধের জন্য গণতান্ত্রিক সরকার দরকার এটোক্রেটিক নয়। এসব উপাত্ত প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্রের দাপট কমেনি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পুরোমাত্রায় প্রভাব ফেলেছে। যেখান থেকে ভাইরাসের উৎপত্তি সেখানে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে এই ভাইরাস প্রাণঘাতী আক্রমণ চালিয়েছে; যে কারণে সরকার, রাজনীতি, অর্থনীতি সবই আগের বিশ্বব্যবস্থা থেকে ছিটকে যেতে শুরু করেছে। ভাইরাসের প্রভাববলয় এখন যেন রাজনীতির পরিচালক।
যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করছে। অর্থনীতির কথা এখন সবখানেই আলোচিত হচ্ছে। বিশ্ব স্টক মার্কেট, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ায় গত ১২০ বছরে এমন অভাবনীয় পতন হয়নি। বিশেষ করে ট্রাম্পের ইউরোপের ওপর ৩০ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রদানের পর এই পতন তীব্রতর হয়ে ওঠে। এর যুৎসই কোনো কারণ অর্থনীতিবিদরা এখনো দেননি। মাত্র এক দিনে, ওয়ালস্ট্রিট সূচকে Nasdaq, Dow Jones, and S&P ৯ শতাংশ দরপতন পরিলক্ষিত হয়। ২১ শতকে এমনটি আর দেখা যায়নি। যদি করোনার দাপট আরো সময় ধরে চলতে থাকে তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি আরো বেড়ে যাবে এবং ক্যাপিটালিস্ট অর্থনৈতিক সিস্টেমে নতুন সঙ্কটের সৃষ্টি হবে।
ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের আরো প্রাদুর্ভাব ট্রাম্পের রাজনীতিতে ভর করবে। ট্রাম্প চান খুব তাড়াতাড়ি ভাইরাসের একটি যুৎসই ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে এবং এই ওষুধ বাজারজাত করে করোনা ড্রাগ ব্যবসাকে হাতের মুঠোয় আনতে। ট্রাম্প নির্বাচনে জেতার জন্য অর্থনৈতিক অর্জনগুলোকে এবং বেকারদের চাকরির ব্যবস্থার বিষয়গুলোকে ‘উইন কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করতে চান। করোনায় আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতিকে মূল ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে ট্রাম্পের জন্য সেটি বিপর্যয়কর হবে তাতে সন্দেহ নেই।
ট্রাম্প ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে প্রথম দিকে গুরুত্ব না দেয়ায় সঙ্কট আরো ঘনীভূত হয়েছে বলে সমালোচকরা মনে করেন। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানো বার্নি সান্ডার্স বলেন, ‘জনগণের সাথে সরকারের কোনো অসত্যের আশ্রয় নেয়া সঠিক নয়।’ সবার কল্যাণের জন্য তিনি সবাইকে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থার আহ্বানও জানান। মিডিয়া এর আগে সতর্ক করেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাস মহামারীতে দুই লাখ মারা যেতে পারে। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে ১১ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে এবং ৬৮ হাজারের বেশি মৃত্যুবরণ করেছে (৪ মে হিসাবানুসারে)।
গত চার দশকে আমেরিকার অর্থনীতির সাইজ দ্বিগুণ হয়েছে। ভাইরাস জাতীয় অর্থনীতি ও স্টক মার্কেটকে টেনে নিচে নামিয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে এই মহামারী আরো কঠিন ও তীব্র আঘাত হানতে পারে। গত তিন বছরে ট্রাম্প অর্থনীতির উন্নয়ন ও উচ্চহারে গ্রোথ রেটের কথা বলেছেন। তাই অনেকে মনে করেন হোয়াইট হাউজে নেতৃত্ব ট্রাম্পের ভাগ্যে দোদুল্যমান। এখন ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে করোনা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে তাকে হারাতেই চীন করোনাভাইরাস বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে এবং তাকে হারাতে বেইজিং ‘সম্ভব সব কিছু করবে’। তিনি জানান, চীন বিশ্বকে যথাযথ সতর্ক না করায় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ চালনা করায় চীন জো বাইডেনের দিকে ঝুঁকেছে। মনে হচ্ছে আসন্ন নির্বাচন ও করোনার দাপটে রিপাবলিকান শিবির দিশেহারা। প্রসঙ্গত, জো বাইডেনও কোনো ভালো অবস্থানে নেই। ভোটাররা বোঝেন কী কারণে দুরবস্থার সৃষ্টি।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার