কুরআন খতমের পর কোন দোয়া পড়তে হয়?
কুরআন খতমের পর কোন দোয়া পড়তে হয়? - সংগৃহীত
প্রশ্ন : কুরআন খতমের পর দোয়া পড়ার নিয়ম কী?
- মো: সাখাওয়াত হোসাইন
মাওলানা লিয়াকত আলী : কুরআন মজিদ খতম করার পর দোয়া পাঠের নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যেহেতু পুরো কুরআন মজিদ একবার পাঠ সম্পন্ন করতে পারা আল্লাহর বিশেষ রহমত ও তাওফিকের প্রমাণ, এজন্য এ সময়ে আল্লাহর প্রশংসা ও তার রাসূলের নামে দরুদ পাঠ করাই শ্রেয়। একই সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং কুরআন মজিদের নূর ও বরকত লাভের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা ভালো। পাশাপাশি পার্থিব কোনো বৈধ প্রয়োজন মেটানোর জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানানো দোষের নয়। বিভিন্ন মূদ্রণালয়ের কুরআন মজিদের শেষে যে এক বা একাধিক দোয়া ছাপা দেখা যায়, তা সুন্দর অর্থবহ। যিনি অর্থ বোঝেন, তিনি এগুলো পাঠ করতে পারেন। এতে কুরআনের প্রতি তার ঐকান্তিকতা ও নিবিষ্টতা বাড়বে। তবে এটি জরুরি নয়। সুতরাং কেউ পাঠ না করলে ক্ষতি হবে না।
প্রশ্ন : আল্লাহ তায়ালা কোনো কিছু করার ইচ্ছা করলে বলেন ‘কুন’/ হও, তা হয়ে যায়। তবে ফেরেশতাদের দায়িত্ব দেয়া হলো কেন? আল্লাহ তায়ালা তো অমুখাপেক্ষী।
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির : ফেরেশতাদের দায়িত্ব দেয়া শুধু একটি সিস্টেম রক্ষা। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
প্রশ্ন : মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে কুরআন পড়তে অজু লাগবে কি না?
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির : কুরআন পড়তে অজু লাগে না। কুরআন ধরতে অজু লাগে।
প্রশ্ন : আমি একজন মুফতিকে বলতে শুনেছি যে, ইফতারিতে আগুনে তৈরি খাবার (বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি ইত্যাদি) খাওয়া সুন্নাহ নয়, রাসূল সা: ইফতারিতে আগুনে তৈরি খাবার খেতেন না। ওই মুফতি বলেছেন, আপনারা ইফতারিতে ফল, পানি এসব খাবার খাবেন এবং আগুনে তৈরি খাবার যদি খেতে চান তবে তা নামাজের পর খাবেন, তাহলে ইফতারির সুন্নাত আদায় হবে। এ কথাটা কি সত্য?
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর : ইফতারিতে যে কোনো হালাল খাবার খাওয়া যাবে। রাসূলুল্লাহ সা: খেতেন না তাই খাওয়া যাবে না এ কথা ঠিক নয়। খাবারের ক্ষেত্রে এমন বিধিনিষেধ ঠিক নয়।
সূত্র : আস সুন্নাহ ট্রাস্ট
প্রশ্ন : রোজার নিয়ত কি মুখে উচ্চারণ করে পড়তে হবে, নাকি মনের নিয়তই যথেষ্ট? আর যদি মুখে নিয়ত করতে হয়, তাহলে কি আরবিতে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ত করতে হবে?
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির : রোজার নিয়ত মুখে করতে হবে না, নিয়ত মূলত হৃদয়ের বিষয়। যেভাবে নিয়ত বানানো হয়েছে এগুলো হাদিসে নেই।
প্রশ্ন : আমি প্রত্যেক সপ্তাহে দুটি সওম করি (সোম ও বৃহস্পতি)। আমার সাহরি হলো- রাতে স্টাডি শেষ করে সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে থাকি। রমজানের মতো আর আলাদা কোনো খাবার খাওয়া হয় না। আমার রোজার কি কোনো সমস্যা হবে?
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির : সিয়াম হবে। তবে শেষ রাতে সাহরি খাওয়া সুন্নত এবং সাহরি বরকতময় খাবার।
সূত্র : আস সুন্নাহ ট্রাস্ট
প্রশ্ন : শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষার সময় রোজা না রাখার ছাড় আছে কি? - এনামুল হক
মাওলানা লিয়াকত আলী : রমজান মাসে রোজা পালন করা ইসলামের পাঁচ বুনিয়াদি বিষয়ের একটি। এ মাস যে ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করবে তাকে রোজা রাখার আদেশ করা হয়েছে কুরআন মজিদে। পাশাপাশি রোজা না রাখার ছাড় হিসেবে দু’টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। যথা- অসুস্থতা ও সফর। সুতরাং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বা পরীক্ষার প্রস্তুতিকে রোজা না রাখার ছাড়ের কারণ হিসেবে গণ্য করার অবকাশ নেই। তবে কর্তৃপক্ষের উচিত পরীক্ষার সময়সূচি এমনভাবে তৈরি করা, যাতে শিক্ষার্থীদের রোজায় ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়। যদি অনিবার্য কারণ বা পরিস্থিতিতে রোজার সময় বা রমজানের অব্যবহিত পরে পরীক্ষা পড়ে, তাহলে মুসলিম শিক্ষার্থীদের মনোবল থাকা উচিত রোজা রেখেও পরীক্ষা দেয়া বা প্রস্তুতি গ্রহণ করা। এতে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।