করোনায় বিলুপ্তির পথে ইকুয়েডরের এক উপজাতি
করোনায় বিলুপ্তির পথে ইকুয়েডরের এক উপজাতি - সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের হানায় ভীত-সন্ত্রস্ত গোটা মানবজাতি। এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি ওষুধ বা ভ্যাকসিন। ফলে কমছে না মারণ এই ভাইরাসের দাপট। এর মধ্যেই আবার করোনার কারণেই বিলুপ্তির পথে গোটা একটি উপজাতি। এর মধ্যেই ইকুয়েডর–পেরু সীমান্তের আদিবাসীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের কারণে এক অন্য আতঙ্ক তৈরি করেছে। দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলীয় এই দেশের এখানকার বাসিন্দা, সিয়েকোপাই নামে পরিচিত এক উপজাতি আশঙ্কা করছে, এই মহামারির কারণে তাদের গোটা সম্প্রদায়ই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। আ তা হলে পৃথিবী একটি বড় ঐতিহ্য থেকে বঞ্চিত হবে।
ইতিমধ্যে এই সম্প্রদায়ের অনেকেই আমাজনের ঘন জঙ্গলে পালিয়ে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করছে। কিন্তু এর ফলে বিপদ কমছে না। ঘন বনে গিয়ে তারা রক্ষা পাবে, এমন নিশ্চয়তাও নেই।
তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান মাত্র ৭৫০ মানুষ রয়েছেন এই উপজাতীয় গোত্রটিতে। একসঙ্গেই বাস করেন তারা। কিন্তু তাদের মধ্যে ১৫ জন করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। ইতিমধ্যেই দু’জন বয়স্ক মানুষ কোভিড–১৯ আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। ফলে আতঙ্ক ক্রমে বাড়ছে। অনেকেই ভয় পেয়ে ইতিমধ্যেই আমাজনের জঙ্গলে পালিয়ে গেছে।
ইকুয়েডরে ইতিমধ্যে এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার জন। মৃত্যু হয়েছে ১৭০০–রও বেশি মানুষের। পরিকাঠামো ও পরিষেবা একেবারেই না থাকায় চিকিৎসা মিলছে না বহু মানুষের। হাসপাতালেও পৌঁছতে পারছেন না অনেকেই। ঘরেই থেকে মারা যাচ্ছেন। লাশ নিয়ে যাওয়ারও লোক নেই। ফলে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকছে লাশ।
ভাইরাসটি নিয়ে মারাত্মক আতঙ্কে রয়েছে গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে সিয়েকোপাই উপজাতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই তাদের বহু মানুষের মধ্যে এই রোগের উপসর্গ দেখা গেছে। তারা প্রশাসনকে সে বিষয়ে জানিয়েওছেন। কিন্তু পরীক্ষা বা তার পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি প্রশাসনের তরফে, এমনই অভিযোগ তুলেছেন তারা। তাদের এও দাবি, স্থানীয় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, তাদের সাধারণ জ্বর হয়েছে, কোভিড হয়নি।
সূত্রের খবর, গত মাসে সেখানে প্রথম মৃত্যু ঘটে এক প্রবীণ ব্যক্তির। তার পরেই সিয়েকোপাই নেতারা ইকুয়েডরের সরকারকে সকল বাসিন্দাদের পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তাদের। তাদের দাবি, এর আগেও বহু অসুখ বিসুখের শিকার হয়েছেন তারা। বহু মানুষ মারা গেছেন। এখন যে সংখ্যক মানুষ বেঁচে আছেন, তারা মহামারীর কবলে পড়লে গোটা সম্প্রদায়ই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আতঙ্কে এবং নিরাপত্তার খোঁজে বেশ কিছু শিশু এবং বয়স্ক মানুষকে নিয়ে অ্যামাজনের গভীরে ইকুয়েডরের অন্যতম বৃহত্তম জলাভূমি লেগার্টোকোচায় আশ্রয় নিয়েছেন সিয়েকোপাই মানুষদের কিছু প্রতিনিধি।
স্থানীয় প্রধানের থেকে জানা গেছে, অসুস্থরা অনেকেই গাছগাছড়া খেয়ে বাঁচার চেষ্টায় আছেন।
সূত্র : আজকাল