উত্তরপ্রদেশে অস্থায়ী কারাগারে তাবলিগ নেতার মৃত্যু, তদন্তের নির্দেশ
নাসিম আহমেদ - সংগৃহীত
উত্তর প্রদেশের জৌনপুর জেলায় তাবলিগ জামাতের আমীর নাসিম আহমেদ (৬৫) অস্থায়ী কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
‘নবভারত টাইমস’ জানিয়েছে, জেলা প্রশাসন ওই তাবলিগ নেতাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করে। কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাকে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্মিত অস্থায়ী কারাগারে রাখা হয়েছিল। তিনি এখানে অসুস্থ হলে বারাণসীতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে তাকে আবারো জৌনপুরের অস্থায়ী কারাগারে পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার রাতে ফের হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি হয়। এসময় তাকে জৌনপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। বারাণসীর কমিশনার দীপক আগরওয়াল তাবলিগ জামাত নেতার মৃত্যুতে ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের কথা বলেছেন।
জৌনপুরে অস্থায়ী কারাগারে রাখা জেলা তাবলিগ জামায়াতের প্রধান নাসিম আহমেদের বিরুদ্ধে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে ফেরা বাংলাদেশী নাগরিকদের আশ্রয় দেয়া এবং তাদের সম্পর্কে তথ্য গোপন করার অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল।
জৌনপুর শহরের ফিরোজপুরের বাসিন্দা নাসিম আহমদকে গত ২ এপ্রিল পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। করোনার সংক্রমণের আশঙ্কায় পুলিশ তাদেরকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠায়। সেখানে তাদের শরীরে করোনা ধরা পড়েনি। যদিও পরে তাদেরকে অস্থায়ী কারাগারে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে তার স্বাস্থ্যের আরো অবনতি ঘটে এবং পরে তাকে জৌনপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এসডিএম সদর এবং অস্থায়ী কারাগারের সুপার নীতীশ কুমার সিং বলেন, কারাগারে রাখা আটককৃতর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি মারা যান। তার হৃদরোগ ছিল। পোস্টমর্টেমের পরে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এনিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
ওই তাবলিগ নেতার বিরুদ্ধে ১৪ জন বাংলাদেশীসহ ১৬ তাবলিগ জামাত সদস্যকে একটি বড় মসজিদ থেকে সরিয়ে নিয়ে লাল দওয়াজা এলাকায় একটি বাড়িতে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ ছিল।
এদিকে, অস্থায়ী কারাগারে তাবলিগ জামায়াতের জেলা প্রধানের মৃত্যুর পরে সেখানে থাকা অন্য তাবলিগ সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
বারাণসীর কমিশনার দীপক আগরওয়াল বলেন, বিদেশী তাবলিগ জামাতের সদস্যদের আশ্রয় দেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তিনি হার্টের রোগী ছিলেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের পরে এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করা হবে।
মরহুম নাসিম আহমেদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, ব্যবস্থাপনার অবহেলার কারণে নাসিম আহমেদ মারা গেছেন। মরহুম নাসিমের ঘনিষ্ঠ মুহাম্মাদ শোয়েব জানান, নাসিমের আগেও সমস্যা ছিল। নয়াদিল্লীর স্যার গঙ্গারাম এবং লক্ষনৌয়ের পিজিআই হাসপাতালে তার চিকিত্সা করা হচ্ছিল। পুলিশ কর্মকর্তাদের বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাকে বাড়িতে যেতে দেয়া হয়নি। যার কারণে তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে এবং তিনি মারা যান।
সূত্র : পূবের কলম