ভারতের পাঠানো হাইড্রক্সিক্লরোকুইনের মান ভালো নয়, তাই কাজ হচ্ছে না!
হাইড্রক্সিক্লরোকুইন - সংগৃহীত
ভারত থেকে যে হাইড্রক্সিক্লরোকুইন পাঠানো হচ্ছে সেগুলোর কোয়ালিটি ভালো নয়। এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন এক মার্কিন বিজ্ঞানী। তিনি আরো বলেছেন, সময় থাকতেই করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসনকে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তার আমলারা কথায় কান দেননি। যার ফলে আমেরিকায় এই ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করার পরই সেই বিজ্ঞানী ট্রাম্প প্রশাসনের রোষের মুখে পড়েছেন। তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমেরিকার স্পেশাল কাউন্সিল অফিসে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার অভিযোগ বিবেচনা করা তো হয়ইনি, উল্টে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
ভারত থেকে যে সব সংস্থা হাইড্রক্সিক্লরোকুইন পাঠাচ্ছে সেগুলোর গুণগত মান বিচার করা হয়নি। তাড়াহুড়ো করে অন্ধের মতো ওষুধ কেনা হয়েছে। এমনই অভিযোগ করেছেন সেই মার্কিন বিজ্ঞানী। তিনি বলেছেন, ফেডেরাল ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশন ভারত থেকে হাইড্রক্সিক্লরোকুইন ওষুধ রপ্তানি করা কোম্পানিগুলো সম্পর্কে কোনো খোঁজ—খবর নেয়নি। মূলত ম্যালেরিয়ার চিকিত্সায় ব্যবহৃত হওয়া হাইড্রক্সিক্লরোকুইন। কিন্তু ভারত থেকে যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে সেগুলির গুণগত মান ভালো নয়। ফলে এই ওষুধ কোনো রোগীকে দেয়া হলে তার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি। সেই বিজ্ঞানী বলছেন, তিনি সরকারকে এই ওষুধের গুণগত মান সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন সরকার সব কিছু জেনেও ভারত থেকে আসা ওষুধ ব্যাপক হারে বাজারে ছেড়ে দিয়েছে।
ডক্টর ব্রাইট নামের সেই বিজ্ঞানী বায়োমেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ ডেভলপমেন্ট অথরিটি—র প্রধান ছিলেন। উল্লেখ্য, প্রথম দফায় দুটি জাহাজে করে ভারত থেকে ব্যাপক পরিমাণে হাইড্রক্সিক্লরোকুইন ওষুধ আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল। এর পর আকাশপথেও ওষুধ পাঠানো হয় ট্রাম্পের দেশে।
সূত্র : জি নিউজ
রেমডেসিভির তৈরি হবে ভারতে?
করোনাভাইরাসের প্রতিরোধী ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ সফল বলে দাবি করেছেন গবেষক-বিজ্ঞানীরা। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সাফল্যের পর ওই ওষুধ প্রয়োগের অনুমোদনও দিয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এ বার সারা বিশ্বেই শুরু হলো সেই ‘রেমডিসিভির’ তৈরির প্রস্তুতি। আমেরিকার প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘জিলিয়াড’ জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান-সহ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে যাতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ওষুধ তৈরি শুরু হয়ে যায়, সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে সংস্থা। তবে কোন কোন সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেনি ওই সংস্থা।
প্রায় চার মাস ধরে বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়লেও এখনো কার্যত তার কোনো নিশ্চিত প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কার হয়নি। একমাত্র আশার আলো দেখিয়েছে ‘জিলিয়াড সায়েন্সেস আইএনসি’-র অর্থসাহায্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি ওষুধ রেমডিসিভির। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এই রেমডিসিভির করোনার বিরুদ্ধে ভাল কাজ দিয়েছে বলে দাবি করেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। গত সপ্তাহেই সেই ওষুধ প্রয়োগের অনুমোদনও দিয়েছে আমেরিকার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনস্ট্রেশন’।
তার পর থেকেই বিশ্ব জুড়ে এই ওষুধের চাহিদা আকাশচুম্বি। সব দেশই চাইছে ওই ওষুধ পেতে বা নিজেদের দেশে তৈরি করতে। সেই প্রক্রিয়াই এগোতে শুরু করল জিলিয়াড। সংস্থার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (মার্কিন সময়) বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি লাইসেন্সের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের ওষুধ প্রস্তুতকারী একাধিক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। এই ওষুধ তৈরিতে প্রযুক্তিসহ যাবতীয় সহায়তা করবে জিলিয়াড।
আবার মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, মে মাসেই রেমডিসিভির তৈরি শুরু করবে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ ছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গেও ওষুধ তৈরি করা নিয়ে কথা চলছে বলে জিলিয়াড জানিয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলে একটি কনসর্টিয়াম তৈরির চেষ্টা চলছে, যাতে সারা বিশ্বে প্রচুর পরিমাণে এই ওষুধ পৌঁছে দেওয়া যায়।
জিলিয়াডের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, প্রথম ১৫ লক্ষ রেমডেসিভির দান করা হবে। অর্থাৎ কোনো দাম নেওয়া হবে না। আরও বলা হয়েছিল, ওই ওষুধের দাম যাতে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা