আল্লামা যুবায়ের আনসারীর জানাজায় অংশগ্রহণকারী কারো মধ্যে করোনা উপসর্গ নেই, ১৪ দিন পর গ্রামগুলো ঝুঁকিমুক্ত
আল্লামা যুবায়ের আনসারীর জানাজায় অংশগ্রহণকারী কারো মধ্যে করোনা উপসর্গ নেই, ১৪ দিন পর গ্রামগুলো ঝুঁকিমুক্ত - নয়া দিগন্ত
বাংলাদেশ খেলাফত ইসলামের সাবেক সিনিয়র নায়েবে আমির, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখ্যাত মুফাচ্ছেরে কোরআন, জামিয়া রাহমানিয়া বেড়তলা সরাইল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মরহুম আল্লামা হাফেজ যুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানজায় অংশগ্রহণকারী করো মধ্যে করোনাভাইরাস উপসর্গ দেখা দেয়নি। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জানজায় অংশগ্রহণকারী জনস্রোতকে কেন্দ্র করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির আশঙ্কা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাজাস্থলের আশপাশের ১০টি গ্রামে লকডাউন করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ১৮ এপ্রিল লকডাউন করা ১০ গ্রামের জনসাধারণের সীমিত চলাচলের পাশাপাশি সেখানকার লোকজনকে ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার আদেশ শুক্রবার (১ মে) শেষ হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জানজায় অংশ নেয়া লোকদের বসবাসস্থল আশেপাশের ১০টি গ্রামের কারো মধ্যে গত ১৪ দিনে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ পাওয়া যায়নি। গ্রামগুলো আপাতত ঝুঁকিমুক্ত ও স্বাভাবিক মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাস পাড়ায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন আল্লামা হাফেজ যুবায়ের আহমদ আনসারী। পর দিন সকাল ১০টায় সরাইল উপজেলার জামিয়া রাহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতিতে পুরো জেলা লকডাউন থাকা সত্ত্বেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাজার হাজার আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ জানজায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় জানাজার মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে পাশের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ১ কিলোনিটার এলাকাজুড়ে মহাসড়কে কাতারবন্দী হয়ে মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
জনতার ঢল থামাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে সরাইল সার্কেলের এএসপি মাসুদ রানা, সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো ও একই থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল হককে প্রত্যাহার করা হয়। সেইসাথে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে পুলিশ বিভাগ।
জানাজার পর বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের মন্তব্য করার পাশাপাশি জানাজা স্থলের আশপাশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করেন অনেকেই। কিন্তু ১০ গ্রামের হোম কোয়ারান্টাইনের ১৪ দিন পার হলেও সেখানে কোনো প্রকার করোনার লক্ষণ দেখা না যাওয়ার খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এই আলেমে দ্বীনের জানাজাকে কেন্দ্র করে লকডাউন করা গ্রামগুলোতে করোনা লক্ষণ দেখা না যাওয়ার খবরে খুশি এলাকাবাসী। জীবনের বেশিরভাগ সময়ে পবিত্র কোরআনের খাদেম হিসেবে দ্বীনের খেদমতে থাকায় মহান আল্লাহপাক দুনিয়াতে যেমন আল্লামা হাফেজ যুবায়ের আহমেদ আনসারীকে শান মান দান করেছিলেন তেমনি আখেরাতেও তাকে বেহেশতের উঁচু মাকাম দান করার জন্য দোয়া করেছেন হাজার হাজার আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ।