নতুন ফন্দি আঁটছেন কিম জং!
কিম জং - সংগৃহীত
বিশ্বাসযোগ্য কথা কে বলছে এখন সেটাই প্রশ্ন। উত্তর কোরিয়ার নেতাকে নিয়ে একাধিক খবর প্রকাশ্যে এসেছে। যার মধ্যে একটিরও সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি। এবার কিম জংকে নিয়ে বেরিয়ে এলো আরও এক খবর। স্বৈরাচারী শাসক কিম জং উনের গুম হয়ে যাওয়া নিয়ে নয়া তত্ত্ব প্রকাশ করল কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার সংবাদমাধ্যমগুলির মতে, কিমের একাধিক দেহরক্ষী করোনা ভাইরাসে কাবু। তাই নিজেকে বাঁচাতে রাজধানী পিয়ংইয়ং ছেড়ে উনসানের পাহাড়ি রিসর্টে গা ঢাকা দিয়েছেন কিম। সেখানে কঠোর নিরাপত্তা, চিকিত্সকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। তবে কিম সুস্থ রয়েছেন। অন্য আরেকটি মহল মনে করছে, করোনার চলতি আবহে নিজেকে বাঁচাতে আগামী কয়েক মাসের জন্য করোনা সংক্রমণ এড়াতেই নিজে সপারিষদ গা ঢাকা দিয়েছেন সর্বাধিনায়ক কিম।
আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবেই কিম এই পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু এই দুটি তত্ত্বের সমর্থনে কোনো জোরালো প্রমাণ নেই। তবে কিম যেখানেই থাকুন না কেন তিনি যে বোন কিম ইও জং এবং দু-তিনজন বিশ্বস্ত সেনা জেনারেলের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। আমেরিকা ও রুশ গুপ্তচর সংস্থার সন্দেহ, হয়তো অস্ত্র পরীক্ষা চালানোর আগে নতুন কোনো ফন্দি আঁটছেন তিনি। এমনও হতে পারে কিম ইচ্ছে করেই নিজের শারীরিক অসুস্থতার খবর ও হার্টে অস্ত্রোপচারের খবর রটিয়ে দিয়েছিলেন। নিজেকে নিয়ে পশ্চিমি দুনিয়ার কাছে একটা বিভ্রান্তি ও ধোঁয়াশা বজায় রাখতেই এটা তিনি করেছিলেন।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার মন্ত্রী কিম ইয়ন চুল বলেছেন, আমরা জানি কিম জং উন কোথায় রয়েছেন। উনি জীবিত আছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, 'আমার সঙ্গে কিম জং উনের খুব ভালো সম্পর্ক। আমি যদি আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট না হতাম তাহলে এত দিনে হয়তো কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধই করতে হকো আমেরিকাকে। কারণ সম্পর্কটা তলানিতে এসে ঠেকেছিল। কিমের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পরই সম্পর্কটা মেরামত করেছি আমরা। আমি জানি উনি এখন কেমন আছেন। কিছুদিন পরই আপনারাও জানতে পারবেন। এখন আমি কিছু বলতে পারব না। তবে আশা করি উনি ভালোই আছেন।
রহস্যময় শৈশব এবং বয়স নিয়ে ধোঁয়াশা
নিজের ছোটবেলার ছবি দেখাতে এক্কেবারেই পছন্দ করেন না কিম। তবে ২০১৪ সালের সামরিক ছুটিতে উত্তর কোরিয়ায় বড় পর্দায় একটি ছবি দেখানো হয়েছিল। মনে করা হয়, এটিই কিমের শৈশবের ছবি।
নিজেকে বয়স্ক হিসেবেই দেখাতে পছন্দ করেন উত্তর কোরিয়ার শাসক। তার জন্মের সাল এবং তারিখ নিয়ে নানান ধন্দ্ব এবং ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছেন কিম নিজেই। কোথাও বলা হয় কিমের জন্ম ১৯৮২ সালে। কোথাও আবার ১৯৮৩। এমনকি কোথাও কোথাও কিমের জন্মের সাল ১৯৮৪ ও করা হয়েছে। শুধু সাল নয়।
জন্ম তারিখ নিয়েও বিস্তর ধন্দ্ব। যে সমস্ত জায়গায় এই সালগুলো লেখা হয় সেখানে কিমের জন্ম তারিখ হিসেবে হয় ৮ জানুয়ারি না হলে ৬ জুলাই লেখা হয়। তবে কিম কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের জন্মের সাল লেখেন ১৯৮২। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার এক গোয়েন্দা সংস্থা বিগত কিছু বছর আগেই জানিয়েছিল কিমের জন্ম ১৯৮৪ সালে।
অন্য নামে পড়াশোনা
১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল অবধি তিনি সুইৎজারল্যান্ডের বিখ্যাত Liebefeld-Steinhölzli পাবলিক স্কুলে পড়াশোনো করেন। উত্তর কোরিয়ান দূতাবাসে তার রেজিস্ট্রেশন অবশ্য হয়েছিল ভিন্ন নামে। অর্থাৎ কিম জং উন নিজের পরিচয় গোপন করে পড়াশোনা করেছেন।
ছবি দেখে কিম বা উত্তর কোরিয়ার তরফে বিষয়টি স্বীকার না করা হলেও, তার ওই সময়ের সহপাঠীরা এখন হলফ করে বলেন যে তাদের বন্ধুই এখন বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর এক রাষ্ট্র নায়ক। পাশাপাশিই কিম জং উনের সহপাঠীরা এ-ও বলেন যে, ছাত্র হিসেবে মোটেই ভালো ছিলেন না উত্তর কোরিয়ার দোর্দণ্ডপ্রতাপ শাসক। যদিও পদার্থবিজ্ঞান এবং অর্থনীতিতে ডিগ্রি রয়েছে কিম জং উনের।
বিয়েতে স্ত্রীকে ব্যয়বহুল উপহার
২০০৯ সালে কিছুটা লুকোছাপা করেই রি সোল জু-কে বিয়ে করেছিলেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম। দেশের মানুষও কিমের বিয়ের কোনো খবর পাননি।
তবে সেই সময়ে নানান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিয়ের দিন স্ত্রীকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি উপহার দিয়েছিলেন কিম জং উন। আর সেটি ছিল একটি হ্যান্ডব্যাগ। হ্যান্ডব্যাগ হলে কী হবে? সেই ব্যাগ বিখ্যাত সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান ডায়ারের। হান্ডব্যাগটির দাম প্রায় ১৪৫৭ ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকার মূল্যে সেই ব্যাগের দাম প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার টাকার বেশি।