গণস্বাস্থ্যের করোনা কিট কিনবে সরকার!
গণস্বাস্থ্যের করোনা কিট কিনবে সরকার! - সংগৃহীত
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিজস্ব ল্যাবে তৈরি করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে এই কিট সরকার কিনবে বলেও জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র যে কিট উদ্ভাবন করেছে তার কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) বা আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআরবি) এ পরীক্ষা করা যাবে। এর আগে গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে এই কিট অধিদপ্তরে জমা দিতে গেলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। পরে অবশ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল ওই কিট ভেরিফিকেশন করতে বলা হয়েছিল গণস্বাস্থ্যকে।
অর্থাৎ গণস্বাস্থ্যকে আর নিয়ম অনুযায়ী কন্ট্র্যাক্ট রিসার্চ ফার্মের (সিআরও) দ্বারস্থ হতে হচ্ছে না।
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র বিএসএমএমইউতে পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আসছিল। আজ সরকারি এই সিদ্ধান্তের পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকার ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও অন্যতম ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, কিট পরীক্ষার অনুমতি দিয়ে ওষুধ প্রশাসন একটি চিঠি দিয়েছে বৃহস্পতিবার। অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে বিএসএমএমইউ’র ভিসিকেও বিষয়টি অবহিত করেছে।
তিনি জানান, কিট পরীক্ষার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে নিয়ম অনুযায়ি আবেদন করেছে।
আগামী দুই এক দিনের মধ্যে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
গত শনিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র করোনা পরীক্ষার এ কিট আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে। ওই দিন সরকারের ওষুধ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা কেউ যাননি। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) কিটের নমুনা সংগ্রহ করে। পরে ওই প্রতিষ্ঠান কিট পরীক্ষার আগ্রহ জানিয়ে ৮০০ নমুনা চেয়েছে গণস্বাস্থ্যের কাছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এই নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
গত রোববার উদ্ভাবিত কিট ওষুদ প্রশাসন অধিপ্তরে জমা দিতে যায় গণস্বাস্থ্যের একটি প্রতিনিধি দল। তবে ওই দিনও কিট গ্রহণ করা হয়নি। ওই দিন কিটের ভেরিফিকেশনের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। পরের দিন ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয় এই র্যাপিড কিট ব্যবহারে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন নেই।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা চাই জাতীয় প্রতিষ্ঠানে কিটটি পরীক্ষা করা হোক। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যাব।’ আগামী রবি বা সোমবার বিএসএমএমইউতে এক হাজার কিট পরীক্ষার জন্য হস্তান্তর করা হবে বলেও প্রথম আলোকে তিনি জানান।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) গণস্বাস্থ্যের কাছে কিট চেয়েছে। রোববার সিডিসিকে ৮০০ কিট দেবে গণস্বাস্থ্য।
কিটের ব্যাপারে মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও গণস্বাস্থ্যের যোগাযোগ হয়েছে বলে তিনি জানান।
গত শনিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা শনাক্তকরণ কিট সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছিল। তবে ওই অনুষ্ঠানে সরকারের কোনো প্রতিনিধি হাজির ছিলেন না। পরে অনুমোদনের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে নিয়ম অনুযায়ী কন্ট্র্যাক্ট রিসার্চ ফার্মের (সিআরও) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
এতেই বেঁকে বসেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনও করে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অবশ্য কিটের উৎপাদনপ্রক্রিয়া সঠিক ছিল কি না, তা যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে (বিএমআরসি) দিয়ে এসেছে।