এবার করোনার ভ্যাকসিন বানরের শরীরে
এবার করোনার ভ্যাকসিন বানরের শরীরে - সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। গত সপ্তাহে মানব শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক বিশেষজ্ঞ তার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছেন বানরের শরীরে। বিশেষজ্ঞদের মতে বানরে শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াটি আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছরের মধ্যে আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ ভ্যাকসিন ব্যাপকভাবে তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশব্বিদ্যালয়ের আর এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ভিনসেন্ট মুস্টার ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি একই সাথে রকি মাউন্টেন ল্যাবরেটরির জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একজন গবেষক। ডাক্তার মুস্টার তার ভ্যাকসিনের একটি ডোজ ছয়টি বানরের শরীরে প্রয়োগ করে। রেসাস মেকাউ গোত্রের ওই ছয়টি বানরের শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে ভ্যাকসিনটি দেয়া হয়েছে।
দ্যা নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত রিপোর্ট হতে জানা যায়, ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগে ওই বানরগুলোকে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত করা হয়। সংক্রমণের চার সপ্তাহ পরেও বানর ছয়টি সুস্থ রয়েছে।
যার অর্থ ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও করোনা মোকাবেলায় এর কার্যকারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী মাসের শেষের দিকে বিশেষজ্ঞের ওই দলটি ছয় হাজারের বেশি ভলেন্টিয়ারের উপর পরীক্ষা শুরু করবে।
ডাক্তার ভিনসেন্ট মুস্টার বলেন, এই বানরের প্রজাতি মানুষের কাছাকাছি হওয়ায় আমরা আশা করছি ভালো কিছু হবে।
তিনি আরো জানান, মানব দেহে ভ্যাকসিনটি কাজ করবে তার শতভাগ নিশ্চয়তা না থাকলেও তিনি তার গবেষণাকে পিয়ার রিভিউ জার্নালে জমা দেয়ার পরিকল্পনা করছেন।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই ভ্যাকসিনটিই কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাবে ও আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মিলিয়ন ডোজ বাজারে পাওয়া যাবে বলে দাবি করছে বিশেষজ্ঞরা।
বায়োটেক ও গবেষণা দলের অধীনে সারাবিশ্বে প্রায় ১০০ জন সম্ভাব্য কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী নিয়ে ভ্যাকসিনের কাজ করা হচ্ছে। এর মধ্যে কমপক্ষে পাচটি দল প্রথম পর্যায়ে রয়েছে যারা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হিসেবে পরিচিত।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে অক্সফোর্ডে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনে নিয়ে ইউরোপে প্রথম মানব শরীরে প্রয়োগ করা হয়। ইলিসা গ্রেনাটো নামে ভ্যাকসিন নেয়া ওই স্বেচ্ছাসেবী নিজেও এই গবেষণায় নিযুক্ত রয়েছেন।
সূত্র : মিরর
হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনে চিকিৎসা হলে নজরদারি প্রয়োজন হৃদযন্ত্রের গতিতে
ক্লোরোকুইনেই জব্দ হচ্ছে নোভেল করোনা ভাইরাস। ফরাসি বিশেষজ্ঞ তথা অধ্যাপক ডাইডিয়ার রৌল্ডের এই দাবির পর থেকেই ভাইরাস মোকাবিলায় এই ওষুধের ব্যবহার নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে বিশ্বে। প্রতিদিন উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেভাবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মজুত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন, তাতে এর ইতিবাচক প্রভাবের দিকেই পাল্লা ভারী। কিন্তু, ম্যালেরিয়ার এই ওষুধ নিয়ে ভারতের সঙ্গে খানিক ঝামেলার পরেই একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছিলেন, করোনায় যতটা উপশম আশা করা গিয়েছিল এই ওষুধের প্রভাবে তা তো মিলছেই না, উল্টে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরো বেড়ে যাচ্ছে।
এই অবস্থায় করোনা মোকাবিলায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে রবিবার ফের একটি সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে এল। তাতে দ্বিতীয় আশঙ্কা ফের প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং আজিথ্রোমাইসিন দিয়ে চিকিৎসা চলছে এমন করোনা রোগীর ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা গিয়েছে।
এই সমীক্ষাটি চালানো হয়েছিল নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে ৮৪ জন রোগীর উপর। ‘নেচার মেডিসিন’ পত্রিকায় বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মার্কিন মুলুকের নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন বলেছিল, ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং অ্যান্টিবায়োটিক আজিথ্রোমাইসিনের ব্যবহারে করোনা ভাইরাসকে বাগে আনা সম্ভব। কিন্তু সঙ্গে এটাও বলা হয়েছিল, এই দুইয়ের প্রভাবে হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক গতিতে ছন্দপতন ঘটতে পারে। ফলে হঠাৎ করে মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। চিকিৎসাধীন ৮৪ জনের মধ্যে অধিকাংশেরই এই উপসর্গ দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছে ওই পত্রিকা। তাই সমীক্ষক দলের পরামর্শ, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং আজিথ্রোমাইসিন দিয়ে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চললে সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির।
সূত্র : পিটিআই