করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তুরস্কের অনন্য ভূমিকা
এরদোগান - সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তুরস্ক। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগলু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মহামারি মোকাবেলায় তুরস্ক নিজ দেশে লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন মেনে চলাসহ অনেক দেশে চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহ করে চলেছে।
এ ব্যাপারে গত ১৩ এপ্রিল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেন, ব্যাথা অনুভব করার অর্থ আপনি বেচে আছে। অন্যের বেদনা অনুভব করতে পারলেই আপনি মানুষ। তিনি আরো বলেন, মহামারির এই সময়টি তিনি তার বন্ধু দেশগুলোর পাশে দাড়াতে চান। আগামীতেও তুরস্কের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
দেশটি প্রায় শতাধিক দেশের কাছ থেকে সাহায্যের অনুরোধ পেয়েছে। তুরস্ক সরকার যুক্তরাজ্য, ইতালি ও স্পেনেসহ পাচটি মহাদেশে চিকিৎসা ও সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম প্রেরণ করেছে।
তুরস্কের চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো দেশগুলো হলো, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, কিরগিজস্তান, আলজেরিয়া, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া, লেবানন, ফিলিস্তিন, কলোম্বিয়া, ইসরাইল, ইরান, ইরাক, লিবিয়া। এছাড়াও জার্মান, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, মলদোভা, আজারবাইজান, জর্জিয়া, আলবানিয়া, মন্টিনিগ্রো, বুলগেরিয়া, কোসোভোকো, বসনিয়া, সার্বিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহ করেছে।
মহামারি মোকাবেলায় আফ্রিকার ছয়টি দেশেও তুরস্কের পক্ষ থেকে সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
সহায়তা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে করোনা টেস্টিং কিট, মেডিক্যাল মাস্ক, পিপিই, জীবাণুনাশক।
গত সপ্তাহে, রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরশকো তুরস্কের কাছ থেকে কেনা চিকিৎসা সরঞ্জামের জন্য দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহ্রেতিন কোকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক হান্স কুলগে তুরস্ককে এই মহামারিকালীন সময়ে আন্তর্জাতিক সংহতি ও বহু দেশকে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সূত্র : আনাদুলু
লাতিন আমেরিকার কারাগারগুলোতে করোনার প্রকোপ
লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর কারাগারে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এদিকে এল সালভাদোরে কারাগারে বন্দীদের করোনাভাইরাস মহামারিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার সকল কয়েদিকে কারাগারের আঙিনায় একসাথে বসিয়ে রাখতে দেখা যায়। তবে কয়েদিদের মাস্ক পরা ছিল।
এল সালভাদোরের প্রেসিডেন্ট নয়েব বুকেলে গত শুক্রবার দেশজুড়ে ২০ জনের বেশি লোকের হত্যার ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন।
করোনা মহামারির লকডাউনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে কারাগারে ভয়াবহভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে পরার আশঙ্কায় আছে।
লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির সান্টিয়াগো শহরে পুন্তে আল্টো কারাগারে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি করোনার সংক্রমণ হতে দেখা গেছে। ওই কারাগারে এক হাজার ১০০ জন কয়েদির মধ্যে প্রায় ৩০০ জনেরও বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কারাগারে বন্দীদের মাঝে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সত্যিই খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
পুন্তে আল্টো কারাগারে এক নার্স জিমেনা গ্যানিফো বলেন, কয়েদিরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি থাকে।
লাতিন আমেরিকার কারাগারে প্রায় এক কোটি ৫০ হাজার বন্দী রয়েছে। এছাড়াও দেশগুলোতে নিম্ন বাজেটের ফলে ভাইরাস প্রতিরোধে সবার মাঝে সাবান পানির যোগান দেয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এখন পর্যন্ত জাতীয় তথ্য অনুসারে সমগ্র লাতিন আমেরিকায় এক হাজার ৪০০ জন বন্দী কোভিড-১৯'এ আক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পেরুতে, সেখানে ৬১৩ জন কয়েদি করোনায় আক্রান্ত ও মারা গেছে ১৩ জন।
তবে করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে পুয়ের্তো রিকো দেশটি। দেশটির সংশোধিত দফতরের শুক্রবার তথ্য মতে, সেখানে প্রায় ৯ হাজার বন্দী ও কারাগারের প্রহরীসহ ছয় হাজার কর্মচারীর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে করোনা মহামারিতে কলোম্বিয়ায় কারাগারে ২৩ জন মারা গেছেন। ইতোমধ্যে মহামারির ভয়ে ব্রাজিলের কারাগার থেকে প্রায় এক হাজার ৩০০ বন্দী পালিয়ে গেছেন ও আর্জেন্টিনায় এক হাজারেও বেশি কয়েদি অনশন করেছে।
সূত্র : আল জাজিরা