এত অস্ত্র আরবদের কী কাজে লাগে
এত অস্ত্র আরবদের কী কাজে লাগে - সংগৃহীত
গত পাঁচ বছরে (২০১৫-১৯) পূর্ববতী পাঁচ বছরের (২০১০-১৪) তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অস্ত্র আমদানির পরিমাণ বেড়েছে ৬১ শতাংশ। বিশ্বের মোট অস্ত্র আমদানির ৩৫ শতাংশই আমদানি করছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। এসব দেশ গত পাঁচ বছরে পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের তুলনায় আমদানি বাড়িয়েছে ১৩০ শতাংশ। ইয়েমেনে সৌদি আরবের সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ব্যাপকভিত্তিক উদ্বেগ থাকার পরও সৌদি আরব এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে ৭৩ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্য থেকে ১৩ শতাংশ অস্ত্র।
বিশ্বে গত পাঁচ বছরে (২০১৫-১৯) ভারত ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। অস্ত্র আমদানিতে ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তানের অবস্থান বিশ্বে একাদশ স্থানে। দুটি দেশই পারমাণবিক অস্ত্রে বলীয়ান। দেশ দুটির মধ্যে কয়েকবার যুদ্ধ হয়েছে। তখন অস্ত্র সরবরাহ করেছে পরাশক্তিগুলো। দেশ দু’টিতে তাদের অস্ত্র রফতানি কেবলই বাড়ছে।
গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সামরিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে লিবিয়া ও ইয়েমেনে। দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে ইউএই হচ্ছে অষ্টম বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। এই সময়ে দেশটির মোট অস্ত্র আমদানির দুই-তৃতীয়াংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ২০১৯ সালে যখন জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে লিবিয়ায় বিদেশী সামরিক হস্তক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়, তখন আরব আমিরাতের অস্ত্র আমদানির চুক্তি চলছিল অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, সুইডেন, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে।
এ দিকে ২০১৫-১৯ সময়ে সশস্ত্র সংঘর্ষ চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। অস্ত্র আমদানি করে উভয় দেশই তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছে। এরা আমদানি করছে এমন সব ক্ষেপণাস্ত্র, যা এক দেশ থেকে অপর দেশের ভেতরের যেকোনো স্থানে হামলা চালাতে সক্ষম। বিগত পাঁচ বছরে আর্মেনিয়া প্রায় সব অস্ত্রই আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে। অপর দিকে আজারবাইজানের ৬০ শতাংশ অস্ত্র আমদানি হয়েছে ইসরাইল থেকে। আর রাশিয়া থেকে আসে ৩১ শতাংশ।
২০১৫-১৯ সময়ে তুরস্কের অস্ত্র আমদানি এর আগের পাঁচ বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ কমেছে। যদিও এর সামরিক বাহিনী যুদ্ধ করছে কুর্দি বিদ্রোহীদের সাথে। এ ছাড়া দেশটি লিবিয়া ও সিরিয়ার সাথে সামরিক দ্বন্দ্বে জড়িত ছিল। দেশটির অস্ত্র আমদানি কমে যাওয়ার ব্যাখ্যা হতে পারে- কিছু প্রধান অস্ত্র সরবরাহ পেতে দেরি, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধবিমান আমদানির চুক্তি বাতিল ও নিজস্ব অস্ত্রশিল্পের উন্নয়ন।
২০১০-১৪ ও ২০১৫-১৯ এই উভয় পঞ্চবার্ষিক সময়ের মধ্যে রাশিয়ার অস্ত্র রফতানি কমেছে ১৮ শতাংশ। রাশিয়া এ সময়ে এর দীর্ঘ দিনের প্রধান অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ভারতকে হারিয়েছে। এর ফলেই মূলত রাশিয়ার অস্ত্র রফতানি ব্যাপকভাবে কমে যায়- এমনটিই মনে করছেন, এসআইপিআরআইয়ের গবেষক আলেক্সান্ডার কুরিমভ। তবে গত পাঁচ বছরে রাশিয়ার অস্ত্র রফতানি বেড়েছে মিসর ও ইরাকে।